রবিবার ‘স্টার ওয়ার্স: দ্য লাস্ট জেডাই’ ছবির টিজার রিলিজের সঙ্গে-সঙ্গে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। ছবি রিলিজের কাউন্টডাউনে ঢাকে কাঠি। ফ্যানদের অপেক্ষা, কবে আসবে বড়দিন? কারণ, এই ক্রিসমাসেই যে রিলিজ করবে নতুন ছবি।
তবে প্রায় সব ক্রিসমাসেই একই অবস্থা হয়। ‘স্টার ওয়ার্স’-এর নতুন ছবির অপেক্ষায় থাকে ফ্যানরা। ফ্র্যাঞ্চাইজির মাদকতা এমনই। বক্স অফিসে ছাপ পড়তেও সময় লাগে না। এত দিনে মোট কালেকশন প্রায় ৬৩৫ কোটি ডলার (টাকায় হিসেব করতে যাবেন না)! জেমস বন্ড বা হ্যারি পটারের মতো দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি মেলালেও এত বক্স অফিস কালেকশন হবে না। কিন্তু কেন এই উত্তেজনা? কেন এমন পাগলামি?
সময়ের চেয়ে এগিয়ে
প্রথম ‘স্টার ওয়ার্স’ ছবি আসে ১৯৭৭ সালে। সে সময় মহাকাশ সংক্রান্ত কল্পবিজ্ঞানের গল্প আটকে ছিল শুধু কমিক বইয়েই। ছবির পরিচালক এবং নির্মাতা জর্জ লুকাস সেই বাঁধাধরা ছকটাকেই ভেঙে দিলেন। সময়ের চেয়ে এগিয়ে থাকার যে ঝুঁকি নিয়েছিল লুকাসফিল্ম, দর্শক তার যোগ্য মর্যাদা দিয়েছিলেন। এক কোটি ডলারে বানানো ছবি বক্স অফিসে ব্যবসা করে প্রায় ৭৮ কোটি ়ডলার। অন্তত ব্যবসার জন্য আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে।
সহজ সরল গল্প
‘স্টার ওয়ার্স’ ছবির গল্পের বিষয় কিন্তু বেশ সহজ সরল। অনেকটা সেই ‘ডেভিড অ্যান্ড গলিয়াথ’য়ের গল্প। প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এক নামগোত্রহীনের সংগ্রাম এবং তাতে তাঁর জয়লাভ। হিরোধর্মী কাহিনিতে যে সব জিনিসগুলো দরকার, তার সবই ঠাসা ‘স্টার ওয়ার্স’-এ। প্রেম আছে। বিচ্ছেদ আছে। আর শেষে আছে হিরোর জিতে যাওয়া। স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েদের এমন ছবির প্রেমে পড়তে দেরি হয় না।
বিশাল বড় জগৎ
কল্পবিজ্ঞানের হলেও গল্পকে খুব সুন্দর করে সাজিয়েছিলেন জর্জ লুকাস। গল্পে যে ভুলত্রুটি নেই, তেমনটা বলা যায় না। সে দিক থেকে অনেক সায়েন্স ফিকশন সিরিজ এগিয়ে থাকবে ‘স্টার ওয়ার্স’ থেকে। হাল আমলের ‘গ্র্যাভিটি’ বা ‘ইন্টারস্টেলার’ তো বটেই। কিন্তু যে বিশাল বড় জগৎ জুড়ে ‘স্টার ওয়ার্স’, সেটা পরের অনেক সিরিজকে নিঃসন্দেহে পথ দেখিয়েছে।
সিনেমাই শেষ নয়
শুরুতে যে এমন পরিকল্পনা ছিল, সেটা অবশ্যই নয়। কিন্তু ধীরে-ধীরে ‘স্টার ওয়ার্স’কে আর শুধু সিনেমায় থামিয়ে রাখেননি লুকাস। এমনকী, সাতটা সিনেমায় গ্যালাক্সির তো মাত্র ৩৫ বছরের ইতিহাসকেই দেখানো হয়েছে! তাই তো এর সঙ্গে আরও একাত্ম হতে পেরেছে ফ্যানেরা। এত উপন্যাস, কমিক বই, ভিডিয়ো গেম এমনকী ‘স্টার ওয়ার্স’ নিয়ে আলাদা উইকি তো সেই ভাল লাগা থেকেই।
সাত থেকে সত্তর
‘স্টার ওয়ার্স’ ছবিগুলোর আর একটা বিশেষত্ব হল, এ ফিল্ম দেখার কোনও বয়স হয় না। বয়সের বেড়াজালে আটকে থাকার ছবি এ নয়। বিভিন্ন ‘পয়েন্ট অব ভিউ’ থেকে দেখা যেতে পারে ‘স্টার ওয়ার্স’ ফ্র্যাঞ্চাইজির সব ছবিই। বরং বয়স বাড়ার সঙ্গে নতুন নতুন ‘লেয়ার’ আবিষ্কার করে দর্শক। দশ বছরের কেউ যদি রোবটের ঠাট্টায় নির্মল আনন্দ পায়, তবে চল্লিশ বছরের কারও ভাল লাগবে রাজনীতি আর সম্পর্কের টানাপড়েন।