ছবি : সংগৃহীত।
বেশির ভাগ মানুষ এটা এক রকম মেনেই নেন যে, বয়স বাড়লে রোগের ঝুঁকিও বাড়বে। ভাল থাকতে হলে, অতি সাবধানে থাকতে হবে। রুটিন মেনে চলতে হবে। তার পরেও যে রোগকে পুরোপুরি ফাঁকি দেওয়া যাবে, তা নয়। হঠাৎ হয়তো একদিন দেখা যাবে সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করেও একটি মানুষ কোনও জটিল অসুস্থতার কবলে পড়লেন! এমনটা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা বলছে এমন হওয়ার আশঙ্কা কমানো যেতে পারে।
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে প্রায় এক লক্ষ মানুষের উপর নজর রেখে তারা দেখেছে, একটি বিশেষ ডায়েট মেনে চললে ৭০ বছর বয়সেও ধারেকাছে ঘেঁষতে পারবে না জটিল রোগ ব্যাধি।
ডায়েটের নাম এএইচইআই। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এএইচইআই ডায়েট যাঁরা মেনে চলেছেন, তাঁদের মধ্যে ৮৬ শতাংশ মানুষ ৭০ বছর বয়সেও কোনও জটিল দুরারোগ্য ব্যাধির শিকার হননি। এমনকি, বার্ধক্যের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস এবং ক্যানসারের মতো অসুখও হয়নি এঁদের। অথচ যাঁরা ওই ডায়েট মানেননি তাঁদের মধ্যে রোগাক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা গিয়েছে।
কী আছে ওই এএইচইআই ডায়েটে?
এএইচইআই কথাটি এসেছে অল্টারনেটিভ হেলদি ইটিং ইনডেক্স থেকে। এটি এক বিশেষ ধরনের খাদ্যতালিকা। হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেল্থের পুষ্টি বিশেষজ্ঞেরা দীর্ঘ দিনের বৈজ্ঞানিক তথ্যের ভিত্তিতে ক্রনিক বা দুরারোগ্য রোগ প্রতিরোধের জন্য তৈরি করেছিলেন এই ডায়েট।
এই ডায়েটের মূল বিষয় চারটি—
১। উদ্ভিজ্জ খাবার
শাকসব্জি, ফলমূল, দানাশস্য, বাদাম এবং ডালজাতীয় খাবার বেশি মাত্রায় খেতে বলা হয়েছে।
২। স্বাস্থ্যকর ফ্যাট
নিয়মিত খাবারের থালায় রাখতে বলা হয়েছে কিছু স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। যেমন, অলিভ অয়েল, ঘি, সর্ষের তেল, অ্যাভোকাডো, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম, বীজে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট।
৩। সুষম প্রাণিজ খাবার
মাছ, ডিম এবং দইয়ের মতো দুগ্ধজাত খাবার পরিমিত হারে খাওয়া যেতে পারে।
৪। খাওয়া যাবে না
চিনিযুক্ত পানীয়, খাসির মাংস বা যে কোনও রেড মিট, প্রক্রিয়াজাত মাংস, যেমন সসেজ, বেকন, সালামি ইত্যাদি খাওয়া যাবে না। এ ছাড়া বেশি নোনতা খাবার, ট্রান্স ফ্যাট রয়েছে এমন খাবার, যেমন পাম অয়েল, বনস্পতি ঘি ইত্যাদিও কম খেতে বলা হয়েছে। খাবারের থালা থেকে বাদ দিতে বলা হয়েছে ময়দা, সুজি, সাদা ভাতও। বদলে আটা, ব্রাউন রাইস, ওট্স, জোয়ার বাজরা, রাগি ইত্যাদি খেতে বলা হয়েছে ওই বিশেষ খাদ্যতালিকায়।