বত্রিশ বছরের ফিল্ম কেরিয়ারে ষাটেরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন স্টিফেন ল্যাং। তবে অধিকাংশ ছবিতেই তিনি ভিলেন। ‘পাবলিক এনিমিজ’, ‘ডোন্ট ব্রিদ’ আর ‘অবতার’ তো সবার জানা। হলিউডি এই অভিনেতাকে আর পাঁচজনের সঙ্গে মেলানোও যাবে না। ৬৪ বছর বয়সেও জিমে নিয়মিত ১৪২ কেজি ওজন তোলেন। ক্রুজার বাইকে চড়ে যখন তখন বেরিয়ে পড়েন রোড ট্রিপে।
চরিত্রদের মতো তিনি নিজেও কি অমন ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’? ‘‘কাউবয় বুট পরে ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ সাজার চেষ্টা করি বটে। কিন্তু বউ ধমকায়, একদম কলার তুলবে না,’’ হাসতে-হাসতে আনন্দ প্লাস-কে ফোনে বলছিলেন স্টিফেন। জানালেন, এমনিতে তিনি বেশ ঠান্ডা মাথার। ‘‘শুধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাগলামি দেখলে মাথা গরম হয়ে যায়।’’
বাবা ইউজিন ল্যাংয়ের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি এলসিডি, এটিএম, বারকোড স্ক্যানারের মতো হাজার খানেক পেটেন্টের মালিক তিনি। কিন্তু ছেলে-মেয়েদের জন্য টাকা রেখে যাওয়ায় বিশ্বাসী ছিলেন না ইউজিন। প্রায় সবই দান করে যান। ‘‘বাবা চেয়েছিলেন আমরা যাতে বখে না যাই,’’ বলছিলেন স্টিফেন। বখে যাননি বটে, তবে ভেসে গিয়েছিলেন সিনেমার টানে। পল নিউম্যান, মার্লন ব্র্যান্ডো, আর্থার মিলারকে দেখে নিউ ইয়র্ক থেকে তাঁর হলিউডে চলে আসা।
প্রথমে টিভি। তার পর ফিল্ম। ‘অবতার’-এর কর্নেল মাইল্স তাঁকে নিঃসন্দেহে পৃথিবী জোড়া পরিচিতি দিয়েছে। কখনও মনে হয়নি, এর পর কোনও চরিত্র আর হয়তো ভাল লাগবে না? ‘‘না, না। জিম (জেমস ক্যামেরন) তো আমাকে পরের চারটে সিক্যুয়েলেও রেখেছে। প্রত্যেকটায় আলাদা আলাদা ফ্লেভার। সেটাই আমি উপভোগ করি,’’ বলেন তিনি। বরং হৃদয়ের কাছে অন্য দু’টো চরিত্র। ‘পাবলিক এনিমিজ’-এর চার্লস উইনস্টেড আর ‘ডোন্ট ব্রিদ’-এর নরম্যান নর্ডস্ট্রম। ‘‘আমার কাছে নরম্যানের কোনও রেফারেন্স পয়েন্ট ছিল না। কোনও অন্ধ লোককে দেখিনি পরিস্থিতির সঙ্গে এমন ভাবে মানিয়ে নিতে। একটা লেন্স পরতাম, যাতে অল্প দেখতে পাই। এই চরিত্রটা করতে নিজেকে নিংড়ে দিয়েছিলাম। ‘ডোন্ট ব্রিদ’য়ের সঙ্গে অন্য কোনও চরিত্রের তুলনা হতে পারে না,’’ বলেন স্টিফেন। কিন্তু এত বয়সেও এমন ফিট থাকার রহস্যটা কী? ‘‘যোগব্যয়াম,’’ উত্তর দিতে এতটুকু সময় নিলেন না।
এখন তো অনেক বলিউড তারকার নিত্য যাতায়াত হলিউডে। কারও সঙ্গে আলাপ আছে? ‘‘অনেকের নাম জানি। তবে আলাপ নেই। ওম পুরীর সঙ্গে কাজ করেছিলাম। সেই সূত্রে মাঝে মাঝে আড্ডা হত,’’ বলেন তিনি। তবে ভারতীয় ছবির বক্স অফিস সম্বন্ধে বেশ ভালই জানেন। শুনেছেন ‘বাহুবলী’র কথা। ‘‘শুধু হিন্দি নয়, রিজিওনাল ছবিও তো দারুণ ব্যবসা করে। ভারতে কাজ করতে পারলে কিন্তু বেশ হত,’’ বলেন স্টিফেন ল্যাং।