সৌরভের সঙ্গে রানি। ছবি: সুদীপ্ত চন্দ
কথায় বলে, মাছে-ভাতে বাঙালি। মুম্বইয়ে এত বছর থাকার পরেও রানি মুখোপাধ্যায়ের স্টেপল ডায়েটে কোনও বদল হয়নি। রুই আর ইলিশ তাঁর পছন্দের। নতুন ছবি ‘হিচকি’র প্রচারে এসে ‘দাদাগিরি’র সেটেও তাঁর বাঙালিয়ানার জৌলুস অক্ষুণ্ণ। আগাগোড়া কথা বললেন বাংলায়।
সরস্বতী পুজোর রেশ জড়ানো শহরের জন্য রানি বেছেছিলেন সাদা রঙের শাড়ি, পাড়ে সোনালি সিক্যুইনের কাজ। কানে-গলায় হালকা গয়না আর রেড হট লিপস। ‘তুম পাস আয়ে’ আর ‘সে শাবা শাবা’ গানের তালে পা মিলিয়ে মঞ্চে প্রবেশ করলেন নায়িকা। তাঁর ছবির গান বাজতেই সেটের অনেকে ফিরে গিয়েছিলেন স্কুল-কলেজের সোনালি দিনগুলিতে। রানির কথাতেও ফিরে ফিরে আসছিল তাঁর কেরিয়ারের টুকরো টুকরো স্মৃতি, পরদার পিছনের নানা গল্প।
‘‘আমিরের সঙ্গে ‘গুলাম’ ছবিতে একটা দৃশ্য ছিল, যেখানে দৌড়ে গিয়ে মারধর খাওয়া ক্লান্ত আমিরকে জড়িয়ে ধরতে হবে। পরিচালক বিক্রম (ভট্ট) বারবার করে বলছিল, মন-প্রাণ ঢেলে যেন শটটা দিই। আমিও তা শুনে এমন দৌড়েছিলাম যে, আমিরকে নিয়ে সোজা বিক্রমের কোলে! তখন আমির বিক্রমকে বলেছিল, এই ইঞ্জিন কোথা থেকে ধরে এনেছ?’’
‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’ এর টাইটেল ট্র্যাকে রানির গালে শাহরুখের চুমু খাওয়ার দৃশ্যটির পিছনেও লুকিয়ে আছে আর এক মজার গল্প। ‘‘শুরুর দিকে খুব লাজুক ছিলাম। এতটাই যে, ওই গানটায় যত বার শাহরুখ কাছে আসছিল, আমি সরে সরে যাচ্ছিলাম,’’ হাসতে হাসতে বলছেন আদিরার মা। তবে রানি একবাক্যে মানেন, সলমনের সোয়্যাগের সঙ্গে কারও তুলনা হয় না। ‘‘ওর মতো ‘কুল’ অভিনেতা কমই দেখেছি।’’
প্রতিযোগীদের মধ্যেও রানিকে নিয়ে উন্মাদনা কম ছিল না। এক প্রতিযোগী রানির ‘হম তুম’ সত্তর বার দেখেছেন। আর এক প্রতিযোগীর আবদার রাখতে রানি পা মেলালেন ‘হম তো অ্যায়সে হে ভাইয়া’র ছন্দে।
রানির ছবিতে আসার সিদ্ধান্তে তাঁর বাবার খুব একটা সম্মতি ছিল না। তবে ‘বিয়ের ফুল’-এর গানের দৃশ্য দেখে বাবার কথায় মন ভারী হল আদরের কন্যার।
জীবনে কমবেশি হিচকি (বাধা) আমাদের সকলকে পেরোতে হয়। ‘‘তোমার খেলার কেরিয়ারে কোনটা হিচকি ছিল?’’ সৌরভের কাছে রানির জিজ্ঞাসা। ‘‘খেলতে নামার আগে পরপর বোলারদের বল করতে দেখে বেশ ভয় লাগত। প্রথম বলটা খেলার পরই ভয় কেটে যেত। কিন্তু ভয় কাটানোই ছিল আমার হিচকি,’’ অকপট সৌরভ। শোয়ের শেষে দাদার হাতে রানি দিলেন একটি স্কুলব্যাগ, লেখা ‘পিঠ পিছে বোলনে কী হিচকি’। বললেন, ‘‘এটা তোমার মেয়ে সানার জন্য।’’