রানি। ছবি: এএফপি
মুম্বইয়ে প্রেস কনফারেন্সে কলকাতার সাংবাদিকদের কাছে এই অনুরোধ রাখলেন রানি মুখোপাধ্যায়। নতুন বছরে আসছেন ‘হিচকী’ নিয়ে
ছোট বেলায় রানি মুখোপাধ্যায়ের কথা বলায় সমস্যা ছিল। তিনি তোতলাতেন। বলিউডের সফল অভিনেত্রী তা স্বীকার না করলে কি দর্শক জানতে পারতেন? না। কারণ জীবন ও কেরিয়ারের প্রতি পদে হিচকী (পড়ুন প্রতিবন্ধকতা) পেরিয়ে এসেছেন রানি। তাঁর ‘মর্দানি’ মেয়েদের সাহসী হওয়ার নতুন পাঠ শিখিয়েছিল। এ বার হার-না-মানা নয়না মাথুরের গল্প নিয়ে আরও একবার ঝড় তুলতে আসছেন আদিরা চোপড়ার মা। মুম্বইয়ে হয়ে গেল রানির নতুন ছবি ‘হিচকী’র ট্রেলার লঞ্চ।
নায়িকা পরেছিলেন নি-লেন্থ ফ্লোরাল প্রিন্টেড ড্রেস। রেড হট লিপস, অনামিকায় ঝলকাচ্ছে বিরাট হিরের আংটি। খোলা চুলে ব্রাউন ও গোল্ডেনের হাল্কা কার্ল। হাতে ছিল ভারী মজার দুটো জিনিস— একটি বই যার মলাটে লেখা ‘এ টু জেড টাইপস অব হিচকী’। সঙ্গে ছোট স্কুলব্যাগ যার উপরে লেখা ‘পিঠ পিছে বোলনে ওয়ালো কী হিচকী’।
আরও পড়ুন: মুক্তি পেল ‘হিচকি’র ট্রেলার, নতুন রানিকে দেখুন
ছবিতে রানিকে দেখা যাবে স্কুলশিক্ষিকার ভূমিকায় যার ট্যুরেট সিনড্রোম আছে। সেটা কী? ট্রেলারে নয়না বলছে, মস্তিষ্কের ভিতরে তারগুলো না জোড়া থাকলে তাকে বলা হয় ট্যুরেট সিনড্রোম। রানি স্পষ্ট করলেন ব্যাপারটা, ‘‘আগে জনি ভাইকে (লিভার) অনেক সময় দেখা যেত, বারবার চোখ মারছেন। আমরা ভাবতাম, দর্শককে হাসানোর জন্য উনি ওটা করছেন। ওটাই ট্যুরেট সিনড্রোম। এটা একটা জটিল নিউরো-সাইকায়াট্রিক ডিজঅর্ডার। এটা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ যা নিয়ে বিদেশে সচেতনতা থাকলেও ভারতে সে ভাবে নেই।’’ ছবিটি বাস্তব থেকে তুলে ধরা এক শিক্ষিকার কাহিনি। যাঁর সঙ্গে রানি পরে আলাপ করিয়ে দেবেন দর্শকদের।
তিন বছর সময়টা কম নয়। এসেছে আদিরা। ক্যামেরা থেকে দূরে থাকতে কষ্ট হয়নি? খুব চেনা হাই-ভোল্টেজ হাসি তাঁর মুখে। বললেন, ‘‘এই তো আপনাদের সামনে এলাম। আগের চেয়ে বয়স কম মনে হচ্ছে না? আসলে মাদারহুডের অভিজ্ঞতা বড় সুন্দর। নতুন মায়েদের দেখলেই আমার ভাল লাগে। কারণ আমি নিজে এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। আদিত্য এই প্রফেশনে থাকায় ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে বরাবরই যুক্ত ছিলাম।’’ নায়িকা রাজি পরদায় কমবয়সি নায়কের সঙ্গে রোম্যান্স করতেও। বললেন, ‘‘আমরা অভিনেতা। যা করতে বলা হবে, তাই করব। আদিত্যরও এতে সমস্যা নেই। অভিনেত্রীকে বিয়ে করেছে বলে কথা! ও তো চোখে কালো কাপড় বেঁধে বিয়ে করেনি!’’ রানির কথায় হেসে উঠল প্রেক্ষাগৃহ।
তৈমুর-আব্রামের ছবি সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে আছে। কিন্তু আদিরার ছবি তো নেই! বললেন, ‘‘এটা আদিত্য ও আমার যৌথ সিদ্ধান্ত। আদিরা যেন বাড়তি সুবিধা না পায়। তাই আমরা ওকে মিডিয়া থেকে দূরে রেখেছি। ও যেন আর পাঁচ জনের মতোই বড় হয়।’’ রানি এই ছবির জন্য দিনে পাঁচ ঘণ্টার বেশি শ্যুট করেননি। বললেন, আদিরাকে সেটে আনার পক্ষপাতী ছিলেন না। টিম এ ব্যাপারে খুব সাহায্য করেছে।
হিচকী শুধু শারীরিক সমস্যা নয়, এটি মানসিক ব্যাধিও। রানি বললেন, বিয়ের পর বা মা হওয়ার পর বলিউড অভিনেত্রীদের কেরিয়ারের গ্রাফ নিম্নমুখী হয়, এই ধারণা এক ধরনের হিচকী। ভারতে মেয়েরা কেন ছোট পোশাক পরে ঘোরে, এটাও একটি হিচকী।
সম্মেলনের শেষে কলকাতার সাংবাদিকদের কাছে আবদার রাখলেন রানি, ‘‘আমার ছবির জন্য কালীঘাটে পুজো দেবেন।’’