দ্বিজেনের প্রস্থান, মঞ্চ অন্ধকার

আবার ‘যখের ধন’, ‘চুনী-পান্না’য় টিভি-দর্শকদের কাছের মানুষ হয়ে ওঠেন দ্বিজেনবাবু। কিছু দিন আগে তরুণ মজুমদারের ‘ভালবাসার বাড়ি’-তেও অভিনয় করেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:০৫
Share:

দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায়

মঞ্চ থেকে টিভি ধারাবাহিক এবং সিনেমার দর্শকদের মজিয়ে রাখতেন অনায়াসে। পরিচালক হিসেবেও পরপর স্মরণীয় নাটক উপহার দিয়েছেন তিনি। সেই নাট্যকর্মী দ্বিজেন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রয়াত হলেন মঙ্গলবার গভীর রাতে। বয়স হয়েছিল ৬৬।

Advertisement

গত বছরের গোড়ায় গিরিশ মঞ্চে ‘ভূতনাথ’ নাটক চলাকালীন হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হন দ্বিজেনবাবু। তার পরে আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সেই অবস্থাতেই নিজের দল সংস্তব-এর মহড়ায় থাকার চেষ্টা করতেন। ষষ্ঠীর রাতশেষে তাঁর জীবনে যবনিকা টেনে দিল হৃদ্‌রোগই। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী এ দিন তাঁর চোখ দান করা হয়। তবে কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি থাকায় দেহদানের ইচ্ছা পূরণ হয়নি। দুপুরে কেওড়াতলায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। নাট্যকর্মী স্ত্রী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মেয়ে কঙ্কাবতীকে রেখে গিয়েছেন তিনি।

পাইকপাড়ার চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দ্বিজেনবাবুর নাট্যজীবনের শুরু সুব্রত নন্দী, নীলকণ্ঠ সেনগুপ্তদের সান্নিধ্যে। প্রেমচন্দের ‘কাফন’ অবলম্বনে ‘দানসাগর’-এর পরে ফিরে তাকাতে হয়নি। দেবাশিস মজুমদারের সঙ্গে শূদ্রক দল গড়ে ‘সমাবর্তন’, ‘অমিতাক্ষর’ নাটকেও বিদগ্ধজনের চোখ টানেন দ্বিজেনবাবু। সত্তরের দশকে জার্মান পরিচালক ফ্রিত্জ বেনেউইত্জ-এর পরিচালনায় শম্ভু মিত্র-সহ তাবড় দিকপালদের সঙ্গে অভিনয় করেন তিনি। ’৮২ সাল নাগাদ সংস্তব নাট্যদল গড়ে শুরু হয় নতুন ইনিংস। অসম্ভব সফল ‘মুষ্ঠিযোগ’ ছাড়াও ‘সুন্দর’, ‘গুণধরের অসুখ’, ‘এই ঘুম’, ‘মনশ্চক্ষু’, ‘স্পর্ধাবর্ণ’ প্রভৃতি নাটকে স্বাক্ষর রেখে গিয়েছেন দ্বিজেনবাবু। অসিত মুখোপাধ্যায়ের ‘নীলাম নীলাম’ ও ‘ভম্মা’, বিভাস চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘বলিদান’, ‘গাজীসাহেবের কিসসা’-তেও তাঁর অনবদ্য অভিনয় স্মরণীয় হয়ে আছে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও ‘প্রাণতপস্যা’, ‘কুরবানি’র মতো নাটকে অভিনয় করেন দ্বিজেনবাবু। শেষ নাটক কাফকার ‘ট্রায়াল’ অবলম্বনে ‘আইনসিদ্ধ’।

Advertisement

আবার ‘যখের ধন’, ‘চুনী-পান্না’য় টিভি-দর্শকদের কাছের মানুষ হয়ে ওঠেন দ্বিজেনবাবু। কিছু দিন আগে তরুণ মজুমদারের ‘ভালবাসার বাড়ি’-তেও অভিনয় করেন তিনি।

‘‘স্বাভাবিক অভিনয়ের শৈলীতেও চরিত্রের ভিতরে ঢুকে আলাদা মাত্রা জুড়তেন দ্বিজেন। ‘এই ঘুম’ দেখতে দেখতে এক বার সৌমিত্রদা আর আমি দু’জনেই অভিভূত হয়ে পড়ি,’’ মূল্যায়ন বিভাস চক্রবর্তীর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন