Sadak 2

পথ হারিয়ে ফেলা এক ছবি

২০২০ সালে দাঁড়িয়ে, কী করে এমন আষাঢ়ে গল্প প্রেজ়েন্ট করতে পারেন পরিচালক?

Advertisement

সায়নী ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২০ ০০:০১
Share:

দীর্ঘ কুড়ি বছর পরে ফের ডিরেক্টর’স হ্যাট মাথায় উঠেছিল তাঁর। পেয়েছিলেন নিজের কন্যা আলিয়া ভট্টকে প্রথম বার নির্দেশনা দেওয়ার অবকাশ। তা ছাড়া ছিল নব্বইয়ের নস্ট্যালজিয়া উসকে দেওয়ারও একটা জবরদস্ত সুযোগ। এত আয়োজন থাকতেও মহেশ ভট্টের প্রাপ্তির ভাঁড়ার শূন্যই রয়ে গেল। কারণ ‘সড়ক টু’-এর গায়ে ইতিমধ্যেই তকমা পড়ে গিয়েছে ‘ওয়র্স্ট রেটেড মুভি’র। কেন, তা ২ ঘণ্টা ১৪ মিনিটের ছবিটা দেখার ধৈর্য থাকলে বোধগম্য হবে। সঞ্জয় দত্ত-পূজা ভট্টর ‘সড়ক’-এর মসৃণ ল্যান্ডিংয়ের এত বছর পরে তার সিকুয়েল সেই রাস্তাতেই মুখ থুবড়ে পড়ল। মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে ৩০টা বছর, যা মাথায় না রেখেই এ ছবি তৈরি করেছেন ভট্ট সা’ব।

Advertisement

না হলে ২০২০ সালে দাঁড়িয়ে, কী করে এমন আষাঢ়ে গল্প প্রেজ়েন্ট করতে পারেন পরিচালক? একেই তাঁকে ঘিরে নানা বিতর্কের মাঝে এই ছবি-মুক্তি ও আর এক প্রস্ত বিতর্ক। অবাক লাগে, এই পরিচালকই ‘সারাংশ’, ‘অর্থ’-এর মতো ছবি বানিয়েছেন। বাবার সঙ্গে আলিয়ার প্রথম ছবি, তারও যথাযোগ্য বিচার করতে পারল না এই স্ক্রিপ্ট। আলিয়া আর সঞ্জয় দত্ত শুধু ব্যর্থ চেষ্টা করে গেলেন, নড়বড়ে স্ক্রিনপ্লে সম্বল করে।

সড়ক টু
পরিচালনা: মহেশ ভট্ট
অভিনয়: সঞ্জয়, আলিয়া, আদিত্য, যিশু, মকরন্দ
৪/১০

Advertisement

‘হম তেরে বিন অব...’ প্রয়াত স্ত্রী পূজাকে (পূজা) ভুলতে পারে না রবি (সঞ্জয়)। তার হলুদ-কালো ট্যাক্সি, ট্রানজিস্টারে পুরনো গান আর ফ্ল্যাশব্যাকে পূজার ঝলক— পুরনো ছবির রেফারেন্স বলতে এই-ই। নতুন অধ্যায় শুরু হয় আরিয়ার (আলিয়া) সঙ্গে রবির দেখা হওয়ার পর থেকে। কৈলাস যাওয়ার গাড়ি বুক করে আরিয়া, রবিও অপত্যস্নেহে আগলে চলে তাকে। প্রতিপত্তিশালী ব্যবসার একমাত্র উত্তরসূরি আরিয়া, আপনজনদের থেকেই বিপদ তার। পাশাপাশি সে লড়ছে ‘ভগবানের এজেন্ট’ ভণ্ড বাবাজির বিরুদ্ধে। গাড়ির চাকা রাস্তা ছুঁতেই শুরু অপ্রত্যাশিত সব চড়াই-উতরাই। সেই ঝাঁকুনিতে প্রাণ ওষ্ঠাগত দর্শকেরও!

ছবির নাম জাস্টিফাই করতেই কৈলাস যাত্রার অনুষঙ্গ ও গল্পকে রাস্তায় এনে ফেলা, কারণ আসল ঘটনা সবই ঘরের আধো-অন্ধকারে, অতিনাটকীয় ভাবে। চরিত্রদের ক্ষণে ক্ষণে ভোলবদল, ক্লিশেড সংলাপ, অবাস্তব সব ঘটনাক্রম দেখাটা ক্লান্তিকর। আলিয়ার প্রতিভার প্রতিও অবিচার। তাঁর প্রেমিকের চরিত্রে আদিত্য রায় কপূরও দুর্বল। চেনা আবেগ আর স্ক্রিন প্রেজেন্স দিয়ে লড়ে গিয়েছেন সঞ্জয়। যিশু সেনগুপ্ত হিন্দি ছবিতে তাঁর ছকে বাঁধা চরিত্রের পরিবর্তে এখানে অন্য রকম সুযোগ পেয়েছিলেন, তার সদ্ব্যবহারও করেছেন। তবে মকরন্দ দেশপাণ্ডে আর গুলশন গ্রোভার ক্যারিকেচারিশ ভিলেন হয়েই রয়ে গেলেন। ক্যামেরা চার দেওয়ালের বদ্ধ পরিবেশে ঘুরেছে। সব মিলিয়ে ট্রেলার থেকে ছবি, নির্মম প্রত্যাখ্যানের সম্মুখীন ‘সড়ক টু’, যার সঙ্গত কারণ ছবিজুড়ে ছড়ানো।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন