‘ছোটবেলায় অভিনয়ের কথা শুনলেই রেগে যেতাম’

প্রথমে তিয়াশা ভেবেছিলেন যে, মেকআপ ছাড়া হয়তো তাঁকে কেউ চিনতে পারবে না।

Advertisement

নবনীতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০১
Share:

তিয়াশা

বিয়ের পরে সব মেয়ের জীবনই বদলে যায়। কিন্তু ঘরে-বাইরে দু’দিকেই পালটে গিয়েছে ‘কৃষ্ণকলি’ ধারাবাহিকের শ্যামা ওরফে তিয়াশা রায়ের জীবন। বনগাঁর মেয়ে তিয়াশা, শ্বশুরবাড়ি গোবরডাঙায়। তবে গোবরডাঙায় তার আগে থেকেই যাতায়াত ছিল, পড়াশোনার সূত্রে। পরে থিয়েটার করার সময়ে সুবানের (রায়) সঙ্গে আলাপ ও বিয়ে।

Advertisement

বিয়ের ছ’মাসের মধ্যেই ধারাবাহিকের অফার পান তিনি। আর সেই ধারাবাহিকের শ্যামা এখন সকলের ঘরের মেয়ে। বিয়ের পরপরই বহির্জগতে এতটা সময় দিতে হয়। বাড়িতে অসুবিধে হয়নি? ‘‘একেবারেই না। বরং উল্টোটা। আমার স্বামী রাজি ছিলেন না। কারণ তিনি চাননি, আমি এই লুকে কেরিয়ার শুরু করি। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির সকলে তখন উৎসাহ জোগান। ফলে স্বামীও আর আপত্তি করেননি।’’ তাই শত অসুবিধের মধ্যেও সময় বার করে শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে অবসর কাটান তিনি। আর নিজের জন্য? ‘‘অনেক সময়েই শুটিং থাকে না। তখন কাছেপিঠে ঘুরতে চলে যাই।’’

কিন্তু সেখানেও বিপদ। প্রথমে তিয়াশা ভেবেছিলেন যে, মেকআপ ছাড়া হয়তো তাঁকে কেউ চিনতে পারবে না। ‘‘যেহেতু ধারাবাহিকে মেকআপে টোন ডাউন করা থাকে, আমি ভেবেছিলাম কেউ চিনবে না।’’ কিন্তু এখন রাস্তায় বেরোলেই সকলে তাঁকে চিনতে পেরে চলে আসেন সেলফি তোলার জন্য। প্রথম প্রথম ব্যাপারটা বেশ উপভোগও করতেন তিনি। ‘‘কিন্তু এখন মনে হয়, এক দিন হয়তো একটু নিজের মতো সেজেগুজে বেরোনোর সুযোগ পাই, আর সেই দিনই সকলের সঙ্গে সেলফি তুলতে হয়! নিজের ফোনেই একটা সেলফি তোলা হয় না। তাই আমি আগে নিজের ফোনে একটা সেলফি তুলতে চাই।’’ প্রথম ধারাবাহিকেই তিনি এতটা জনপ্রিয়!

Advertisement

কলেজের এক বন্ধু নাকি আগেই বলেছিলেন, তিয়াশা সকলের আগে নাম করবেন। কিন্তু তিয়াশার গলায় অন্য সুর, ‘‘আমি অভিনয় করতেই চাইতাম না। কেউ যদি আমাকে অভিনয় করার কথা বলত, আমি ভীষণ রেগে যেতাম।’’ আর এখন সেটাই তাঁর পেশা। তবে জার্নালিজ়ম নিয়ে কোর্স এখনও শেষ হয়নি। কিন্তু গোবরডাঙা কলেজে রোজ ক্লাসও করা হয়ে উঠছে না। তাই পড়া বন্ধ রেখে অভিনয়ে মন দিতে চান তিনি।

‘কৃষ্ণকলি’তে অভিনয় করতে এসে এই জগৎ সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিই পাল্টে গিয়েছে। ধারাবাহিকের সকলেই তিয়াশার প্রিয়, ‘‘সকলে এত ভাল যে, এখানে সব সময়ে আনন্দ। হাজার কষ্ট থাকলেও এই সেটে কেউ মুখ গোমড়া করে থাকতে পারে না। সব সময়ে বত্রিশ পাটি বেরিয়ে আছে! আমরা বরং কথায় কথায় বলি যে, কারও যেন নজর না লেগে যায় আমাদের ইউনিটে।’’

পড়াশোনা, অভিনয়, স্বামী, সংসার সামলে নিজের পরিবারে দেওয়ার সময়টাই বরং তিয়াশার হাতে কম। তাঁর নিজের বাড়িতে আছেন মা ও ছোট ভাই। বাড়ি গেলে নিশ্চয়ই ভাইবোনে খুনসুটি চলে? ‘‘ভাই আমার চেয়ে অনেক ছোট। ক্লাস ফাইভে পড়ে। আর ও ভীষণ লজ্জা পায়। আমার বিয়ের পর থেকে আরও লজ্জা পাচ্ছে! শুধু আমায় নকল করে। মায়ের একটা শাড়ি নিয়ে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বাড়ির উঠোনে ফুল কুড়োয় আর বলে, ‘এই দ্যাখো আমি শ্যামা, ফুল কুড়োচ্ছি।’’ মা ও ভাইয়ের কথায় একরাশ আলো ছড়িয়ে পড়ল তিয়াশার চোখেমুখে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন