এখনও নিজেকে লোকসংগীত শিল্পী ভাবি

গানের সঙ্গে নামের পিছনের গল্পও শোনালেন পাপনগানের সঙ্গে নামের পিছনের গল্পও শোনালেন পাপন

Advertisement

মধুমন্তী পৈত চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০১৭ ০৮:১০
Share:

পাপন

প্র: কবে অঙ্গরাগ মোহান্ত ‘পাপন’ হল?

Advertisement

উ: পাপন আমার ডাক নাম। মনে রাখাও সহজ। অনেক বছর আগে কেরল সাহিত্য উৎসবে গুলজারসাবের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তখন গান গাওয়া সবে শুরু করেছি। আমার অ্যালবাম ‘জোনাকি রাতি’ মুক্তি পেয়েছে। নাম নিয়ে একটা টানাপড়েন চলছিল। অঙ্গরাগ নামটা শুনতে ভাল হলেও লোকে সব সময় ঠিক ভাবে উচ্চারণ করতে পারে না। তখন আমি গুলজারসাবকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কী করা যায়। উনি বললেন, পাপনই রাখো। কারণ এটা একটা ধ্বনি। আর তুমি যা-ই করো, তোমার সঙ্গে এই নামটাই যায় (হাসি)।

প্র: আপনার গানে অসমের প্রভাব কতখানি?

Advertisement

উ: উত্তর-পূর্বে আমি বড় হয়েছি। আমার ও আমার গানের উপর ওখানকার নীল আকাশ, মাটির গন্ধ সবেরই বিশাল প্রভাব আছে। আর এই প্রভাবটা খুবই স্বতঃস্ফূর্ত।

প্র: লোকসংগীত থেকে বলিউডে প্লেব্যাক, কাজটা কি কঠিন ছিল?

উ: না, কঠিন বলব না। তবে এটা একটা অন্য ধরনের শেখা। বলিউড বিভিন্ন জঁরের সংগীতের দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। ছবির সংগীতের মধ্য দিয়ে অন্য কারও গল্প বলা হয়। আর সেটা করার জন্য সেই গানের স্টাইল, মুড, প্রেক্ষিত বুঝতে হয়। অনেক সময় নিজের কমফর্ট জোন থেকেও বেরোতে হয়। তবে আমি এখনও নিজেকে লোকসংগীত শিল্পী বলে মনে করি। প্লেব্যাকের ক্ষেত্রে আমি সিলেক্টিভ। তবে নতুন যা শিখছি, সেটাকেও নিজের গানে প্রয়োগ করার চেষ্টা করি।

প্র: আপনার গাওয়া গানগুলো দরদী (সোলফুল)। আইটেম সং গাইবেন না?

উ: আমার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে সোলফুল গান ভাল যায়। তাই হয়তো তেমন গানের অফার বেশি পাই। তবে ‘বাবুমশাই বন্দুকবাজ’-এ ‘চুলবুলি’ আর ‘হাওয়াইজাদা’য় ‘তুরাম খান’ গানগুলো বেশ অন্য রকম ছিল। ফান নাম্বার। ডান্স নাম্বারও গাইতে চাই।

প্র: প্রিতমের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?

উ: খুব ভাল। ওর নির্দেশনায় অনেক ভাল ভাল গান গেয়েছি। গানের নেপথ্যের গল্প, ভাবটা নিয়ে ও আমাকে একটু গাইড করে। কিন্তু গানটা যেন আমি আমার মতো করেই গাই, সেই বিষয়ে সবটুকু স্বাধীনতা দেয়।

প্র: এখনও পর্যন্ত এ আর রহমানের সঙ্গে তো কাজ করেননি...

উ: হ্যাঁ। তবে কাজ করার ইচ্ছে ষোলো আনা আছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না (হাসি)।

প্র: সংগীতে আপনার অনুপ্রেরণা কারা?

উ: যখনই কোনও ভাল সুর শুনি, সেই সংগীতই আমার অনুপ্রেরণা হয়ে যায়। বাবা-মাকে দিয়ে হাতেখড়ি। এর পর পিঙ্ক ফ্লয়েড, ফ্র্যাঙ্ক জাপ্পা, নুসরত ফতে আলি খানসাব, মেহদি হাসান, জগজিৎ সিংহ... সকলের গানই ভাল লাগে। জ্যাজ, ব্লুজ, রক, ইলেকট্রনিক বিভিন্ন জঁরের সংগীত শুনতে আমি পছন্দ করি।

প্র: অরিজিৎ সিংহকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে হয়?

উ: কোনও প্রতিযোগিতাই নেই। ও ইন্ডাস্ট্রির অর্ধেক। আর আমি মাত্র পাঁচ শতাংশ (হাসি)।

প্র: একই ছবির একটি গান এখন একাধিক শিল্পীকে দিয়ে গাওয়ানো হয়। গায়কের কাছে এর কোনও ভাল দিক আছে?

উ: সত্যি কথা বলতে, আমি এই ট্রেন্ডটা বুঝতে পারি না। একই ছবিতে একটা গানের তিনটে ভারসন, তিন জন শিল্পীর গাওয়া। আমার মনে হয়, এতে গল্পের ছন্দ কেটে যায়। আর গায়কের পক্ষে বিষয়টা খুব লাভবান হয় কি না, সেটা নিয়েও খুব একটা নিশ্চিত নই।

প্র: গান গাওয়া না কম্পোজ করা, কোনটা বেশি পছন্দের?

উ: দুটোই সমান। তবে কম্পোজ করার সময় একটা অন্য স্পেস পাওয়া যায়।

প্র: বাংলাতেও তো গান গেয়েছেন...

উ: ভাষাটায় একটা মাধুর্য আছে। বাংলার সঙ্গে আত্মিক যোগও অনুভব করি।

প্র: বলিউডে গাওয়া গানগুলোর মধ্যে কোনটা মনের খুব কাছের?

উ: অনেকগুলোই। তবে একটা বলতে বললে, ‘স্পেশ্যাল ২৬’ ছবির ‘কৌন মেরা...’ (হাসি)।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন