এটা ‘পিকু’র শ্যুটিং শিডিউলের চেয়েও বেশি! নভেম্বর থেকে টানা দু’মাস কলকাতায় শ্যুটিং করবেন অমিতাভ বচ্চন!
এতটা টানা সময় সেই ‘পিকু’র শ্যুটিংয়ের জন্যও তিনি এই শহরে কাটাননি। বৃদ্ধ ‘ভাস্কর ব্যানার্জি’ সে বার সাইকেল চালিয়ে ডালহৌসি পাক দিচ্ছিলেন। এ বারে তাঁর চরিত্র ধর্মান্তরিত এক বাঙালি ক্রিশ্চানের। ছবির মেজাজও ‘পিকু’র চেয়ে আলাদা। এটা আগাপাস্তলা থ্রিলার। কলকাতা ভিত্তি করেই তৈরি। সুতরাং বছরের শেষ দু’মাস এই শহরের অলিতে গলিতে অমিতাভকে দেখা গেলেও আশ্চর্য হবার নেই।
ছবির নাম ‘তিন’। তরুণ পরিচালকের নাম ঋভু দাশগুপ্ত। ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসরের নামে আরও চমক — তিনি সুজয় ঘোষ।
বিদ্যা বালন
সেই ‘কহানি’র পর পূর্ণদৈর্ঘ্য ছবি বানাননি সুজয়। চার বছর ধরে তাঁর মতো পরিচালক ফিচার ফিল্মের জন্য ক্যামেরায় লুক থ্রু করেননি, এটা যেমন আশ্চর্য। তার চেয়েও ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে বিস্ময়কর ছিল সুজয় আর বিদ্যা বালনের এত দিনের বন্ধুত্ব ভেঙে যাওয়া।
ফ্লপ ছবিকে কেন্দ্র করে বন্ধুত্বে অশান্তি আর বিরোধ হতে পারে। কিন্তু সাড়া জাগানো সুপারহিট ছবির পর এমন কথা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাখ্যা কী?
কেউ কোনও উত্তর খুঁজে পাননি যেহেতু নববিবাহিতা বিদ্যা পরিষ্কার করে কোনও দিন কিছু বলেননি। সুজয়ও ছিলেন তীব্র অভিমানাক্রান্ত। ‘কহানি’র সিক্যুয়েল হওয়ার কথা ছিল ‘কহানি টু’। সেটা লিখতে শুরু করে মাঝপথে থামিয়ে দেন সুজয়। বিদ্যাকে প্রধান চরিত্রে রেখে ‘দুর্গা’ ছবিটা করার বহু বছরের পরিকল্পনা ছিল সুজয়ের। বিদ্যা জানিয়ে দেন সেটা তিনি করবেন না। স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে সরে যান। সুজয় যা শুনে স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলেন। কারণ বিদ্যার সঙ্গে কথা বলে তবেই তিনি ছবির কাজে এগিয়েছিলেন।
তার পর দু’পক্ষে বাক্যালাপ বন্ধ ছিল। কেন কথা বলেন না জিজ্ঞেস করায়, সুজয় অদ্ভুত উত্তর দিয়েছিলেন আনন্দplus-কে। বলেছিলেন, ‘‘মুম্বই এমন আজব শহর যে সেখানে রাস্তার সঙ্গে দেখা বা প্রেম মানুষের চেয়ে বেশি হয়।’’
বন্ধুদের মধ্যে আচমকা এই মানসিক সংঘাতের খবর প্রথম বার হয়েছিল আনন্দplus উদ্বোধনী ডিজিটাল সংখ্যায়। সেখানে আশা প্রকাশ করা হয়েছিল কোনও না কোনও ভাবে অচিরেই যেন মিটে যায় এই দূরত্ব।
আপাতত জানা যাচ্ছে, ‘তিন’ ছবিকে কেন্দ্র করে আবার তাঁদের বন্ধুত্ব জীবিত। অমিতাভের সঙ্গে ছবিতে একটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে কাজ করার জন্য বিদ্যাকে ফোন করেছিলেন সুজয়। তিনি এককথায় রাজি। মন কষাকষির বরফ তখনই গলে জল। বিদ্যার নাম ক্রেডিট রোলে স্পেশাল অ্যাপিয়ারেন্স হিসেবে গেলেও। দিন কুড়ি তাঁকেও কলকাতায় থেকে শ্যুট করতে হবে। একটা চরিত্রে নওয়াজউদ্দিন সিদ্দিকিও আছেন। সুজয় যদিও ‘কহানি’র সঙ্গে তুলনা চান না। সেটা অনিবার্য ভাবে এসেই যায়। সেই নওয়াজ। সেই ‘ভিদ্দা বাগচি’। সেই সুজয়। তফাতের মধ্যে সে বার বিদ্যাকে নওয়াজের পুলিশের সাহায্য নিতে হয়েছিল।
এ বার বিদ্যা নিজেই কলকাতা পুলিশের সাবইন্সপেক্টর।
একেই বলে মধুরেন সমাপয়েৎ। সুজয় হাসিমুখে আনন্দplus-কে বললেন, ‘‘আপনাদের মনস্কামনা পূর্ণ।’’