Entertainment News

মুভি রিভিউ: এক আটপৌরে মেয়ের উত্তরণের উলেই বোনা ‘সোয়েটার’

টুকুর চরিত্রে ইশা সাহাকে বেশ ভাল লাগে। ইশার চোখের ব্যবহার মুগ্ধ করে কিছু কিছু দৃশ্যে। টুকুর কন্যাদায়গ্রস্ত বাবার ভূমিকায় খরাজ মুখোপাধ্যায় যথারীতি ভাল। টুকুর স্বাধীনচেতা বোন শ্রীয়ের চরিত্রে অনুরাধা মুখোপাধ্যায়কেও বেশ লাগে। হবু শাশুড়ির চরিত্রে জুন মালিয়া এবং পিসি শ্রীলেখা মিত্র প্রশংসার দাবি রাখেন।

Advertisement

সায়ন্তনী সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৯ ২০:০৫
Share:

‘সোয়েটার’ ছবির দৃশ্য।

নিতান্তই সাধারণ মেয়ে একটা, না আছে রূপ না আছে কোনও গুণ। ‘তোকে দিয়ে কিস্যু হবে না’ শুনে শুনেই কেটে গিয়েছে দিন। এ হেন মেয়ের বাবা-মায়ের একটাই কাজ থাকে কোনওরকমে মেয়েকে পাত্রস্থ করা। তো এই যে মেয়েটার কথা বলছিলাম, সেই টুকুর বাবা-মাও সারাদিন মেয়ের বিয়ের কথা ভেবে ভেবে হয়রান। টুকুর একের পর এক সম্বন্ধ আসে। কারও মেয়ে পছন্দ হয় না। হবে কী করে? এমন সাধারণ মেয়ের কি আর এত সহজে বিয়ে হয়?

Advertisement

শেষে কলকাতার এক বনেদি পরিবারের চার্টাড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ছেলের সম্বন্ধ আসে টুকুর জন্য। এত সাধারণ মেয়ের জন্য এত ভাল ছেলে! টুকুর জাঁদরেল শাশুড়ি একটা অদ্ভুত শর্ত দেন বিয়ের জন্য। টুকুকে একটা সোয়েটার বুনে দিতে হবে। এই সোয়েটারটা যদি টুকুর শাশুড়ির বোনা সোয়েটারের মত নিখুঁত হয় তবেই এই বিয়ে হবে, নচেৎ নয়। এই সোয়েটার বোনাকে কেন্দ্র করেই এগোয় গল্প।

আস্তে আস্তে আত্মবিশ্বাসহীন একটা মেয়ে উলবোনার সঙ্গে সঙ্গে নিজের বিশ্বাস বুনতে শিখে যায়। নিজেকে সে বিশ্বাস করতে শেখে, পারিপার্শ্বিকের সঙ্গে লড়তে শেখে। গল্পের আনাচে কানাচে প্রেম থাকলেও, সোয়েটার প্রেমের গল্প নয়, একটা মেয়ের উত্তরণের গল্প। তবে যে গল্পটা পরিচালক বলার চেষ্টা করেছেন তার মধ্যে যতটা সম্ভাবনা ছিল সব ক্ষেত্রে পরিচালক সেই সম্ভবনা বা সুযোগগুলির সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে পারেননি। টুকুর একাকীত্ব, টুকুর যন্ত্রণা আরও একটু দেখানোর দরকার ছিল। টুকুর ছোটবোন, দিদির একদম বিপরীত, অনেক স্মার্ট এবং তুখোড়। এই মেয়েটি যে সব দিক দিয়ে টুকুর থেকে বাবা মায়ের অনেক প্রিয়, সেটা টুকু ন্যারেট করলেও দর্শকদের বাবা মায়ের ব্যবহারের বৈষম্যটা বুঝতে দিতে হত। এই সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম জায়গাগুলি ছেড়ে গিয়েছেন পরিচালক। প্রথমার্ধে ছবি ফ্ল্যাট লেগেছে সেই জন্য। কিছু ছোট ছোট জায়গা আবার খুব মনকাড়া, সেই জায়গাগুলি অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।

Advertisement

টুকুর চরিত্রে ইশা সাহাকে বেশ ভাল লাগে। ইশার চোখের ব্যবহার মুগ্ধ করে কিছু কিছু দৃশ্যে। টুকুর কন্যাদায়গ্রস্ত বাবার ভূমিকায় খরাজ মুখোপাধ্যায় যথারীতি ভাল। টুকুর স্বাধীনচেতা বোন শ্রীয়ের চরিত্রে অনুরাধা মুখোপাধ্যায়কেও বেশ লাগে। হবু শাশুড়ির চরিত্রে জুন মালিয়া এবং পিসি শ্রীলেখা মিত্র প্রশংসার দাবি রাখেন।

আরও পড়ুন, বিশেষ মানুষ, ভালবাসি… রণবীরকে প্রকাশ্যে বললেন আলিয়া

সোয়েটার এর সুরস্রষ্টা রণজয় ভট্টাচার্যের গানগুলি বেশ ভাল। আলাদা করে অবশ্যই বলতে হবে, ‘প্রেমে পড়া বারণ’। পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিকের এটাই প্রথম বাংলা ছবি। বলিউডে নারীকেন্দ্রিক সিনেমা এখন বেশ কিছু তৈরি হলেও বাংলা সিনেমা এখনও এ বিষয়ে হয়ত তত সাবলীল । সেই হিসাবে ‘সোয়েটার’ নিশ্চিত ব্যতিক্রম। যদিও শেষ দৃশ্যে প্রেমিককে প্রত্যাখ্যান করে ইশার বেরিয়ে এসে রাস্তায় হেঁটে আসার ধরণ বড্ড বেশি কঙ্গনা রানাউতের ‘কুইন’কে মনে পড়ায়। এই জায়গায় পরিচালক আর একটু সচেতন হলে পারতেন।

(মুভি ট্রেলার থেকে টাটকা মুভি রিভিউ - রুপোলি পর্দার সব খবর জানতে পড়ুন আমাদের বিনোদন বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন