Cancer treatment

শেষ সময়ে বাইরে নয়, বাড়িতেই জরুরি পরিষেবা পাবেন ক্যানসার রোগী, উদ্যোগী শহরের হাসপাতাল

‘জাতীয় ক্যানসার সচেতনতা দিবস’-এর প্রাক্কালে মুকুন্দপুরের এক বেসরকারি হাসপাতাল ক্যানসার রোগীদের জন্য উপশম চিকিৎসা দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। বাড়িতেই মিলবে পরিষেবা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২২ ১৭:০৯
Share:

এই পরিষেবার আওতায় হাসপাতাল থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে কোনও ক্যানসার রোগীকে উপশম চিকিৎসা দিতে পাঠানো হবে বিশেষ দল। ছবি: শাটারস্টক।

জীবন অস্তগামী তাঁদের। টেনেটুনে বড়জোর আর দুই থেকে আট মাস। তার বেশি আশা দিচ্ছেন না চিকিৎসকেরা। ক্যানসার ছড়িয়ে পড়েছে শরীরের রন্ধ্রে-রন্ধ্রে। চিকিৎসা পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘টার্মিনাল কেস’। তাঁদেরই বাড়ি গিয়ে শুশ্রূষার আশ্বাস দিচ্ছে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতাল।

Advertisement

চিকিৎসকদের কথায়, কিছু কিছু ক্যানসার রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি রাখা অযৌক্তিক। তার চেয়ে দরকার বাড়িতেই পরিচর্যা। তাঁদের জন্যই সহযোগী চিকিৎসা, আর যত্নের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একেই বলা হয় ‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার’।

জাতীয় ক্যানসার সচেতনতা দিবসের প্রাক্কালে ৬ নভেম্বর, মুকুন্দপুরের এক বেসরকারি হাসপাতাল ক্যানসার রোগীদের জন্য প্যালিয়েটিভ কেয়ার বা উপশম চিকিৎসা একেবারে দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। শুধু এক দিনের জন্য নয়, হাসপাতাল কতৃপক্ষের তরফে সারা বছর ধরেই চালানো হবে এই পরিষেবা। এই পরিষেবার আওতায় হাসপাতাল থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে কোনও ক্যানসার রোগীকে উপশম চিকিৎসা দিতে পাঠানো হবে বিশেষ দল। তবে নিখরচায় নয়, খুব সামান্য পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে রোগীরা এই পরিষেবা পেতে পারেন। তবে রোগীর আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করার পর বিনামূল্যেও এই পরিষেবা দিতে পারেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর জন্য চালু করা হয়েছে বিশেষ হেল্পলাইন। প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যেতে পারে ৭৬০৩০৩৬৬২০ নম্বরে।

Advertisement

‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার’-এ রোগীদের নানা কষ্টকর শারীরিক সমস্যা লাঘব করা হয়। ছবি: শাটারস্টক

‘প্যালিয়েটিভ কেয়ার’-এ রোগীদের নানা কষ্টকর শারীরিক সমস্যা লাঘব করা হয়। এ অবস্থায় রোগীর যে সব শারীরিক সমস্যা বেশি যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে, সেগুলি হল, নিঃশ্বাসের কষ্ট, যন্ত্রণা, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য, ভয়ানক ক্লান্তি, ঘুম না হওয়া ইত্যাদি। এই সব কষ্ট কমানোর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের সঙ্গে সঙ্গে নিউট্রিশন থেরাপি, ফিজিক্যাল থেরাপি ও ডিপ ব্রিদিং টেকনিকের সাহায্যে রোগীকে খানিকটা স্বস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়াও ক্যানসার রোগীদের মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে নানাবিধ চেষ্টা করা হয়। মরণাপন্ন অবস্থায় অনেক রোগী ধর্মচর্চা করলেও অনেকে মানসিক শান্তি পান। অনেক সময়ে প্যালিয়েটিভ কেয়ারে সেই ব্যবস্থাও করা হয়।

ক্যানসারের অন্তিম অবস্থায় রোগীদের অনেকেই তাঁর এই কষ্টকর অসুখের জন্য ঈশ্বরের কাছে নালিশ করেন। ঈশ্বরের কাছে বার বার মৃত্যুর জন্যে আর্জি জানান। আবার কারও ক্যানসার অথবা জটিল অসুখের কথা শুনলে অনেকেই রোগীকে এড়িয়ে চলেন। প্যালিয়েটিভ কেয়ারের মাধ্যমে এই সব সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হয়। উপশম চিকিৎসার মূল উদ্দেশ্য হল, রোগী যে ক’দিন বাঁচবেন, যেন ভাল ভাবে থাকতে পারেন রোগী। মৃত্যুর জন্যে আক্ষেপ নয়, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ব্যথা-যন্ত্রণা সঙ্গে নিয়েও বেঁচে থাকাকে উপভোগ করতে সাহায্য করে প্যালিয়েটিভ কেয়ার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন