সেটে শ্রুতি দাস, ইন্দ্রজিৎ বোস, তিয়াসা লেপ্চা! ক্যামেরা কিন্তু বন্ধ নেই টেলিপাড়ায়। ফাইল চিত্র।
রাতভর বৃষ্টি। শহর জলে থইথই। ‘রেনি ডে’ হওয়ার উপযুক্ত দিন। কিন্তু হল কই? দুর্যোগ উপেক্ষা করেই টালিগঞ্জ সচল। অভিনেতা, পরিচালকদের সঙ্গে কথা বলে আনন্দবাজার ডট কম জানতে পেরেছে, স্টুডিয়োপাড়ায় ক্যামেরা চলছে।
অঝোরে বৃষ্টি, জলমগ্ন শহর— জনজীবন একপ্রকার স্তব্ধ। কিন্তু পুজোর আগে পর্ব তুলে রাখার বাড়তি চাপ থাকে ধারাবাহিক নির্মাতাদের। ফলে, এমন দিন মাঠে মারা গিয়েছে ‘পরশুরাম’ ইন্দ্রজিৎ বোস, ‘জোয়ার ভাঁটা’-র শ্রুতি দাস, আরাত্রিকা মাইতি, ‘গৃহপ্রবেশ’-এর পরিচালক অমিত দাস, ‘জগদ্ধাত্রী’-র ‘সয়ম্ভু’ সৌম্যদীপ মুখোপাধ্যায়, ‘অনুরাগের ছোঁয়া’র রাহুল মজুমদার, তিয়াসা লেপচার। এঁদের মতোই বাকিরাও জলের সঙ্গে যুদ্ধ করে স্টুডিয়োমুখী। কেউ কেউ মাঝপথে আটকে।
পরিস্থিতি যা-ই হোক, শুটিং বন্ধ নেই — প্রত্যেকের মুখে একই কথা। ইন্দ্রজিৎ যেমন আজ বাইকারোহী। অভিনেতা বললেন, “গাড়ি বার করতে ভরসা পাইনি। এ ভাবেই পৌঁছেছি। বাকিরাও এক এক করে আসছেন।” একই কথা বলেছেন রাহুলও। তাঁর দাবি, “টেকনিশিয়ানদের খুবই সমস্যায় পড়তে হয়েছে। মাঝরাস্তায় একজন টেকশিয়ানকে দেখতে পেয়ে গাড়িতে তুলে নিয়েছি।” একই কথা ধারাবাহিক ‘গৃহপ্রবেশ’-এর পরিচালক অমিতেরও। “আমি শেখ কলোনিতে থাকি। আমার এলাকা বানভাসি। কিন্তু শুটিং করব। টেকনিশিয়ানরা খুব কষ্ট করে এসে পৌঁছেছেন।”
শ্রুতি জানিয়েছেন, এক কোমর জল, গাড়ি প্রায় ডুবতে বসেছে। শুটিংয়ে যেতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেয়েছেন তিনি। সকাল আটটায় স্টুডিয়োয় যেতে হবে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে চোখ কপালে আরাত্রিকার। তাঁর কথায়, “ঝাড়গ্রামের মেয়ে। পাথর বিছানো রাস্তায় কাদা হতে দেখেছি। কোনও দিন রাস্তা ডুবে যেতে দেখিনি। কলকাতার অবস্থা দেখে খুব অবাক আমি।” তিনিও বহু কষ্টে জল ভেঙে সেটে পা রেখেছেন।
এমন দিনে দুপুরের মেনুতে কি খিচুড়ি, বেগুনি, ইলিশ মাছ? আজ ‘রেনি ডে’ হলে কেমন হত?
প্রশ্ন শুনে বড় শ্বাস ফেলেছেন সকলেই। তিয়াসা বলেছেন, “আমাদের কোনও ‘রেনি ডে’ নেই। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই শুটিংয়ে এসেছি৷” একই কথা ইন্দ্রজিতের। এমনিতে তিনি খুবই রোমান্টিক মনের। বৃষ্টি ভালবাসেন। কিন্তু পেশাজীবন তো সে সব মানে না। ফলে, এ ক্ষেত্রে তিনি ছোটপর্দার ‘পরশুরাম’-এর মতোই কঠিন। পুজোয় ছুটি পাবেন। এখন তাই মন দিয়ে কাজ করতে চান। তার পরেই হেসে বললেন, “নিজেকে ধরে রাখতে মেপে খাই। তাই শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা, ডায়েটেই ভরসা। অন্যরা ভালবেসে লোভনীয় খাবার খেতেই পারেন। আমি এ সব থেকে দূরে।”