Koel Mallick

Koel-Hiran: কোয়েল রাজনীতিতে এলে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাইব, জন্মদিনে জানালেন হিরণ

কোয়েলের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব দেখে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, এত ভাল মেয়েকে একটি দিনের জন্যও কি ভালবাসিনি? প্রেমে পড়তে ইচ্ছে হয়নি! আজ সবাইকে বলি, পেশাজীবনে আমি ভীষণ মেপে চলি। বাস্তবের সঙ্গে অভিনয়কে গোলাইনি। ক্যামেরার সামনে যেটুকু অভিনয় করতে হয়, ব্যস সেটুকুই। এর বাইরে কোয়েল কেন, কারও প্রতিই আমার কোনও দুর্বলতা নেই। আর কোয়েলের সঙ্গে শুধুই মানায় নিসপাল সিংহ রানেকে।

Advertisement

হিরণ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২২ ২০:২৩
Share:

কোয়েল-হিরণ

কোয়েল আমার অভিনয় জীবনের একদম গোড়া থেকে রয়েছে। আমার প্রথম ছবির নায়িকা। সাল ২০০৭। হরনাথ চক্রবর্তীর ‘নবাব নন্দিনী’ দিয়ে টলিউডে পা রেখেছিলাম। অভিনয়ের অ-আও জানি না। তার আগে বড় সংস্থায় চাকরি করে হঠাৎ পেশা বদলেছি। কোয়েল হাতে ধরে সব শিখিয়েছিল। ফ্রেম টু ফ্রেম, ফ্রেমের অ্যাঙ্গেল, ক্যামেরা বুঝে অভিনয়- সব। আমার সেই প্রিয় বন্ধুর জন্মদিন!

Advertisement

একটা বয়স বা সময়ের পরে নায়িকার জন্মদিনে এই প্রশ্ন অবধারিত, কত বয়স হল? কোয়েলের জন্মদিনের কথা শোনার পরে এক বারও কিন্তু এ কথা আমার মাথায় আসেনি। কোয়েল ঠিক আগের মতোই ঝলমলে। দারুণ সুন্দরী। ওর মতো করে। আমরা এক সঙ্গে চারটে ছবি করেছি। ‘নবাব নন্দিনী’ ছাড়াও ‘জ্যাকপট’, ‘চিরসাথী’, ‘মন যে করে উড়ু উড়ু’। তার পরও আমার সেই প্রথম দিনের কথাই মনে পড়ে। তখনও মেকআপ ভ্যানের এত রমরমা ছিল না। সাধারণত, পরিচালকের সঙ্গে আমরা খাওয়াদাওয়া সারতাম। বরাবর সেদ্ধ খাবার পছন্দ ছিল আমার। কোয়েল নায়িকা হয়েও দেখতাম দিব্যি সব কিছু খাচ্ছে! কখনও কখনও বড় রেস্তরাঁ থেকে খাবার আনাত। আর আমায় বলত, ‘‘কী যে সব স্ট্যু, সেদ্ধ খাবার খাও!’’ আরও একটা জিনিস খেতে খুব ভালবাসত। আলুর চিপস! বাড়িতে বানানো। নুন, মশলা ছড়ানো। শ্যুটের ফাঁকে নায়িকা অনবরত চিবোচ্ছে পট্যাটো চিপস। আমি দেখে থ! শেষে কোয়েলের পাল্লায় পড়ে আমারও যেন নেশা হয়ে গিয়েছিল। ওর সঙ্গে ভাগ করে খেতাম চিপস।

এক বার এ রকমই প্রচণ্ড গরমে শ্যুটিং। রোদের নীচে দাঁড়িয়ে শট দিচ্ছি। কোয়েল এসে বলল, সানস্ক্রিন মেখে নাও। নইলে ত্বক নষ্ট হয়ে যাবে। আমার কাছে তখন ওসব থাকত না। বাকিদের থেকে চেয়েছিলাম। কিন্তু কেউ দেননি। সে কথা জানাতেই, সঙ্গে সঙ্গে কোয়েল নিজের সানস্ক্রিন লোশন আমায় দিয়ে বলেছিল, ‘‘এ বার থেকে এটা নিয়মিত ব্যবহার কোরো।’’ একই ভাবে, আমরা একসঙ্গে অনেক শো করেছি। কিন্তু প্রথম শো করতে যাওয়ার আগে সেই কোয়েলই আমার ত্রাতা। ওর থেকে খুঁটিয়ে জেনে নিয়েছিলাম, কী করতে হয়, আর কী করতে নেই। পাখি পড়ানোর মতো করে সব শিখিয়েছিল আমার সহ-অভিনেত্রী। এ ভাবে চট করে কেউ শেখাতে চায় না। কোয়েল একদম অন্য ধরনের। টলিউডের চেনা ছকের বাইরে।

Advertisement

পর্দায় কোয়েল যত চঞ্চল, পর্দার বাইরে ঠিক উল্টো। সবেতেই ভাল। সব ভাল। নাচে ভাল। অভিনয়ে ভাল। পড়াশোনায় ভাল। আচার-ব্যবহারে ভাল। যাকে বলে লক্ষ্মীমন্ত। এক বার ভবানীপুরের মল্লিক বাড়িতে আমায় নিয়ে গিয়েছিল। আলাপ হয়েছিল ওঁর ঠাকুরমার সঙ্গে। পরিবারের সবার সঙ্গে কথা বলে বুঝেছিলাম, এত ভাল, সংস্কৃতিমনস্ক পরিবারের মেয়ে বলেই কোয়েল সব দিকে সেরা। ও যদি অভিনয় না করে নাচ বা পড়াশোনা নিয়ে থাকত তাতেও সেরা-ই হত। এক এক সময়ে মনে হয় রাজনীতিতে এলেও কোয়েল বোধহয় ব্যর্থ হত না। আর কখনও রাজনীতিতে এলে আমি কিন্তু কোয়েলকে মুখ্যমন্ত্রীর আসনে দেখতে চাইব। ঠিক যে ভাবে এক সময়ে জয়ললিতা দক্ষিণের রাজনীতি সামলাতেন। কোয়েল কোন দল বেছে নেবে? সেটা ওর ব্যাপার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী ওকেই হতে হবে!

কোয়েলের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব দেখে অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, এত ভাল মেয়েকে একটি দিনের জন্যও কি ভালবাসিনি? প্রেমে পড়তে ইচ্ছে হয়নি! আজ সবাইকে বলি, পেশাজীবনে আমি ভীষণ মেপে চলি। বাস্তবের সঙ্গে অভিনয়কে গোলাইনি। ক্যামেরার সামনে যেটুকু অভিনয় করতে হয়, ব্যস সেটুকুই। এর বাইরে কোয়েল কেন, কারও প্রতিই আমার কোনও দুর্বলতা নেই। আর কোয়েলের সঙ্গে শুধুই মানায় নিসপাল সিংহ রানেকে। যদি নিসপাল কোয়েলের জীবনে না আসতেন? তা হলে বলব, ওঁর ছায়াই হয়তো আগলাত মল্লিক বাড়ির আদুরে মেয়েকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন