মহব্বত, জব প্যার কিসিসে হোতা হ্যায়, আন্টি নম্বর ওয়ান, আলবেলাতে চুটিয়ে অভিনয় করেছেন সইদ।
প্রয়াত হলেন অভিনেতা সইদ জাফরি। বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। রবিবার তাঁর মৃত্যুর খবর জানান তাঁর ভাইঝি শাহিন অগ্রবাল।
নিজের ফেসবুক পেজে শাহিন লেখেন, “আজ জাফরি পরিবারের এক প্রজন্মের সমাপ্তি ঘটল। সইদ জাফরি তাঁর ভাই-বোনদের সঙ্গে মৃত্যু পরবর্তী জীবনে মিলিত হয়েছেন। তাঁর স্বর্গীয় বাবার কোলে ফিরে গিয়েছেন। এই সুন্দর মানুষটকে গোটা জাফরি পরিবার বিদায় জানাচ্ছে। মৃত্যুর পর দেখা হবে আবার।”
উনিশ শতকীয় অঔধে বাস্তবের রুক্ষতাকে অগ্রাহ্য করে সারাদিন দাবার চালেই মত্ত থাকতেন মির্জা সজ্জাদ আলি। আর তাঁর সর্ব ক্ষণের সঙ্গী মির রৌশন আলি। গত কাল যাঁর প্রয়াণে আপামর বাঙালির মনে মির রৌশনরূপী সইদ জাফরির সেই অনবদ্য অভিনয়ের স্মৃতি বোধহয় ফের এক বার ভেসে উঠল। সত্যজিৎ রায়ের সেই হিন্দি ছবি ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’তে মির্জা সজ্জাদরূপী সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছিলেন জাফরি। আর হলিউড ছবিতে বুঁদ হয়ে থাকা দর্শকদের মনে এখনও অমলিন ‘গাঁধী’ বা ‘আ প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া’, ‘আ ম্যান হু ওয়ান্টেড টু কিঙ্গ’, ‘রেজরস এজ’ বা বাফটা মনোনীত ‘মাই বিউটিফুল লন্ড্রেট’। তবে বলিউডের অসংখ্য পার্শ্বচরিত্রেও দেখা গিয়েছে জাফরিকে। ‘দিল’, ‘কিষণ কানহাইয়া’, ‘ঘর হো তো অ্যায়সা’, ‘রাজা কি আয়েগি বরাত’, ‘দিওয়ানা মস্তানা’, ‘মহব্বত’, ‘জব প্যার কিসিসে হোতা হ্যায়’, ‘আন্টি নম্বর ওয়ান’, ‘আলবেলা’ তাঁর অভিনীত ছবিগুলোর কয়েকটা।
১৯২৯ সালে পঞ্জাবে জন্মেছিলেন সইদ জাফরি। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে লন্ডনের রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টস-এ যোগ দেন তিনি। এর পর ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে পাড়ি মার্কিন মুলুকে। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটকের উপর ডিগ্রিলাভ। অভিনয় জীবন শুরু করেছিলেন থিয়েটারের মঞ্চে। প্রথম ভারতীয় হিসাবে শেক্সপিয়রের নাটক নিয়ে সারা মার্কিন মুলুক ঘুরে বেড়িয়েছিলেন জাফরি। সেখানেই ব্রডওয়েতে অভিনয় শুরু করেন। ‘তন্দুরি নাইটস’, ‘দ্য ফার প্যাভিলিয়নস’ বা ‘গ্যাংস্টার’ বা ১৯৮০-র দশকে জনপ্রিয় ‘সিরিজ জুয়েল ইন দ্য ক্রাউন’-এর মতো জনপ্রিয় টেলিভিশন শো-তে তাঁর অভিনয় ছিল নজরকাড়া। টেলিভিশনের রমরমার দৌলতে সহজেই ব্রিটিশদের ঘরে ঘরে পৌঁছেছিলেন তিনি। এর পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি জাফরিকে। উড়ান ছিল হলিউডের দিকে। সেখানেও সহজাত অভিনয় প্রতিভার জোরে স্বতন্ত্র জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি।
১৯৯৫ সালে নাটকে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিতে ‘ওবিই’ উপাধি দেয় ব্রিটিশ সরকার।