দশ জন লোক। ৫০ কোটি টাকা। দু’ঘণ্টা দশ মিনিট সময়।
জীবনের নানা ওঠাপড়ায় যদি চাপে পড়ে থাকেন, টিকিটের দামের সঙ্গে ওই সময়টুকু খরচ করতে পারেন। এমন ছবি, যেখানে মাথা খাটানোর প্রয়োজন নেই। পুরো সময়টা জুড়ে শুধু অবাস্তবের নির্মাণ। যেখানে হেলিকপ্টার থেকে লাফ দিয়েও নির্মীয়মাণ বহুতলের জালে আটকে যাওয়া যায়, পাহাড়ি নদীর বান গাড়ি ঠেলে নিয়ে গিয়ে কয়েকশো ফুট নীচে ফেলে দিলেও বেঁচে থাকা সম্ভব। হস্তিশাবক যদি বিষাক্ত আখ খেয়ে মরতে বসে, হাত দিয়ে তার পেট থেকে সেই খাবার টেনে বার করে তাকে বাঁচিয়েও তোলা যায়।
এত কিছুর লক্ষ্য একটাই— ৫০ কোটি টাকা। সেই টাকার হদিশ যে দিয়েছে, গোটা ছবিতে সে-ই একমাত্র ট্র্যাজিক চরিত্র। কারণ, আকাশ থেকে পড়ে সে বাঁচেনি! চিত্রনাট্যের স্বার্থে মারা গিয়েছে। তবে ৫০ কোটির সুলুকসন্ধান বলার পরেই।
টোটাল ধামাল পরিচালনা: ইন্দ্র কুমার অভিনয়: অনিল, মাধুরী, অজয়, জাভেদ, আরশাদ ৪/১০
প্রথম ‘ধামাল’-এ যেমন, এখানেও সেই একই ছকে এগিয়েছে ছবি। ৫০ কোটি টাকার সন্ধান জানার পরে চার জোড়া উড়নচণ্ডী দৌড় লাগায় সেই লক্ষ্যে। দলগুলিতে রয়েছে বরখাস্ত হওয়া দুই ঘুষখোর দমকলকর্মী, বিবাহবিচ্ছেদ চাওয়া মরাঠি স্ত্রী ও গুজরাতি স্বামী, প্রথম ‘ধামাল’ থেকে জুটি বেঁধে থাকা দুই অনাথ (আরশাদ ও জাভেদ) এবং দুই মহা চোর (যারা আসলে ওই ৫০ কোটি চুরি করেছিল)। আর এদের পিছনে পুলিশ কমিশনার ও তার সাঙ্গোপাঙ্গ। পুলিশকর্তাটি দাবি করতেই পারে, ওই টাকা তার। কারণ, নোটবন্দির সময়ে সে-ই ১০০ কোটি পুরনো নোটের বদলে ওই ৫০ কোটি দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল এক ব্যবসায়ীকে।
একটু কি জটিল হয়ে গেল? তা হলে থাক। ছবিটা যদি দেখতে যান, জটটা তোলা থাক তখনকার জন্য। বরং অন্য দু’একটি কথা। এমন ছবি যেমন হয়— চড়া দাগের। তবু বোমান ইরানি, বিজয় পাটকর, আরশাদ ওয়ারসি, রীতেশ দেশমুখ, জাভেদ জাফরি, সঞ্জয় মিশ্রদের জন্য ছবি প্রাণবন্ত। অজয় দেবগণ অতিনাটকীয়। ‘তেজাব’ জুটি অনিল কপূর-মাধুরী দীক্ষিতও তাই। তবে অনিলকে দিয়ে পরিচালক একটি কাজ করিয়ে নিয়েছেন। বাঘের মুখের থেকে বিষ-মাংস ছিনিয়ে নেন অনিল। তার পরে বহু কাণ্ডের শেষে সেই বাঘকে তিনি বুঝিয়েও দেন, এ সব শুধু তাকে বাঁচাতে। এই ‘অসাধ্য সাধনের’ পরে অনিল নাম না করে দুই গুজরাতির কথা উল্লেখ করেন— এক জন ইংরেজকে দেশ থেকে তাড়িয়েছিলেন, অন্য জনকে আমেরিকা এক সময়ে নিষিদ্ধ করলেও এখন আপ্যায়ন করছে। সেই রাজ্যের লোক হয়ে বাঘকে পোষ মানানো তো নস্যি!