দুই বাংলা এক হয়ে গেল। এবং তা বাংলার বাইরে। সৌজন্যে সেলুলয়েড।
বাংলা ভাষার প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে শুক্রবার শাহি দিল্লিতে শুরু হল ‘পদ্মা-যমুনা বাংলা সিনে উৎসব’। ভারত ও বাংলাদেশের মোট ছ’টি সিনেমা এবং নবাগত বাঙালি পরিচালকদের স্বল্পদৈর্ঘ্যের পাঁচটা ছবি নিয়ে দিল্লির মুক্তধারা প্রাঙ্গণে চলছে এই উত্সব। আগামী রবিবার ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই উত্সব চলবে। এ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন অভিনেতা এবং সিনে উৎসব কমিটির চেয়ারম্যান প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়।
বাংলাদেশের পরিচালক অনন্ত হীরা নির্দেশিত ‘ও আমার দেশের মাটি’ ছবিটি এ দিন দুপুরে প্রদর্শিত হয়। আগামী কাল শনিবার দেখানো হবে বাংলাদেশের আর একটি সিনেমা সৈয়দ ওয়হিদুজ্জামান ডায়মন্ড নির্দেশিত ‘নাচোলের রাণী’। আয়োজক সংস্থা দিল্লি বেঙ্গল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তপন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সিনে উৎসবের জন্য বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নির্বাচনে সহায়তা করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। বাংলাদেশের বিশিষ্ট কয়েক জন মানুষও এ কাজে হাত বাড়িয়েছেন।’’
আরও পড়ুন: বদলে যাচ্ছে রেওয়াজ, কলকাতামুখো বলিউড
সিনে উৎসবে থাকছে গৌতম ঘোষের ‘শঙ্খচিল’, ‘মনের মানুষ’ কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘শব্দ’, দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের ‘নাটকের মতো’। প্রতিটি প্রদর্শনীর শেষে থাকব প্রশ্নোত্তর পর্ব। ‘শঙ্খচিল’-এর পর প্রসেনজিত্ এবং গৌতমবাবু দর্শকদের মুখোমুখি হবেন। উত্তর দেবেন দর্শকদের প্রশ্নের। সে রকম ভাবেই ‘মনের মানুষ’ সিনেমার শেষে গৌতম ঘোষ, ‘শব্দ’-এর শেষে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এবং ‘নাটকের মতো’র শেষে দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য উপস্থিত থাকবেন দেবেশ চট্টোপাধ্যায়।
শর্ট ফিল্মের শেষেও উপস্থিত থাকবেন ফিল্মের পরিচালকেরা এবং ফিল্ম সংক্রান্ত দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেবেন। বাংলা সিনেমার ৯৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে এ বার। তার উপর থাকছে ক্যুইজও। আয়োজকদের তরফে সৌরাংশু সিংহ বলেন, “সিনে উৎসব যাতে দর্শকদের কাছে এক স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে, সেই সেটাই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য।” জমজমাট এই সিনে উৎসবে ফিল্ম ছাড়াও থাকছে ফুড স্টল, হস্তশিল্পের প্রদর্শনী, শাড়ির স্টল ইত্যাদি। এ ছাড়াও বাংলা চলচ্চিত্রের ৯৫ বছরের যাত্রায় ভারত ও বাংলাদেশের যে শিল্পীরা তাঁদের অসামান্য অবদান রেখেছেন তাঁদের স্মরণ করে একটি প্রদর্শনীরও আয়োজন করা হয়েছে।
উৎসব কমিটির সম্পাদিকা সুমনা কাঞ্জিলাল বলেন, “ছোট বড় সবাই মিলে যাতে উপভোগ করতে পারেন এবং এক অনন্য অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরতে পারেন, সেটা মাথায় রেখেই ফিল্ম নির্বাচন ও পুরো উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। যেমন, তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী ইরা মিত্রের জীবন-কাহিনি অবলম্বনে বাংলাদেশের ছায়াছবি ‘নাচোলের রাণী’ এক দিকে যেমন দেশভক্তির উদাহরণ হবে, অপর দিকে ইতিহাসের ভুলে যাওয়া চরিত্রও ফিরে আসবে দর্শকদের মনে।”