—ফাইল চিত্র।
রাতের দিল্লিতে বেপরোয়া অটোর আরোহী হয়ে বড়সড় দুর্ঘটনায় পড়লেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। বাঁ পায়ের গোড়ালির হাড় ভেঙেছে তাঁর। গত কাল গভীর রাতে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স (এইমস)-এর ট্রমা সেন্টারে প্রথমে অস্ত্রোপচার হয় সৃজিতের। আজ ফের এক দফা পরীক্ষা করার পরে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আপাতত সংক্রমণের ভয় না থাকলেও, আগামী বেশ কয়েক সপ্তাহ বিছানাতেই কাটাতে হবে এই চিত্রপরিচালককে।
গত রবিবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিতে দিল্লি এসেছিলেন সৃজিত। তার পরে দিল্লিতেই থেকে গিয়েছিলেন জেএনইউয়ের ওই প্রাক্তন ছাত্র। সৃজিতের সঙ্গে গত কাল অটোতে ছিলেন তাঁর বন্ধু দেবপ্রিয়া বসু ও ইন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে ইন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাত সাড়ে ন’টা-দশটা নাগাদ আমরা খেতে বেরিয়েছিলেন। ফাঁকা রাস্তা পেয়ে বেপরোয়া অটো ছোটাচ্ছিলেন চালক। নেলসন ম্যান্ডেলা মার্গে বাঁ দিকে মোড় ঘুরতে গিয়ে অটোটি উল্টে যায়। বাঁ দিকেই বসেছিলেন সৃজিত। ফলে তাঁরই সব চেয়ে বেশি চোট লাগে। আমার বা দেবপ্রিয়ার বিশেষ চোট লাগেনি।’’
সৃজিতের দুর্ঘটনার খবর শুনে দিল্লি এসেছেন যীশু সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘সৃজিতকে কলকাতায় ফিরিয়ে নিয়ে যাব বলেই এসেছিলাম। কিন্তু এই অবস্থায় সেটা ঠিক হবে কি না বুঝতে পারছি না। আপাতত ওকে এইমস-এই থাকতে হবে কিছু দিন।’’ সৃজিতের দুর্ঘটনায় কলকাতার চলচ্চিত্র মহলও উদ্বিগ্ন। অনেকেই যীশুকে ফোন করে খবর নিচ্ছেন। সৃজিতের খবর শুনে কেউ কেউ বলছেন— বড় ফাঁড়া থেকে রক্ষা মিলেছে।
দুর্ঘটনার পরেই পুলিশের সাহায্য নিয়ে সৃজিতকে এইমস-এর ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত বারোটা থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা অপারেশন চলে সৃজিতের। এইএমস সূত্রে জানা গিয়েছে, গোড়ালিতে ধাতুর পাত বসানো হয়েছে সৃজিতের। তবে তাঁর মাথা বা শরীরের অন্য কোথাও আঘাত লাগেনি বলে জানিয়েছে চিকিৎসকেরা। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ দপুরে চিকিৎসকেরা ফের সৃজিতকে পরীক্ষা করেছেন। দুপুরে দিল্লি উড়ে এসেছেন সৃজিতের মা সুমিতাদেবী। তিনিও পেশায় চিকিৎসক। সৃজিতের বন্ধু ইন্দ্রনাথ বলছেন, ‘‘ভালই হল। এখানকার চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয়টা এ বার ভাল হবে।’’
সৃজিতের দুর্ঘটনার খবরে বেশ খানিকটা ধাক্কা খেয়েছে টালিগঞ্জ। কাকাবাবু ছবির শ্যুটিং পিছিয়ে গিয়েছে। অগস্ট মাসে মুক্তি পাওয়ার কথা সৃজিতের পরবর্তী ছবি রাজকাহিনি-র। সূত্রের খবর, তার পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। সৃজিতের দুর্ঘটনায় সেই কাজও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। একটি বাংলা টিভি চ্যানেলে নতুন একটি অনুষ্ঠান শুরু করতে চলেছিলেন এই পরিচালক। সেটিও আপাতত স্থগিত থাকছে।