Epilepsy Device

বিশ্বে প্রথম মৃগী আক্রান্ত কিশোরের মস্তিষ্কে বসল যন্ত্র! খিঁচুনি ৮০ ভাগ কমেছে বলে দাবি গবেষকদের

মৃগী নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ খেতে হয়। রোগের পরিস্থিতি বুঝে চিকিৎসা হয়। এই প্রথম বার এমন যন্ত্র তৈরি হয়েছে, যা মস্তিষ্কে বসিয়েই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৪ ১৭:২৪
Share:

কিশোরের মস্তিষ্কে বসানো হয়েছে যন্ত্র। ছবি: সংগৃহীত।

বিশ্বে প্রথম মৃগী রোগে আক্রান্ত এক কিশোরের মস্তিষ্কে যন্ত্র বসালেন ব্রিটেনের চিকিৎসকেরা। সমারসেটের বাসিন্দা ওরান নোলসন নামে ওই কিশোরের মাথায় যন্ত্রটি বসানো হয়েছে। এই যন্ত্রের নাম ‘নিউরোস্টিমুলেটর’। গবেষকেদের দাবি, এই যন্ত্র বসানোর পরেই ওরানের খিঁচুনি প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গিয়েছে। আগে খিঁচুনির সময়ে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হত ওরানের। কিন্তু যন্ত্র সে সব সমস্যা অনেকটাই দূর করেছে বলে দাবি।

Advertisement

মৃগী হল স্নায়ুঘটিত রোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জিনগত কারণে এই সমস্যা দেখা যায়। তবে মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত থেকেও মৃগী হতে দেখা গিয়েছে অনেকের। সদ্যোজাত থেকে শুরু করে বয়স্কদেরও এই রোগ হতে পারে। তবে কারণটা ভিন্ন। ওরানের যখন বয়স তিন বছর, তখন থেকেই তার মৃগী ধরা পড়ে। এমনটাই জানিয়েছেন তার মা জাস্টিন। তিনি বলেছেন, মারাত্মক রকমের খিঁচুনি হত ওরানের। খিঁচুনির সময়ে মাটিতে পড়ে যেত সে। দীর্ঘ সময় ধরে ছটফট করত। তার শ্বাসও বন্ধ হয়ে আসত। অনেক চিকিৎসা করিয়েও এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। কিন্তু যন্ত্র বসানোর পর থেকেই আশ্চর্য রকম বদল দেখা গিয়েছে। ওরানের বয়স এখন ১৩ বছর। যখন তখন আর খিঁচুনি হয় না ওরানের। তাই এখন সে নিশ্চিন্তে স্কুলে যেতে পারে, আবার একা সাইকেলও চালাতে পারে।

‘নিউরোস্টিমুলেটর’ নামে ওই যন্ত্রটি তৈরি করেছেন ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ লন্ডনের গবেষকেরা। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্টিন টিসডালও গবেষণার সঙ্গে জড়িত। তিনি জানিয়েছেন, মৃগীরোগে আক্রান্ত ২২ জনের মস্তিষ্কে ওই যন্ত্র বসানোর কাজ চলছে। তার মধ্যে ওরান এক জন। আট ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে কিশোরের মাথায় ওই যন্ত্র বসানো হয়েছে।

Advertisement

খুব ছোট্ট একটি যন্ত্র নিউরোস্টিমুলেটর। এমনটাই জানিয়েছেন অধ্যাপক টিসডাল। তাঁর কথায়, যন্ত্রের সঙ্গে দু’টি ইলেকট্রোড লাগানো আছে। যন্ত্রটি মস্তিষ্কের বসানোর পর ইলেকট্রোড দু’টি থেকে বৈদ্যুতিক সঙ্কেত ঢুকতে শুরু করবে। ফলে মস্তিষ্কের যে স্নায়ুগুলি অকেজো হয়ে গিয়েছিল, সেগুলি ধীরে ধীরে সক্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করবে। এই ভাবে রোগ নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হবে।

যন্ত্রটি এখনও গবেষণার পর্যায়ে আছে বলেই জানা গিয়েছে। এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চলছে। ব্রিটেনের গবেষকেরা জানিয়েছেন, মৃগী নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন রকম ওষুধ আছে। এই ওষুধ খেয়ে যেতে হয় রোগীকে। এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে সারা জীবন ওষুধ খেতে হচ্ছে, এমন উদাহরণও রয়েছে। কিন্তু এই যন্ত্র মস্তিষ্কে বসিয়ে দিলে তা সারা জীবনের জন্য রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে বলেই দাবি করেছেন তাঁরা। আগে পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হবে, মস্তিষ্কের কোন অংশের স্নায়ুর অস্থিরতার কারণে সমস্যা হচ্ছে। সেখানেই বসিয়ে দেওয়া হবে যন্ত্রটি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement