Rani Mukerji

মুভি রিভিউ: অবহেলিত মানুষের বাঁচতে শেখার ইতিকথা হিচকী

বলিউডি মূল ধারার ছবিতে বেশ কিছুকাল হল বিকল্প আখ্যানের হাওয়া লেগেছে। বলা বাহুল্য, যশ রাজের মতো প্রথম সারির ফিল্মি শাহেনশা কোম্পানিও বদলেছে অনুরাগ-দিবাকরদের সেই হাওয়ায়। তাই টিন-এজ প্রেমের গল্পের বদলে আজ তাদের বিষয় হিচকী।

Advertisement

দেবর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ১৫:১৬
Share:

হিচকী আদতে নিজের পথে জিতে যাওয়ার গল্প। ছবিতে রানি মুখোপাধ্যায় অভিনীত মিস মাথুর সমস্ত প্রতিকূলতা পেরিয়ে জিততে শেখার নিশান।

Advertisement

বলিউডি মূল ধারার ছবিতে বেশ কিছুকাল হল বিকল্প আখ্যানের হাওয়া লেগেছে। বলা বাহুল্য, যশ রাজের মতো প্রথম সারির ফিল্মি শাহেনশা কোম্পানিও বদলেছে অনুরাগ-দিবাকরদের সেই হাওয়ায়। তাই টিন-এজ প্রেমের গল্পের বদলে আজ তাদের বিষয় হিচকী। হেঁচকি-তোলা এক মেয়ের গল্প। মিস মাথুর নামের সেই মেয়ে চায় শিক্ষিকা হতে। সেই লক্ষ্যেই স্কুলে বার বার চাকরির দরখাস্ত করে সে। কিন্তু বার বারই তা খারিজ হয়ে যায়। কারণ, কথায় কথায় মিস মাথুরের হেঁচকি ওঠার বদভ্যাস। আড়ষ্টতা।

কথা বলার প্রাথমিক এই সমস্যা নিয়ে কী ভাবে ছাত্র পড়াবেন তিনি? মুখোমুখি হতে হয় এই প্রশ্নের। প্রিন্সিপালরা ইন্টারভিউতে জেরবার করে দেন তাঁকে। বাড়িতেও বাবার কাছ থেকে বার বার অন্য পেশা বেছে নেওয়ার চাপ আসতে থাকে। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় মিস মাথুর। কিছুতে ভেঙে পড়েন না। শিক্ষক হওয়া যে আর পাঁচ রকম পেশার থেকে আলাদা, চোখে খেলে যায় সেই স্বপ্ন।

Advertisement

হঠাৎই একটি স্কুল থেকে আসে চাকরির ডাক তাঁর। জেতার প্রথম ধাপ যেন-বা। খুশিতে নেচে ওঠেন তিনি। কিন্তু বাধাও আসে পাল্লা দিয়ে। গরিব বস্তির ছেলেমেয়েদের বিভাগে পড়ানোর দায়িত্ব পড়ে তাঁর। এর আগে আট জন শিক্ষক ব্যর্থ হয়েছেন। কিন্তু মিস মাথুর হারতে শেখেননি। তাই হাসি মুখে বলেন, দেখাই যাক না।

মুম্বইয়ের গরিব বস্তির ছেলেমেয়েরা বড়ই দামাল। কখনও মিসকে ভেঙিয়ে তুতলে র‍্যাপ করে, তো কখনও ম্যামের ফোন নম্বর-সহ পোস্টার টাঙিয়ে দেয় স্কুলের দেওয়ালে। কখনও চকের মধ্যে দেশলাই ভরে দেয় তো কখনও ভাঙা চেয়ার সাজিয়ে রাখে অবিকল। কিন্তু কিছুতেই হতোদ্যম হন না মিস। বদলে আরও যত্নে পড়াতে থাকেন তাদের। বোঝান জীবনের মানে। এমনকী, খেলার মাঠ বা তাদের বস্তিতে গিয়ে অভিনব কায়দায় পড়ান তিনি।

আরও পড়ুন: ‘হিচকী’ দেখে কেঁদে ফেললেন মাধুরী

দস্যি ছেলেমেয়েরা বদলাতেও থাকে অচিরেই। কিন্তু শুরু হয় অন্য সমস্যা। স্কুলের লবি-র শিক্ষকরা দল পাকাতে থাকে। মিস মাথুরকে ফাঁসায় তারা। ফাঁসিয়ে দেয় ছেলেমেয়েদেরও। তবে শেষমেশ সত্যের জয় হয়। ধরা পড়ে চক্রান্ত। জিতে যান মিস মাথুর ও তাঁর ছাত্ররা।

আদিত্য চোপড়ার আগের ছবিতেও রানি মুখোপাধ্যায়কে অন্য চেহারাতেই দেখা গিয়েছিল। সিদ্ধার্থ মলহোত্র পরিচালিত ও আদিত্য চোপড়া প্রযোজিত এই ছবিতেও নিজের লুক নিয়ে পরীক্ষা করেছেন রানি। এমন একটি চরিত্রে রানিকে দেখতে পাওয়া এ ছবিকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়। চিত্রগ্রহণ বা সঙ্গীতেও বার বার উঠে আসে, মুম্বইয়ের এক অন্য চিত্র। চকচকে জেল্লার বাইরে যেখানে ধারাভি বস্তি। সি লিঙ্ক ব্রিজের পাশেই যেখানে অবহেলিত শিশুদের স্কুল। সব মিলে মূল ধারার বাণিজ্যিক ছবির ভিড়ে ‘হিচকী’ হয়ে ওঠে অনন্য। অবহেলিত মানুষের জোরের অন্যতর ইতিকথা ও বাঁচতে শেখার লড়াই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন