‘মাথা ঠান্ডা রেখে শো সঞ্চালনা করতে হয়’

গোয়ার সমুদ্রসৈকতে সলমন খান। স্বভাবসিদ্ধ রসিকতায় ভরপুর তিনি। আনন্দ প্লাসের সঙ্গে খোলামেলা সাক্ষাৎকারে অভিনেতা গোয়ার সমুদ্রসৈকতে সলমন খান। স্বভাবসিদ্ধ রসিকতায় ভরপুর তিনি। আনন্দ প্লাসের সঙ্গে খোলামেলা সাক্ষাৎকারে অভিনেতা

Advertisement

শ্রাবন্তী চক্রবর্তী

মুম্বই শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০৯
Share:

সলমন

প্র: প্রতি বছর ‘বিগ বস’-এর কোন বিষয়টা আপনাকে আকর্ষণ করে?

Advertisement

উ: আমাকে সকলে বিয়ের কথা জিজ্ঞাসা করেন। মনে হয়, ‘বিগ বস’-এর সঙ্গেই আমার বিয়ে করা উচিত ছিল (হেসে)। অনেকে হয়তো জানেন না, আমার আগে শাহরুখকে (খান) শোয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ে শাহরুখ শুটিং করছিল প্রাগে। ওর কাঁধে চোটও ছিল তখন। শাহরুখ না করায় শো আমার কাছে আসে। এ বারের শোয়ের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ বিচিত্র জুটি। আমি নিজে প্রতিটি এপিসোড দু’বার করে দেখি, যাতে প্রতিযোগীদের বুঝতে সুবিধে হয়।

Advertisement

প্র: কার সঙ্গে আপনার জুটি সবচেয়ে বিচিত্র হতে পারে?

উ: আমি আর সঞ্জয় দত্ত ‘বিগ বস ৫’ হোস্ট করেছিলাম। আমাদের জুটি সকলের খুব পছন্দ হয়েছিল। এ বারের ‘বিগ বস’ নিয়ে একটা গুজব রটেছিল। সেটা হল, আমার কো-হোস্ট হবে ক্যাটরিনা। আমাকে মজা করে ক্যাটরিনা এক বার বলেছিল যে, ও আমার সঙ্গে শো হোস্ট করতে চায়। জিজ্ঞাসা করেছিলাম, পারিশ্রমিক কত নেবে? ক্যাটরিনা হেসে বলেছিল, তুমি যা নেবে, আমিও তা-ই। ক্যাটরিনা এটাও বলেছিল, ‘তুমি ইমপ্রম্পটু হোস্টিং কর। আমি স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী করব।’ পুরোটাই মজার ছলে।

প্র: দুর্বল প্রতিযোগীদেরই সমর্থন করতে দেখা যায় আপনাকে...

উ: কথা বলে অনেক সময়ে ওদের সাহস বাড়াতে হয়। ওভারস্মার্ট প্রতিযোগীরা যখন খুব বেশি বাড়াবাড়ি করে, তখন মাঝে মাঝে মনে হয়, ঘরের ভিতর গিয়ে মেরে আসি। কিন্তু মাথা ঠান্ডা রাখতে হয়। ‘বিগ বস’ আমার মতে সবচেয়ে কঠিন রিয়্যালিটি শো। এমন একটা মাইন্ডগেম যেখানে নিজেকে সংযত রাখতে হয়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে চাই ‘বিগ বস’-এর বাইরেও যেন প্রতিযোগীরা কাজ পান। কিন্তু সেটা তখনই সম্ভব, যখন প্রতিযোগী বুদ্ধিমান হয়। নিজেকে ঠিক ভাবে সকলের সামনে তুলে ধরে। ঘরের ভিতর যতই ফিসফাস করো না কেন, তোমার চালাকি দর্শক ধরে ফেলবেন।

প্র: প্রতিযোগী নির্বাচন থেকে ছবির কাস্টিং, নিজের প্রভাব খাটান?

উ: পুরো মিথ্যে। একটা উদাহরণ দিই, পুনিত ইসারকে আমি পনেরো বছর বয়স থেকে চিনি। কিন্তু আমি স্টেজে উঠে জানতে পারি যে, ও ‘বিগ বস’ করছে। ‘বিগ বস’-এর যখন অডিশন হয়, তখন হাজার হাজার লোক আসে। ‘বিগ বস’-এর নিজস্ব ক্রিয়েটিভ টিম আছে, যাঁরা প্রতিযোগীদের নির্বাচন করেন। তার পর ডাক্তার, মনোরোগ বিশেষজ্ঞের প্যানেল বসিয়ে একটা প্যারামিটার তৈরি করা হয়। কাজের জন্য যখন কাউকে মনোনীত করি, অনেক ভেবেচিন্তে করি। নিজের প্রোডাকশন হাউসের হয়ে করলে আলাদা ব্যাপার। যেমন, ডেইজ়ি শাহকে আমি ‘জয় হো’তে কাস্ট করেছিলাম। আমার আর রেমোর (ফার্নান্ডেজ়) ‘রেস থ্রি’-এর আগে একটা ডান্স নির্ভর ছবি করার কথা ছিল়। কিন্তু আমার সেই ডান্স শিখতে অনেক সময় লেগেছিল। তাই তার আগে ‘রেস থ্রি’ করা হল। ডেইজ়ি এবং জ্যাকলিন দু’জনকেই আগে কাস্ট করা হয়েছিল। তাই ওদেরকে ‘রেস থ্রি’তেও নেওয়া হয়। সেই কাস্টিংয়ে আমার কোনও হাত ছিল না। সলমন বললেই যে কোনও সময়ে, যে কাউকে হঠাৎ করে ছবি বা শোয়ে নেওয়া যায় না।

প্র: মল্টায় ‘ভারত’-এর শুটিংয়ের সময়ে মায়ের সঙ্গে আপনার ছবি ভাইরাল হয়েছিল। কেমন ঘুরলেন?

উ: অনেক বছর পরে রাস্তায় মায়ের হাত ধরে ঘুরলাম। আর ছবি দেখে যাঁদের মনে হয়েছে, আমি মাকে ঘুরিয়েছি, তাঁদের বলে দিই, মা আমাকে ঘুরিয়েছেন। কত দিন পরে হোটেলের লবির চেহারা দেখলাম! না হলে তো সব সময়ে সার্ভিস লিফ্ট বা কিচেনের মধ্যে দিয়ে হোটেলের বাইরে আর ভিতরে যেতে হয়।

প্র: জীবনের এই পর্যায়ে এসে দায়িত্ববান সন্তান হয়েছেন?

উ: এই প্রশ্ন মা আর বাবাকে করলে ভাল হতো না? শুধু পরিবারের জন্য নয়, সমাজের জন্যও আমাকে এক জন দায়িত্বহীন লোক ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে।

প্র: স্টারডমের জন্য সবচেয়ে বড় ত্যাগ কী করেছেন?

উ: নাথিং। আমি আউটডোরে গেলে পরিবারকে খুব মিস করি। কিন্তু আজকাল ভিডিয়ো কল করে নিই। বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলি। দু’জন দু’জনকে শুধু এক বার জিজ্ঞাসা করি, কেমন আছ?

প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে ৩০ বছরের জার্নি কী ভাবে দেখেন?

উ: এই তো সে দিন শুরু হল! অভিনয় করা আমার হবি ছিল। সেখান থেকে পেশায় পরিণত হয়েছে। কাজের প্রতি আমার প্যাশন বজায় রাখতে চাই। কিছু বছর আগে ফ্লাইটে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ এক জন এয়ারহোস্টেস আমাকে বললেন, ‘‘আপনার রাইড অনেক উপরে পৌঁছে গিয়েছে। খুব ভাল জার্নি ছিল।’’ প্রথমে ভাবছিলাম, এয়ারহোস্টেস আমাকে ‘হ্যাপি জার্নির’ শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। তার পর ওঁর ইউনিফর্মের দিকে তাকিয়ে দেখি নাম লেখা আছে, রেনু আর্য। রেনু আমার প্রথম ছবি ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’তে কো-স্টার ছিলেন।

প্র: পঞ্চাশোর্ধ্ব হয়েও এত ফিট থাকেন কী করে?

উ: অভিনেতাদের কাজ কী? লাফানো, ঝাঁপানো, অ্যাকশন করা, নাচ-গান করা। ডেস্কজব তো করি না। ফিট থাকা জরুরি।

প্র: প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার উপরে আর রাগ আছে?

উ: কোনও দিনই ছিল না। আক্ষেপ থাকল যে, ছবিটা ওর সঙ্গে করা হল না। প্রিয়ঙ্কার এনগেজমেন্ট পার্টিতে অর্পিতা গিয়েছিল। প্রিয়ঙ্কা আর নিকের জন্য শুভেচ্ছা রইল।

প্র: ‘বিগ বস’-এর ঘরে সলমন থাকলে দর্শক কোন সলমনকে দেখতে পাবেন?

উ: ‘বিগ বস’-এর চেয়েও দশ গুণ বড় ঘরে (জেল) সময় কাটিয়ে এসেছি। পার্থক্য একটাই, ওখানে ক্যামেরা ছিল না।

প্র: সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর সঙ্গে আবার কাজ করছেন?

উ: এক লাইন শুনে হ্যাঁ বলে দিয়েছিলাম। স্ক্রিপ্ট শুনিনি। অপেক্ষায় আছি, কখন সঞ্জয় ফোন করবে। আপনারা এক বার বলুন। আমার ফোন তো ধরছে না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন