জাভেদ আলি
পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গেলেই আসে সেই সব ম্যাজিকাল ফোন।
‘‘আমার ছবিতে গান গাইতে হবে।’’ ‘জোধা আকবর’-এ ‘জসনে বাহারা হ্যায়’ কিংবা ‘রকস্টার’-এর রেকর্ডিং আছে। ছুটি ফেলে ছুটে যান গানের টানে।
প্রত্যেকটা গানই হিট। শাহরুখ, হৃত্বিক, আমির সকলের ছবিতেই জাভেদ আলির গান আছে। যদিও মনে করেন সেরা গান এখনও গাওয়া হয়নি। মুম্বইয়ের ঘোড় দৌড়ে মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সবচেয়ে শক্ত কাজ। ‘‘এখন পরিচালকরা চার-পাঁচ জন গায়ককে দিয়ে রেকর্ড করিেয় একজন গায়ককে ফাইনাল করে। তাই গান গাওয়ার সময় নিজস্ব গায়কিতে গাওয়া উচিত।’’
ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরে গান, জিঙ্গল, ছবির গান গাওয়ার জন্য হাপিত্যেশ করে বসে থাকা সাত বছর, অনেক ধৈর্য দিয়েছে দিল্লির এই ছেলেকে। বললেন, ‘‘এখন কিন্তু নতুনরা চট করে সাফল্য চায়। এটা ভুল।’’ এক সময় তাঁর ছোটবেলা ভরে ছিল মেহেদি হাসেন, গুলাম আলি, জগজিৎ সিংহ। ‘‘আমার সম্পর্কে অনেক লোক আজও ঠিক করে জানে না। দোষটা আমার। পিআর নেই,’’ আফসোস তাঁর গলায়।
মাল্টিটাস্কিংয়ের যুগে নায়ক-নায়িকারাই এখন গায়ক। তা হলে গায়কদের কী হবে? ‘‘আমি খুশি আমার প্রিয় অভিনেতা সলমন খান, পরিণীতি চোপড়া গান গাইছেন।
দেখুন কেউ কারও জায়গা নিতে পারে না। আর এরা তো নিয়মিত গাইছে না,’’
বললেন জাভেদ।
সব ধরনের গান গাইলেও সুফির ধুনই তাঁর মনের কাছের সুর। কিন্তু ‘টাইপকাস্ট’ হতে চান না। তাই বলে মহম্মদ রফির গাওয়া ‘তায়াব আলি’-র মতো বিখ্যাত গান গেয়ে দিলেন? ‘‘দেখুন, ওটা একটা বড় চ্যালে়ঞ্জ ছিল। প্রীতমদা বলেছিল গানটার মধ্যে উচ্ছ্বলতা আনতে। এত উঁচু পরদায় গাইতে হয়েছিল যে প্রথমে ভেবেছিলাম পারবই না। চার বার গেয়েছিলাম গানটা,’’ গলায় উচ্ছ্বাস ‘গজনি’-র গায়কের।
‘সারেগামাপা লিটল চ্যাম্প’-এর জন্য কলকাতায় আসা। বাচ্চাদের আবার কোনও প্রতিযোগিতা হতে পারে? বললেন,‘‘বাবা-মায়ের কাছে আবেদন প্লিজ তাঁরা বাচ্চাদের জোর করে কিছু করাবেন না। রিয়্যালিটি শো জাস্ট একটা ট্রেনিং সেন্টার ছাড়া আর কিছু না’’
মালয়ালি ছাড়া সব ভাষাতেই গান গাওয়া হয়ে গিয়েছে তাঁর। ইসমাইল দরবার থেকে শংকর-এহসান-লয় প্রত্যেকেই তাঁকে দিয়ে নানা ধাঁচের গান গাইয়েছেন। কিন্তু রহমানের টিমে লাইভ গাওয়ার অভিজ্ঞতাই আলাদা। বললেন, ‘‘রহমানের মতো পারফেকশনিস্ট খুব কম দেখেছি। গানের টেকনিকাল দিকগুলো ওর কাছেই জেনেছি।’’
ফ্যানদের জন্য সিঙ্গলস নিয়ে আসছেন খুব শিগগিরি। মনে করেন ইন্ডাস্ট্রিতে আইটেম নাম্বারেরও প্রয়োজন আছে। শুধু রোম্যান্টিক গান গাইলেই চলবে না।
সাক্ষাৎকারে আজও আড়ষ্ট। বোঝাই যায় না স্টেজের ঝলমলে আলোয় এই মানুষটাই কেমন লক্ষ মানুষকে গানে, নাচে, কথায় মাতিয়ে রাখেন।