রাজবাড়িতে শুটিং, কিন্তু প্রেক্ষাগৃহই নেই ঝাড়গ্রামে

একটা সময় উত্তম কুমারের বাঘবন্দি খেলা, সন্ন্যাসী রাজা, হালফিলের ব্রেক ফেল, অরুন্ধতী, সন্দীপ রায়ের টিনটোরেটোর যীশুর শুটিং হয়েছে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতে।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৯ ০৩:৩৩
Share:

রাজবাড়ির অন্দরে ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’ ছবির একটি দৃশ্য।

অরণ্য শহরের রাজবাড়িতে সোনাদার রহস্য ভেদ দেখার সুযোগ না মেলায় হতাশ ঝাড়গ্রামবাসী।

Advertisement

দু’বছর হল আলাদা জেলা হয়েছে ঝাড়গ্রাম। কিন্তু জেলা শহরে এখনও কোনও সিনেমা হল বা সিনেপ্লেক্স নেই। তাই ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি, কলাবনির জঙ্গলে গোয়েন্দা সুবর্ণ সেনের কাণ্ডকারখানা দেখতে শহরবাসীকে ছুটতে হচ্ছে ৪৬ কিলোমিটার দূরে খড়্গপুরে।

একটা সময় উত্তম কুমারের বাঘবন্দি খেলা, সন্ন্যাসী রাজা, হালফিলের ব্রেক ফেল, অরুন্ধতী, সন্দীপ রায়ের টিনটোরেটোর যীশুর শুটিং হয়েছে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতে। বছর পাঁচেক আগে সন্দীপ রায়ের বাদশাহী আংটির ক্লাইম্যাক্সের শুটিং হয়েছিল শহরের অদূরে কলাবনির জঙ্গলে। গত শুক্রবার মুক্তি পাওয়া ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত রহস্য-রোমাঞ্চ ছবি ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’-এর ৬০ শতাংশ দৃশ্যের শুটিংও হয়েছে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি, কলাবনির জঙ্গল ও চিল্কিগড়ের জঙ্গলে। এ বছরের গোড়ায় টানা সাত দিন ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ির অতিথিশালায় ছিল শুটিং ইউনিট। গোয়েন্দা সুবর্ণ ওরফে সোনাদার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আবীর চট্টোপাধ্যায়। সিনেমাটি দেখতে ঝাড়গ্রামবাসীর উৎসাহের অন্ত নেই। কিন্তু এই গরমে উজিয়ে খড়্গপুরে গিয়ে সিনেমা দেখার কথা প্রায় কেউই ভাবছেন না।

Advertisement

এক সময় ঝাড়গ্রাম শহরে চারটি সিনেমা হল ছিল। একে একে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সেগুলির এখন পোড়ো বাড়ির দশা। নতুন করে কোনও সিঙ্গল স্ক্রিন হল বা সিনেপ্লেক্স কিছুই তৈরি হয়নি। ইংরেজি অনার্সে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রহিত সিংহ, তরুণ প্রজন্মের শিল্পী চিত্রলেখা, তরুণ বুটিক ব্যবসায়ী ঋতাশিস মিশ্রেরা জানালেন, ভাল ছবি দেখার জন্য তাঁরা খড়্গপুরে যান। তবে সেটা মূলত শীতকালে। গরমে ট্রেনে-বাসে যাতায়াতের ঝক্কি নিয়ে সিনেমা দেখতে যাওয়ার উৎসাহটাই থাকে না। ঝাড়গ্রামের সেবায়তন বিএড কলেজের শিক্ষিকা তুলি মিত্রের কথায়, ‘‘এই ছবির বেশিরভাগ শুটিং‌টাই ঝাড়গ্রামে হয়েছে। তাই ছবিটা দেখার খুব ইচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানে একটাও হল নেই। ভাবতেও খারাপ লাগে।’’

বয়স্করা তো খড়্গপুরে যেতেও পারেন না। শহরের প্রবীণা মণিকা মজুমদার বলেন, ‘‘হলে ছবি দেখার মজাই আলাদা। কিন্তু এই বয়সে ধকল করে খড়্গপুরে সিনেমা দেখতে যাওয়া সম্ভব নয়। আমাদের শহরে একটা আধুনিক সিনেমা হল দেখে যেতে পারব কি না জানি না।’’ শহরের খ্যাতনামা শিল্পী সঞ্জীব মিত্রেরও বক্তব্য, ‘‘জেলা শহরে একটা অন্তত সিনেমা হল থাকা উচিত। হল না থাকায় কত ভাল ছবি ইচ্ছে খাকলেও দেখার সুযোগ হয় না।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কম আসনের সিনেপ্লেক্স চালু করা নিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা আগ্রহ দেখাচ্ছে। কত দিনে তা বাস্তবায়িত হয়, অপেক্ষায় অরণ্য শহর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন