হার না মানা কন্যে

ঝুমুরের জীবনে ১৪টা বসন্ত পার হয়ে গিয়েছে যে! এ বার বড় ঝুমুরের চরিত্রে ঐন্দ্রিলা শর্মা। কিন্তু কী অদ্ভুত মিল রিলের ঝুমুর আর রিয়েল ঝুমুরের মধ্যে।পরদার ঝুমুর ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে গিয়েও যেমন হার মানে না, তেমনটাই রিয়েল ঝুমুর থুড়ি ঐন্দ্রিলা!

Advertisement

ঊর্মি নাথ

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৭ ০৮:২০
Share:

ঐন্দ্রিলা

বাংলা ধারাবাহিক ‘ঝুমুর’-এ আর দেখা যাচ্ছে না ছোট ঝুমুর ওরফে সম্ভাবীকে। কেন? ঝুমুরের জীবনে ১৪টা বসন্ত পার হয়ে গিয়েছে যে! এ বার বড় ঝুমুরের চরিত্রে ঐন্দ্রিলা শর্মা। কিন্তু কী অদ্ভুত মিল রিলের ঝুমুর আর রিয়েল ঝুমুরের মধ্যে। পরদার ঝুমুর ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে গিয়েও যেমন হার মানে না, তেমনটাই রিয়েল ঝুমুর থুড়ি ঐন্দ্রিলা!

Advertisement

মুর্শিদাবাদের মেয়ে ঐন্দ্রিলার ডেবিউ সিরিয়াল ‘ঝুমুর’। ছোট থেকেই তাঁর ইচ্ছে অভিনেত্রী হওয়ার। স্কুলের অনুষ্ঠানে নাটক, নাচ বা কোনও বিউটি কনটেস্টে বিজয়ী হয়ে তিনি তাঁর স্বপ্নপূরণের জন্য মনে মনে প্রস্তুত হচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ সে স্বপ্নের পথে নামল ধস। ক্লাস ইলেভনে পড়ার সময় ঐন্দ্রিলা ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ‘‘খবরটা জানার পর ধরেই নিয়েছিলাম, আমার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে,’’ বললেন ঐন্দ্রিলা। মেরুদণ্ডের নীচে ক্যানসার ধরা পড়তেই তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হল দিল্লির এইমস-এ। দেড় বছরে নিতে হয় মোট ১৬টি কেমো ও ৩২টি রেডিয়েশন! ‘‘আমার শারীরিক কষ্ট তো কারও সঙ্গে ভাগ করতে পারতাম না! সে যন্ত্রণার দিনগুলো কী যে কঠিন ছিল, তা কথায় বোঝানো মুশকিল। কিন্তু আমার বাবা-মা-দিদি সকলে মনোবল জুগিয়েছেন। বাবা ও দিদি ডাক্তার, মা নার্স। তাই ওঁদের কাছে আমার অবস্থাটা পরিষ্কার ছিল। তবে সবচেয়ে বেশি মানসিক জোর পেয়েছি মায়ের কাছ থেকে। জানেন, আমি খুব সাজগোজ করতে ভালবাসি। ঘরের বাইরে বেরোলেই সেজে বে‌রোতাম। লক্ষ করতাম, আমি অনেকেরই নজরে পড়ছি। ব্যাপারটা আমার বেশ ভাল লাগত। কেমো নেওয়ার পর চুল পড়তে শুরু করল। ত্বক নষ্ট হল। তখন বাইরে গেলে লোকে এমন ভাবে আমায় দেখত যে মনে হতো, আমি যেন অন্য গ্রহের প্রাণী,’’ ঐন্দ্রিলার গলা কিছুটা সিক্ত। এই অবস্থা থেকে গ্ল্যামার দুনিয়ায় কী ভাবে আসলেন? ‘‘টানা দেড় বছর চিকিৎসার পর সুস্থ হই। চিকিৎসার জন্য মোটা হয়ে গিয়েছিলাম। ডাক্তারের পরামর্শে ছ’মাসে ডায়েট ও এক্সারসাইজ করে প্রায় ১৩ কেজি ওজন কমিয়েছি। স্কুল শেষ করে কলকাতায় আসি কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়তে। সেই সময়ই একদিন টেকনিশিয়ান স্টুডিয়োয় যাই আর তার পরই...’’

ছোটবেলার স্বপ্নটা যে এই ভাবে সত্যি হবে, সেটা কল্পনাতীত ছিল ঐন্দ্রিলার কাছে। ‘ঝুমুর’-এ সুযোগ পাওয়াটা তাঁর কাছে উপহারের মতো। ‘‘ক্যানসার মুক্তির পর আমি কিছুতেই ভয় পাই না,’’ আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ঐন্দ্রিলা। ভবিষ্যতে তিনি সিনেমায় অভিনয় করতে চান। স্বপ্ন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করার। ‘‘আশা করি, এই ইচ্ছেটাও পূরণ হয়ে যাবে,’’ গলায় ভরপুর আত্মবিশ্বাস হার না মানা কন্যের।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন