গপ্পো কি কম পড়িয়াছে?

এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। একটা বিষয় নিয়ে একাধিক পরিচালক টানাটানি করছেন। ব্যোমকেশ বক্সী তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।

Advertisement

দীপান্বিতা মুখোপাধ্যায় ঘোষ

শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

অঞ্জন, অনিকেত, মানস

এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। একটা বিষয় নিয়ে একাধিক পরিচালক টানাটানি করছেন। ব্যোমকেশ বক্সী তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ। এই টানাটানি এখন শুরু হয়েছে ‘বিনয়-বাদল-দীনেশ’ নিয়ে। অঞ্জন দত্ত সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন তিনি বাংলার এই তিন বিপ্লবীকে নিয়ে ছবি করছেন। একই বিষয় নিয়ে দেবের প্রযোজনায় এই ছবি পরিচালনা করার কথা কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের। যার চিত্রনাট্য লিখছেন অনিকেত চট্টোপাধ্যায়। ‘সহজ পাঠের গপ্পো’র পরিচালক মানস মুকুল পাল একই বিষয় নিয়ে ছবি করছেন। বিষয়বস্তু কি এতই অপ্রতুল যে, একই কনটেন্ট নিয়ে তিন জন কাজ করতে চান?

Advertisement

অঞ্জন দত্ত

প্র: একটা বিষয় নিয়ে তিন জন পরিচালকের টানাটানি করা তো চিন্তাভাবনার দৈন্যকেই তুলে ধরছে...

Advertisement

উ: আমি বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স নিয়ে একটা বই পড়ে বিনয়-বাদল-দীনেশকে নিয়ে ছবি করার কথা ভাবি। সেটা ২০১৪ সালের ঘটনা। তার পরে স্ক্রিপ্ট তৈরি, গবেষণা চলতে থাকে। মুম্বইয়ে স্ক্রিপ্ট রেজিস্টার্ডও করে ফেলি। কিন্তু সেই সময়ে এই ছবিটা করার মতো কোনও প্রযোজক ছিল না। তার পরে যখন এসভিএফ-এর সঙ্গে ছবি করতে শুরু করলাম, তখন ওদের এই বিষয়টা বলি। ওরা আগে অনেক বড় প্রজেক্ট করেছে। যদি প্রযোজক পেতাম তা হলে ২০১৫ সালেই আমার ছবি তৈরি হয়ে যেত। আমি জানতাম না, মানস মুকুলও এই বিষয়টাই ভাবছে। দেবের ছবিটার কথা শুনেছিলাম। তার পরে তো দেখলাম কেউ কোনও উচ্চবাচ্য করছে না। তাই আমি আবার উদ্যোগী হলাম। আর একটা জিনিস, আমি ব্যোমকেশ ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি করার পরেই কিন্তু বাকিরাও ব্যোমকেশকে নিয়ে আগ্রহী হয়েছিল।

প্র: আপনি যে ধরনের কাজ করেছেন এই ছবি তার চেয়ে আলাদা। অনেকে ব্যঙ্গ করে বলেছেন, এখানে তো দার্জিলিংও নেই, গিটারও নেই!

উ: ব্যোমকেশও দার্জিলিংয়ে যায়নি। গিটার বাজায়নি। তাও একটা সফল ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি হয়েছে। পরিচালক হিসেবে আমি নিজেকে বার বার ভেঙেছি। আমি কাউকে লেবেল করতে চাই না। খেটেখুটে ছবিটা বানাচ্ছি। গিটার বাজালে দেশকে ভালবাসা যায় না, এমন তো নয়!

অনিকেত চট্টোপাধ্যায়

প্র: ছবির বিষয় কি কম পড়েছে যে, একটা বিষয় নিয়ে এত জন উঠে পড়ে লেগেছেন?

উ: আমাদের এথিক্সটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেউ একটা ছবি করছে জেনেও সেটা আবার করার পরিকল্পনা করেন অনেকে। ভাবেন হয়তো, এই বিষয়টা নিশ্চয়ই ব্যবসা করতে পারবে। বিনয়-বাদল-দীনেশ আর বাঘা যতীনকে নিয়ে ছবি করার পরিকল্পনা আমার অনেক দিনের। সকলেই জানেন, আমরা কবে বিনয়-বাদল-দীনেশ করার কথা ঘোষণা করেছি। আগে কোনও দিন শুনিনি, অঞ্জনদা বিনয়-বাদল-দীনেশকে নিয়ে কাজ করতে চান। মানস মুকুলের সঙ্গেও অন্য কাজের বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। সে-ও তখন কিছু জানায়নি। এত কিছু দেখে বিরক্তিই লাগছে।

প্র: এত দিন সময় লাগল কেন তৈরি করতে?

উ: এটা বিরাট একটা বিষয়। অনেক গবেষণা প্রয়োজন। সেটা করতেই অন্তত এক বছর লেগে যাবে। এখন মনে হচ্ছে, সব কিছু ছে়ড়ে লোকজনকে ছবির বিষয়বস্তুর জোগান দিই। ওটা সত্যিই কম পড়েছে।

মানস মুকুল পাল

প্র: একই বিষয়ে তিনটে ছবি কি প্রমাণ করছে, হাতে গল্প কম?

উ: সেটাই মনে হচ্ছে। স্বাধীনতা আন্দোলন নিয়ে অনেকেই ছবি করতে চাইতে পারেন, কিন্তু শুধু বিনয়-বাদল-দীনেশই কেন? আরও তো অনেক বিপ্লবী রয়েছেন। কে আগে ভেবেছেন বা লিখেছেন, সেটা নিয়ে তর্ক করা বোকামি। আমি এই ছবিটা করব বলে অনেক ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছি। দেবের সঙ্গেও আমার এই ছবিটা এবং বাঘা যতীন নিয়ে কথা হয়েছিল।

প্র: দর্শক তিন জনের ছবি দেখবেন?

উ: দর্শককে তো অনেক যন্ত্রণাই সহ্য করতে হয়। তবে কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আমি তাড়াহুড়ো করতে চাই না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন