গ্রাম দিয়ে শহর ঘিরছে এসআরএফটিআই

এসআরএফটিআই-এর ডিরেক্টর দেবমিত্রা মিত্রের বক্তব্য, ‘‘প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, পুণে এফটিআই এবং এসআরএফটিআই-এর প্রাক্তন ছাত্র এবং বিশেষজ্ঞদের শিবিরে  নিয়ে যাওয়া হবে। এ জন্য তাঁরা সাম্মানিকও পাবেন।’’

Advertisement

স্যমন্তক ঘোষ

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৮ ০১:২২
Share:

এত দিন ছাত্রছাত্রীরা আসতেন প্রতিষ্ঠানে। এ বার প্রতিষ্ঠান পৌঁছে যাবে তাঁদের কাছে। এমনই পরিকল্পনা নিয়েছে সত্যজিৎ রায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (এসআরএফটিআই)।

Advertisement

কর্তৃপক্ষের দাবি, ফিল্ম এবং টেলিভিশন মিলিয়ে মোট ৭২ জন পড়ুয়া প্রতি বছর এই ইনস্টিটিউটে ভর্তির সুযোগ পান। চাহিদা রয়েছে আরও। সে কথা ভেবেই রাজ্যের ২৩টি জেলায় এসআরএফটিআই-কে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইনস্টিটিউটের জনসংযোগ আধিকারিক অমর চৌধুরীর কথায়, ‘‘গত কয়েক বছরে শহর এবং গ্রামে ফিল্ম ও টেলিভিশন নিয়ে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। যার সুযোগ নিয়ে গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। তাদের অনেকেই খ্যাতনামা ব্যক্তির মুখ ব্যবহার করে প্রতারণাও করছে। সেই প্রবণতা ঠেকাতে কম খরচে প্রতি জেলায় একটি করে ফিল্ম এবং টেলিভিশনের শিবির করবে এই ইনস্টিটিউট।’’

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম শিবিরটি জুলাইয়ে চন্দননগরে হবে। প্রতি শিবিরে ১৫ জন পড়ুয়া থাকবেন। সেখানে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তাঁরা অভিনয়, চিত্রনাট্য, পরিচালনা, চিত্রগ্রহণ, চিত্র সম্পাদনা এবং ধ্বনি সম্পাদনা হাতেকলমে শিখতে পারবেন। দু’মাস ধরে চলবে প্রতিটি শিবির। সপ্তাহান্তে ক্লাস হবে। একটি শিবিরে মোট ১৬টি ক্লাস হবে। হাতেকলমে ফিল্ম তৈরির প্রশিক্ষণের যন্ত্র সরবরাহ করবেন কর্তৃপক্ষ। ওয়ার্কশপে তৈরি ছবি পড়ুয়ারা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দিতে পারবেন। শিবিরে যোগদানের ফর্ম মিলবে ইনস্টিটিউটের দফতর, ওয়েবসাইট, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইমেলে।

Advertisement

সূত্রের খবর, প্রতিটি বিভাগের জন্য শিবির করতে প্রায় তিন লক্ষ টাকা খরচ করবেন কর্তৃপক্ষ। সেই খরচ তুলতে কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী না হয়ে সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলির জন্য বিজ্ঞাপনের ছবি তৈরি করবে ইনস্টিটিউট। এসআরএফটিআই-এর ডিরেক্টর দেবমিত্রা মিত্রের বক্তব্য, ‘‘প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, পুণে এফটিআই এবং এসআরএফটিআই-এর প্রাক্তন ছাত্র এবং বিশেষজ্ঞদের শিবিরে নিয়ে যাওয়া হবে। এ জন্য তাঁরা সাম্মানিকও পাবেন।’’

এসআরএফটিআই-এর প্রাক্তন ছাত্র এবং টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির এডিটর শৌভিক দাশগুপ্তের বক্তব্য, ‘‘এর ফলে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রশিক্ষিত কুশীলব পাওয়া যাবে। গ্রামেগঞ্জে ভাবার মতো ছবি নিয়ে চর্চা বাড়বে। গ্রামের মানুষও ছবির ভাষা শিখতে পারবেন। নিজেদের কথা তাঁদের মতো করে ছবির ভাষায় বলতে পারবেন।’’ শৌভিকের মতোই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেকে ইনস্টিটিউটের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

দেশে এখন মাত্র দু’টি সরকারি ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট। একটি পুণেতে, অন্যটি কলকাতায়। কমন জয়েন্ট এন্ট্রান্সের মাধ্যমে এই দু’টি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হয়। এ ছাড়া অভিনয় শিখতে রয়েছে ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের প্রতিষ্ঠান দেশে ছড়িয়ে পড়লে চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশনে অনুষ্ঠানের মান উন্নত হবে।

সূত্রের খবর, পরবর্তীকালে পূর্ব এবং উত্তর পূর্ব ভারতে আরও প্রতিষ্ঠান তৈরির পরিকল্পনা আছে এসআরএফটিআই-এর। ইতিমধ্যেই অরুণাচলের ইটানগরে ক্লাস শুরু হয়েছে। সেখানে চলছে ভবন তৈরির কাজ। পাশাপাশি, ত্রিপুরা এবং ঝাড়খন্ড সরকারের সঙ্গেও কথা চলছে কর্তৃপক্ষের। ত্রিপুরা সরকার বিষয়টি নিয়ে উৎসাহ প্রকাশ করেছে বলে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন