রিতু
এখন দেখলে বোঝার উপায় নেই, ইনি নব্বইয়ের দশকের নায়িকা। তাঁর ‘আঁখে’ ছবির সেই বিখ্যাত গান ‘লাল দুপাট্টেওয়ালি’র বয়সও হয়ে গেল চব্বিশ বছর। আর এক দশক আগে যেমন হঠাৎ করে ইন্ডাস্ট্রি ছেড়ে দিয়েছিলেন রিতু শিবপুরী, তাঁর ক্যামব্যাকও তেমনই ঝোড়ো হাওয়ার মতো।
তবে ‘হঠাৎ’ শব্দে তীব্র আপত্তি তাঁর। ‘‘হঠাৎ না। মনের কথা শুনেছিলাম। বিয়ের পর কাজ আর পরিবার, দুটোর মধ্যে কিছুতেই ব্যালেন্স করতে পারছিলাম না। শ্যুট শেষ করে যখন ফিরতাম, দেখতাম বর ঘুমিয়ে পড়েছে। আর ও যখন দিনে বেরোত, আমি তখন ঘুমোতাম। বাচ্চা হওয়ার পর সমস্যা আরও বেড়ে গেল। তাই একদিন ঠিক করলাম, এমনটা চলতে পারে না। তাই ছেড়ে দিলাম অভিনয়,’’ বলছিলেন রিতু।
বাচ্চারা বড় হয়েছে, তাই কেিরয়ারে মন দিলেন। তবে এ বার অবশ্য ছোট পরদায়। স্টার প্লাসের ‘ইস পেয়ার কো ক্যায় নাম দু’ ধারাবাহিকে। কিন্তু ছোট পরদা কেন? ‘‘স্ক্রিপ্টটা পড়ে এত ভাল লেগেছিল যে, তিন সেকেন্ডে ‘হ্যাঁ’ বলেছিলাম। আর এখন টিভি তো সব ঘরে ঘরে। সিনেমা দেখতে যাক আর না যাক, লোকে টিভি না দেখে থাকতে পারবে না। আমার মনে হয় টিভির মাধ্যমে অনেক বেশি লোকের কাছে সহজে পৌঁছে যাওয়া যায়,’’ উত্তর রিতুর। মনে করেন, এখন ভারতীয় টিভি যথেষ্ট পরিণত। ভাল ভাল কনটেন্ট আসছে ছোট পরদায়। কাজের পরিধিটাও
বেড়ে গিয়েছে। গত বছর যেমন ‘টোয়েন্টি ফোর’ টিভি সিরিজে অভিনয়ের জন্য পেয়েছিলেন দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার।
বলিউডে ফেরত আসা নিয়ে ভাবছেন না? ‘‘আমি তেমন স্ট্রিট স্মার্ট নই। আমার কোনও কানেকশনও নেই। সম্পর্ক ছাড়া বলিউডে কাজ পাওয়া মুশকিল। প্রযোজক, পরিচালক বা নায়কদের সঙ্গে প্রেম না করলে সহজে সুযোগ মিলবে না,’’ স্পষ্ট জানালেন রিতু। নিজেই বলছিলেন, এমন দু’-তিনটে প্রেম তাঁকেও করতে হয়েছে। আর সেটাই মেনে নিতে পারছিলেন না। প্রতিভার তা হলে কোনও জায়গা নেই? ‘‘থাকবে না কেন! প্রতিভা ছাড়া বেশি দিন টিকতেই পারবে না। লিঙ্কআপ সে এন্ট্রি ইজি হো যাতা হ্যায়,’’ জবাব তাঁর। এত বছর পর ইন্ডাস্ট্রিতে এসে নতুনদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা কেমন? ‘‘প্রতিযোগিতা তো আগেও ছিল। সব সময় থাকবে। কিন্তু আমি মায়ের চরিত্রও করতে পারি আবার প্রেমিকার রোলেও। সেটা ক’জন পারবে,’’ হাসতে হাসতে বলছিলেন তিনি।
বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করতেই কি এমন মেকওভার? নাকি হলিউডে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে? বেশ হাসলেন রিতু। বললেন, ‘‘এখনও তো হলিউড নিয়ে কিছু ভাবিনি। ‘ইস পেয়ার কো...’র লুক কিন্তু পুরো আলাদা। ওখানে একেবারে নির্ভেজাল ভারতীয়। তবে বলছেন যখন, হলিউডে যাওয়া নিয়ে ভেবে দেখতে হচ্ছে তা হলে।’’ আর এত বছর পরেও যে রিতু শিবপুরী নামের সঙ্গে ‘লাল দুপাট্টেওয়ালি’ জুড়ে গিয়েছে, সেটা নিয়ে অনুশোচনা হয়? উড়িয়ে দিলেন প্রশ্নটা, ‘‘রিগ্রেট কেন হবে! ওটা তো সত্যিই আমি করেছিলাম। ওটা আমার আইডেনটিটি।’’