শনিবার রাত সাড়ে আটটা। ওবেরয় গ্র্যান্ডে প্রেস কনফারেন্সে অমিতাভ বচ্চন যখন ডুব দিচ্ছেন তরুণ বয়সের কলকাতার স্মৃতিতে, দেড় কিলোমিটার দূরের অ্যালেন পার্কে তখন বর্ষবরণের প্রস্তুতি। তবে ‘টিন্ডার’ অ্যাপে নতুন বান্ধবী, ‘বুকমাইশো’য়ে পার্টির পাসের মতো কলকাতাও জাপটে ধরেছে নতুন পৃথিবীকে। নিউ ইয়ার্স ইভে আজ শুধু পার্ক স্ট্রিট মুখো হতে হবে না।
সকালে পেইন্টবল
যারা বলে কলকাতায় ‘ডেট’ মানে ভিক্টোরিয়া-এলিয়ট পার্ক নয়তো সিনেমা, তাদের ফোন পাল্টাতে বলতে পারেন। কিন্তু যদি ‘ডেট’ই না থাকে? মুষড়ে পড়ার দরকার নেই। স্মার্টফোেন ‘টিন্ডার’য়ের মতো কোনও অ্যাপস ইন্সটল করে নিন। কোনও না কোনও ‘সিঙ্গল, রেডি টু মিঙ্গল’ পেয়ে যাবেনই।
শুধু রাতের পার্টির জন্য বসে থাকবেন না! পেইন্টবল না খেলে থাকলে, সকালেই ঘুরে আসুন। বন্দুকে ভরা রঙের বল, অন্যের গায়ে সেটা ফাটিয়ে জিততে হবে। অনেকটা ছোটবেলার দোলের রং ভরা বেলুনের মতো। এ বছর থেকে শহরে চালু হয়েছে এমন কয়েকটা ক্লাব। ডায়মন্ড হারবারের এক্সট্রিম পেইন্টবল বা এলগিন রোডের ব্রেকআউট সকাল থেকেই খোলা। তবে একটা পরামর্শ: নিজে ভাল খেললেও মনে রাখবেন, জিত যেন বান্ধবীরই হয়। না হলে...
বিকেলে কায়াক
কলকাতায় এখন লাঞ্চ ‘কোথায় করবেন’য়ের বদলে ‘কী করবেন’ সেটাই দরকারি প্রশ্ন। থাই, মেক্সিকান না মেডিটেরেনিয়ান — ঠিক করুন কী খেতে মন চায়। ব্যস, জোমাটো-বার্প অ্যাপস দেখে ঢুকে পড়ুন রেস্তোরাঁয়। কোন ডিশটা চেখে না দেখলে বছর বৃথা, সেটা দেখে নিতেও ভুলবেন না! টেবিল বুকও সকাল সকাল করে নিন। তবে পেটে ছুঁচোয় ডন দিচ্ছে অথচ রেস্তোরাঁর সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে ভাল লাগলে অন্য কথা। বিল মেটাতে মেটাতেই ট্যাক্সি ডেকে নিন ওলা-উবেরে। গন্তব্য রাজারহাটের ইকো পার্ক। পার্কে ঘোরাঘুরি করতে হবে না। দু’নম্বর গেট দিয়ে চলে যান লেকের পাশের ‘কায়াকিং’য়ের জায়গায়। ক্লিয়ারট্রিপ-এর মতো অ্যাপসেই পেয়ে যাবেন কায়াকিংয়ের টিকিট। দু’জনে মিলে রঙিন কায়াকে ইকো পার্কের লেকে সানসেট... বান্ধবী ইমপ্রেস হবেই। আর সন্ধের স্ন্যাক্সের জন্য লেকের মাঝে ‘ক্যাফে একান্তে’ তো আছেই।
রাতে পার্টি
পার্টি তো হবেই। তবে কোথায়? ক্লাবে, নাকি কারও বাড়িতে?
ক্লাবে পার্টি করতে চাইলে আগে থেকে ‘পাস’ কেটে নেওয়াই ভাল। না হলে, ক্লাবে পৌঁছে দেখলেন ভিড়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হল রাস্তায়! বুকমাইশো অ্যাপসেই পেয়ে যাবেন পার্টির পাস। ক্লাবে বুথ থাকলে, ঢুকেই একটা দখল করে নিন। অন্তত একজন যেন সেখানে সব সময় বসে থাকে।
আর কারও বাড়িতে যদি পার্টির আমন্ত্রণ থাকে? গিফট নিয়ে যাওয়াই ভাল। বছরশেষের পার্টিতে একটা ওয়াইনের বোতলই যথেষ্ট। তবে বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে কয়েকটা হিট গানের একটা প্লে-লিস্ট নিজের ফোনে নিয়ে নিন। পার্টিতে বোরিং গান চললে, ব্লুটুথ দিয়ে নিজের ফোন থেকেই গান চালিয়ে দেবেন মিউজিক সিস্টেমে। তবে অবশ্যই হোস্টের অনুমতি নিয়ে।
আর একটা টিপস: ‘গেম অব থ্রোনস’য়ের একটা এপিসোডও না দেখা থাকলে, একটু গুগল করে নিন। অচেনা কারও সঙ্গে কথা শুরু করতে, এর থেকে ভাল ‘টপিক’ আর হয় না।
আর নাচতে না জানলে? কয়েকটা সহজ স্টেপ তুলে নিন ইউটিউব দেখে।