রুদ্রজিত্ মুখোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক থেকে গৃহীত।
‘ঠাকুমা’ শব্দটির মধ্যে আকণ্ঠ জড়িয়ে থাকে এক গভীর অনুভূতি। সন্ধ্যেবেলায় তাঁর স্পর্শের ভেতর রূপকথা, উপকথার গল্প শোনা, ভয়ে বা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে যেতে যেতে ঘুমে তলিয়ে যাওয়া এখন বোধহয় বিস্মৃত অতীত। মা-বাবার বকুনি থেকে উদ্ধার পাওয়ার যাবতীয় কৌশল যাঁর জানা। তাঁর সংস্পর্শ হয়তো হারিয়েছে এই প্রজন্ম। আধুনিক পরিবারে ‘ঠাকুমা’ শব্দটারই হয়তো তেমন গুরুত্ব নেই। পড়াশোনার ঝক্কি সামলে স্মার্ট ফোনে বুঁদ হয়ে থাকা এই প্রজন্মের কাছে ঠাকুমার প্রয়োজন হয়তো শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কারও কারও কাছে তাঁদের স্পর্শ ও ভালবাসার অনুভূতি এখনও সতেজ। ‘সাত ভাই চম্পা’-র নায়ক রাঘবেন্দ্র ওরফে রুদ্রজিত্ মুখোপাধ্যায় নিজের ঠাকুমাকে নিয়ে আবেগ চেপে রাখলেন না। “এখন তো ঠাকুমা, দাদুদের সান্নিধ্য খুব কম বাচ্চাই পায়। আমার সৌভাগ্য যে আমি ঠাকুমার আদর পেয়েছি, তিনি আমাকে বড় করেছেন, আমার সাফল্য দেখেছেন। খুব খুশি হয়েছেন” বললেন অভিনেতা।
ঠাকুমাকে কিছুদিন আগে হারিয়েছেন রুদ্রজিত্। খবরটা পেয়েছিলেন ভারতলক্ষ্মী স্টুডিওর ‘সাত ভাই চম্পা’-র ফ্লোরেই। ‘‘সিচুয়েশনটা এমন ছিল যে আমি বাড়ি যেতেও পারব না। তখনও শুটিং শেষ হয়নি। পরদিন সকালে কল টাইম। কী করব, মাথা কাজ করছিল না। ওই মানসিক অবস্থা নিয়ে শুট করেছিলাম। টিমের সিনিয়রররা আমাকে বাড়ি যেতে বলেছিলেন। কিন্তু বাড়ি গেলেও পরের দিন সন্ধ্যের মধ্যে ফিরে আসতে হবে। গল্পের প্রায় সব দৃশ্যে আমি আছি। এপিসোড ছাড়ার তাড়া আছে। সমস্যা হল, বাড়ি পৌঁছতেই আট ঘণ্টা লাগে। ওরকম সিচুয়েশনে বাড়ি গিয়েই তো সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে আসতে পারব না। সে ক্ষেত্রে ধারাবাহিক টেলিকাস্টে প্রবলেম হত। পরে ঠাকুমার ঘাটশ্রাদ্ধের দিন গিয়েছিলাম’’ স্মৃতি শেয়ার করলেন অভিনেতা।
পরিচালকের সহকারী শুভঙ্করকে প্রথম ঠাকুমার মৃত্যুর খবর জানান রুদ্রজিত। শুভঙ্কর বলছিলেন, “শিল্পী, কলাকুশলীর জীবন বোধহয় এরকমই। শুটিংয়ে শিল্পীর তো কোনও রিপ্লেসমেন্ট হয় না... ইচ্ছা থাকলেও ফ্যামিলির প্রতি দায়িত্ব, কর্তব্য সব সময় করে ওঠা সম্ভব নয়। মনের ভেতর যা-ই ঘটুক কাজ করে যেতে হয়।”
আরও পড়ুন, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ নিয়ে রাগ? মুখ খুললেন সারা
ব্যক্তিগত আবেগ ভুলে চরিত্রে ঢুকে যাওয়াই বোধহয় অভিনেতার নিয়তি। রুদ্রজিত্ও জীবন থেকে এই শিক্ষাই পেলেন।
(টলিউডের প্রেম, টলিউডের বক্ল অফিস, বাংলা সিরিয়ালের মা-বউমার তরজা -বিনোদনের সব খবর আমাদের বিনোদন বিভাগে।)