চান্দ্রেয়ী, কৌশিক, দেবলীনা।
সদ্য শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে অনীক দত্ত পরিচালিত ‘ভবিষ্যতের ভূত’। তার ঠিক একদিনের মধ্যে, অর্থাত্ শনিবারই পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সমস্ত সিনেমা হল থেকে সরিয়ে নেওয়া হল ছবিটি। এ দিন বিকেলে বিভিন্ন হলে যাঁরা সিনেমাটি দেখতে গিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশকেই বলা হয়েছে, ‘সিনেমা উঠে গিয়েছে’। আগে থেকে টিকিট কাটা থাকলে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন জায়গায়। আচমকা কেন বন্ধ করে দেওয়া হল এই সিনেমা? উত্তর নেই প্রায় কারও কাছেই। কিন্তু এ ঘটনা আলোড়ন তৈরি করেছে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে। কে কী বলছেন, দেখে নেওয়া যাক...
অনীক দত্ত: রিলিজের কয়েক দিন আগে প্রযোজকদের কাছে পুলিশ ছবিটি দেখতে চায়। কিন্তু প্রযোজকেরা জানিয়ে দেন, ছবিটি সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র নিয়ে এসেছে। ফলে ছবিতে এমন কিছু নেই যা থেকে সমস্যা হতে পারে। আমার মনে হয়, ছবিটির প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রযোজকেরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
কৌশিক সেন: আমি, রেশমি ঋদ্ধি, ৪টে ৫৫ আইনক্স সাউথ সিটিতে সিনেমাটা দেখতে যাব বলে চারটে টিকিট কেটেছিলাম। আমাদের আর এক বন্ধুরও যাওয়ার কথা ছিল। আমি আর রেশমি অভিনয়ও করেছি। সোয়া চারটেয় ফোন কের জানানো বল, আসবেন না ম্যাডাম। তুলে নেওয়ার নির্দেশ এসেছে। কেন কেউ বলতে পারছে না। গতকাল রিলিজ হওয়ার পর কেউ ভাল বলেছে, কেউ খারাপ। আমরা ভেবেছি এটাই তো হবে। সেন্সর হওয়া ছবি, দেখানো শুরু হয়েছে, হল কালেকশন শুরু হয়েছে। মানে, সেন্সর হওযা ছবি রিলিজ হওয়ার পর এটা কী করতে করতে পারে কেউ? কেউ কোনও কারণ দেখাতে পারছে না। বলছে হায়ার অথরিটি। পুরো ব্যাপারটা এড়িয়ে যাচ্ছে। স্পষ্ট কোনও উত্তর দিচ্ছে না। আমরা তো বলি টালিগঞ্জে প্রোডিউসার দরকার। এর থেকে অবৈজ্ঞানিক কিছু তো হতে পারে না। এটা তো বাংলা ছবির ক্ষেত্রে ভাল বিজ্ঞাপন নয়। এটা তো প্রোডিউসারের পক্ষে খুব খারাপ ঘটনা।
আরও পড়ুন, ‘ওপর মহলের নির্দেশে’ মুক্তির পরদিনই বন্ধ ‘ভবিষ্যতের ভূত’-এর প্রদর্শন
দেবলীনা দত্ত: আগে থেকে টিকিট কেটে যারা সিনেমা দেখতে গিয়েছে তাদের হল থেকে বলা হয়েছে ওপর মহলের নির্দেশে সিনেমা চলে গিয়েছে। কোট আনকোট। একটা শিল্পকে কেউ বের করে দিতে পারে না। সেন্সর বোর্ড পার করে এসেছে ছবিটা। ওপর মহলের সংজ্ঞাটা কী? আমাদের একটু কারণ দেখানো হোক। এটা কি মগের মুলুক নাকি?আমরা চুপ করে বসে থাকব না। কিছু একটা করব।
চান্দ্রেয়ী ঘোষ: আমি আজ দুপুর পর্যন্ত নিজে চেক করেছি, প্রায় সব জায়গায় হাউসফুল। বিকেলের পর থেকে নামিয়ে দেওয়া হল। বেশিরভাগ জায়গায় বলা হচ্ছে, টেকনিক্যাল ফল্ট। এ দিকে অন্য ছবি চলছে। রিডিকিউলাস...।
দেবোজ্যোতি মিশ্র: আমার কাছে অদ্ভুত লাগছে। সেন্সর হয়ে যাওয়া একটা ছবি, হলে এসে গিয়েছে, একটা দিন চলার পর দেখাবে না, কী ভাবে বলতে পারে? কী হবে আমরা এখনও জানি না। ব্যবস্থা করতে হবে প্রযোজককে। ওঁরা নিশ্চয়ই ব্যবস্থা করবেন। এখানে বার বার বলা হচ্ছে ‘হায়ার অথরিটি’। কিন্তু এই ‘হায়ার অথরিটি’ কে, সেটা কেউ বলতে পারছে না। আমি এত বছর কাজ করছি, এই প্রথম আমার কোনও ছবির ক্ষেত্রে এটা হল।
বাদশা মৈত্র: পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে এতটা ইম্যাচিওর যাঁরা ভাবছেন, একটা ছবি দেখে, পলিটিক্যাল স্যাটায়ার দেখে ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন খারাপ হবে, প্রবলেম ক্রিয়েট করবে— এতটা ইরেসপন্সিবল ভাবার কোনও কারণ নেই। যে ছবিটার সেন্সর সার্টিফিকেট আছে, যেটা মানুষ টিকিট কেটে দেখতে চাইছে সেটা হল কর্তৃপক্ষ দেখাতে কী ভাবে ডিনাই করে? কার ইন্সট্রাকশনে ডিনাই করছে, আমি সেটা জানতে চাই। কী স্বার্থে এটা বন্ধ করে দেওয়া হল সেটা জানতে চাই।
(হলিউড, বলিউড বা টলিউড - টিনসেল টাউনের টাটকা বাংলা খবর পড়তে চোখ রাখুন আমাদের বিনোদনের সব খবর বিভাগে।)