আমিও তো সিঙ্গল ফাদার

বললেন ‘ফোর্স’ ছবির পরিচালক রাজা চন্দ। মুখোমুখি প্রিয়াঙ্কা দাশগুপ্ত।বাংলায় সিঙ্গল মাদারের কনসেপ্ট নিয়ে ছবি হয়েছে। কিন্তু সিঙ্গল ফাদারের জীবন সে ভাবে এক্সপ্লোর করা হয়নি। ‘ফোর্স’ দেখে যদি দর্শক বোঝেন যে সিঙ্গল ফাদাররাও কী ভাবে মা-বাবার রোলটা একই সঙ্গে পালন করতে পারে তা হলে বুঝব আমাদের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৪ ০১:০৬
Share:

প্রসেনজিত্‌ ও রাজা চন্দ।

আপনার কেরিয়ারের সব থেকে মূল্যবান ছবি নাকি ‘ফোর্স’! এটা কি শুধুমাত্র ছবির প্রচারের জন্য বলেছেন?

Advertisement

না, প্রত্যেকটা ছবি আমার সন্তানের মতো। তবে আমি যেহেতু সিঙ্গল ফাদার, তাই ‘ফোর্স’য়ের কনসেপ্টটা আমার কাছে খুব মূল্যবান। আইনত আমার স্ত্রী এবং আমার সেপারেশন না হলেও, আমি ছেলেকে নিয়ে একলাই থাকি। ভুল বোঝাবুঝি, বনিবনার অভাব থেকেই আমার স্ত্রীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তবে আমার ছেলে (রাজপুত্র) অটিস্টিক নয়। ছবিতে সিঙ্গল ফাদারের ভূমিকায় বুম্বাদা (প্রসেনজিত্‌ চট্টোপাধ্যায়) খুব মর্মস্পর্শী অভিনয় করেছে। দেখে আমার জীবনের সঙ্গে মেলাতে পেরেছি। বুম্বাদার কাছে আমি কৃতজ্ঞ যে এই রকম একটা বিষয় নিয়ে আমাকে ছবি পরিচালনা করতে বলেছিল।

Advertisement

বছরে তিনটে ছবি পরিচালনা করছেন। তার সঙ্গে বিজ্ঞাপন। সিঙ্গল ফাদার হয়ে ব্যক্তিগত ও পেশাদার জীবনকে সামলান কী ভাবে?

কাজ কাজের জায়গায়। তবে পারিবারিক জীবনটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের মধ্যে শ্যুটিং করলে আমার ছেলে আমার সঙ্গে যায়। বিদেশে শ্যুটিং করলে আমার অ্যাটেনডেন্টের কাছে ওকে রেখে যাই।

ছবিতে একটা জায়গায় প্রসেনজিতের ছেলে জাদুঘরে গিয়ে হারিয়ে যায়। এই রকম আপনার ক্ষেত্রে হয়েছে?

একবার মিঠুনদার সঙ্গে শ্যুটিং করছি। হঠাত্‌ খবর পাই ওকে পাওয়া যাচ্ছে না। মিঠুনদা বললেন, যতক্ষণ না ওকে পাওয়া যাচ্ছে শ্যুটিং বন্ধ রাখা হবে। শেষে ওকে রাজারহাটে পাওয়া গেল। সাইকেল নিয়ে চলে গিয়েছিল। এখন আর ও সব করে না। অসুবিধা হয় যখন ওর শরীর খারাপ করে।

বাংলায় সিঙ্গল মাদারের কনসেপ্ট নিয়ে ছবি হয়েছে। কিন্তু সিঙ্গল ফাদারের জীবন সে ভাবে এক্সপ্লোর করা হয়নি। ‘ফোর্স’ দেখে যদি দর্শক বোঝেন যে সিঙ্গল ফাদাররাও কী ভাবে মা-বাবার রোলটা একই সঙ্গে পালন করতে পারে তা হলে বুঝব আমাদের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে।

প্রসেনজিত্‌, দেব, জিত্‌, মিঠুনের সঙ্গে আপনার কাজ করা হয়ে গেল। তা-ও কেন মূলধারার ছবির ক্ষেত্রে আপনার প্রচারটা রাজ চক্রবর্তীর মতো হল না?

আমি প্রচার করতে পারি না। প্রথম ছবি করেই রাজ হিট পরিচালক। মূলধারার ছবিতে রাজের অবদান দুর্দান্ত। ও নতুনদের নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। নিজের ওপর এত আস্থা যে ও ‘সেফ’ খেলে না।

কখনও কি হীনমন্যতায় ভোগেন?

না। ঈর্ষা হয়। এত অল্প বয়সে রাজ নিজের জন্য এত সুন্দর একটা জায়গা তৈরি করে ফেলেছে...

এত নায়িকাদের সঙ্গে রাজকে লিঙ্ক করা হয়। আপনি সে দিক থেকেও পিছিয়ে পড়েছেন...

সেটে আমার প্রেম আসে না। গুজব কী করে ছড়াবে তা হলে?

ছিদ্রান্বেষীরা বলেন সেটে আপনার প্রেম করার সময় নেই। কারণ ডিভিডি চালিয়ে অনুপ্রেরণা নিয়ে ছবি করতেই আপনি ব্যস্ত থাকেন!

চ্যালেঞ্জ করছি আমার আর্টিস্টদের প্রশ্ন করুন যে আমি শট ধরে ধরে রিমেক করি কি না। যদি আইপ্যাড চালিয়ে ‘চ্যালেঞ্জ ২’, ‘রংবাজ’, ‘বচ্চন’ ছবির ১৫০টি শটের দৃশ্যকে হুবহু রিমেক করতাম, তা হলে প্রত্যেকটা ছবি শেষ করতে ৮০ দিন লাগত। আমি ৩০/৪০ দিনে ছবি শেষ করি। কারণ গল্প ধার নিই। দৃশ্য টুকি না। তা ছাড়া বিজ্ঞাপনের কাজ করি। কনসেপ্ট, স্টোরিবোর্ড, জিঙ্গল, মিউজিক সব আমার করা। বাংলাদেশের বিজ্ঞাপন করেছি। এমনকী আফগানিস্তানের বিজ্ঞাপন করেছি। শ্যাম্পুর বিজ্ঞাপনে ওখানে মডেলকে তোয়ালে দিয়ে গলা অবধি মুড়ে স্নানের দৃশ্য শ্যুট করেছিলাম। করিশ্মা কপূরকে নিয়ে বাংলা বিজ্ঞাপন করেছি। এগুলো কি দক্ষিণী বিজ্ঞাপনের রিমেক? বলিউডে রোহিত শেট্টি রিমেক করলে ওকে মাথায় তুলে নাচা হয়। কিন্তু এখানে মূলধারার বাণিজ্যিক পরিচালককে হেয় করাটাই ট্রেন্ড।

‘ফোর্স’য়ের প্রসেনজিতের মতো আপনার জীবনেও কি কোনও অর্পিতার মতো চরিত্র আছে?

আছে। তবে ও ইন্ডাস্ট্রির নয়। বিয়ে না করে এ ভাবেই আমরা বেশ ভাল আছি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন