Pneumonic Plague

প্লেগ কি ফিরে এল? অ্যারিজ়োনায় বিরল নিউমোনিক প্লেগে মৃত্যু, কতটা ভয়ঙ্কর এই রোগ?

আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিমের অ্যারিজ়োনায় ফের প্লেগের উৎপাত শুরু হয়েছে বলে খবর। সে দেশের ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) জানিয়েছে, বিরল নিউমোনিক প্লেগে মৃত্যু হয়েছে অ্যারিজ়োনার এক বাসিন্দার।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫ ১২:০৪
Share:

নিউমোনিক প্লেগে মৃত্যু, কী এই রোগ? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গোটা ইউরোপ এক সময়ে তছনছ করেছিল এক ভয়ঙ্কর মহামারি। ইতিহাসে তা প্রসিদ্ধ ‘ব্ল্যাক ডেথ’ নামে। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে সেই ক্ষত বহন করতে হয়েছিল। ইউরোপের মোট জনসংখ্যার ৩০-৬০ ভাগ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল সেই রোগে। ১৮৯৬ সালে প্লেগ আঘাত হেনেছিল ভারতেও। ছড়িয়েছিল পুণে, কলকাতা ও অবিভক্ত ভারতের করাচিতে। বিশ্ব-ইতিহাসে এমন বহু মহামারির লিখিত উল্লেখ মেলে, যেগুলি খুব দ্রুত কোনও জনগোষ্ঠী বা দেশ থেকে দেশান্তরে প্রবল আকার ধারণ করেছিল। প্লেগ মানেই তাই আতঙ্ক। আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিমের অ্যারিজ়োনায় ফের প্লেগের উৎপাত শুরু হয়েছে বলে খবর। সে দেশের ‘সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) জানিয়েছে, বিরল নিউমোনিক প্লেগে মৃত্যু হয়েছে অ্যারিজ়োনার এক বাসিন্দার। তবে কী ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছিল তাঁর এবং রোগটি ছড়িয়েছে কি না, সে নিয়ে বিশদ কিছু বলা হয়নি।

Advertisement

প্লেগ ব্যাক্টেরিয়াঘটিত রোগ। ইদুর বা মাছি বাহিত হয়ে ছড়ায়। প্লেগের অনেক ধরন আছে। বিউবনিক প্লেগের নামই বেশি পরিচিত। ইদুরের মলমূত্র, দেহাবশেষ থেকে ছড়ায় এই রোগ। আরও দু’রকম প্লেগ আছে— সেপ্টিসেমিক প্লেগ ও নিউমোনিক প্লেগ। সেপ্টেসেমিক প্লেগে গোটা শরীর সংক্রমিত হয়, আর নিউমোনিক প্লেগে ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটে। ‘ইয়ার্সিনিয়া পেস্টিস’ নামে একপ্রকার ব্যাক্টেরিয়া এই রোগটির জন্য দায়ী। সাধারণত মাছি বাহিত হয়ে ওই ব্যাক্টেরিয়া মানুষের শরীরে ঢোকে ও সরাসরি ফুসফুসে হামলা করে।

সিডিসি জানিয়েছে, মাছি বাহিত হয়েই রোগটি ছড়ায়। প্লেগ যত ধরনের আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে সংক্রামক ও ভয়াবহ এই নিউমোনিক প্লেগ। আক্রান্ত হওয়ার সাত দিনের মধ্যেই ফুসফুস ছারখার করে দিতে পারে রোগের জীবাণু। শুধু তা-ই নয়, আক্রান্তের থেকে চারপাশের মানুষজনের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। নিউমোনিক প্লেগে শ্বাসনালির পথই বন্ধ হয়ে যাবে, রোগীর ধূম জ্বর আসবে, মারাত্মক শ্বাসকষ্ট শুরু হবে, কাশি বা লালার সঙ্গে রক্ত বেরোতে পারে। এক সময়ে নিউমোনিক প্লেগের কোনও চিকিৎসা ছিল না, তবে এখন অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে এর নিরাময় সম্ভব। তবে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার আগেই চিহ্নিত করতে হবে। না হলে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেও মৃত্যু হতে পারে রোগীর।

Advertisement

১৯৭০ থেকে ২০২০ সাল অবধি পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম আমেরিকায় প্রায় ৪৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছে প্লেগে। মেক্সিকোতেও প্লেগ আক্রান্ত রোগীর খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। বেশির ভাগই ছিল বিউবনিক প্লেগ। ২০০৭ সালের পরে এই প্রথম নিউমোনিক প্লেগে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে অ্যারিজ়োনায়। রোগটি আক্রান্তের থেকে ছড়িয়ে পড়েছে কি না, সে নিয়ে খোঁজ চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement