Dengue fever

৫ উপসর্গ: দেখে বোঝা যাবে ভাইরাল জ্বর না কি ডেঙ্গি, এড়াতে পারবেন কঠিন পরিস্থিতি

সাধারণ জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গির জ্বরের খুব তফাত নেই। মরসুম বদলের জ্বর না কি কোভিড না কি ডেঙ্গি বাসা বেঁধেছে শরীরে, তা বুঝে ওঠার আগেই অনেকটা দেরি হয়ে যাচ্ছে। কী ভাবে সাবধান হবেন?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২২ ১৮:৪৪
Share:

ভাইরাল জ্বরের ক্ষেত্রে সর্দি, গলাব্যথা, শরীরে হালকা ব্যথা, দুর্বলতার মতো উপসর্গ থাকতে পারে। ছবি: শাটারস্টক।

আপাত ভাবে দেখলে সাধারণ জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গির জ্বরের খুব বেশি তফাত নেই। মরসুম বদলের জ্বর না কি কোভিড না ডেঙ্গি বাসা বেঁধেছে শরীরে, তা বুঝে ওঠার আগেই তাই অনেকটা দেরি হয়ে যাচ্ছে। সাধারণ ভাইরাল জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গিকে গুলিয়ে ফেলে অবহেলা করে অনেক সময়ে রোগীর গুরুতর সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

Advertisement

ডেঙ্গি ও ভাইরাল জ্বরের কিছু ফারাক তো আছেই। একটু সচেতন হলেই দুই জ্বরকে আলাদা করা খুব কঠিন নয়। ডেঙ্গি হলে বিভিন্ন গাঁট-সহ শরীর জুড়ে খুব ব্যথা হয়। তাই আগে ডেঙ্গির প্রচলিত নাম ছিল হাড়ভাঙা জ্বর। সঙ্গে ত্বকের বিভিন্ন অংশ লাল হয়ে প্রদাহ হতে পারে।

ভাইরাল জ্বরের ক্ষেত্রে সর্দি, গলাব্যথা, শরীরে হালকা ব্যথা, দুর্বলতার মতো উপসর্গ থাকতে পারে। তবে ডেঙ্গি রোগীদের জ্বরের তীব্রতা অনেক বেশি হয়। জ্বর আসার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সারা গায়ে লাল লাল ফুসকুড়ি হতে থাকে। এর সঙ্গে গাঁটে গাঁটে যন্ত্রণাও শুরু হয়।

Advertisement

সাধারণ ভাইরাল জ্বরের সঙ্গে ডেঙ্গিকে গুলিয়ে ফেলে অবহেলা করে অনেক সময়ে রোগীর গুরুতর সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ছবি: শাটারস্টক

চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীর মতে, ডেঙ্গির জ্বরের প্রধান উপসর্গগুলি চোখে পড়লেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। জেনে নিন, কোন লক্ষণ দেখলেই সাবধান হতে হবে।

১) জ্বর, মাথাযন্ত্রণা, হাত-পায়ের সঙ্গে সারা শরীরে ব্যথা। চোখের পিছনে ব্যথা শুরু হয়।

২) বমি ভাব, অরুচি। গাঁটে ব্যথা।

৩) গায়ে র‌্যাশ, চুলকানি, ডায়েরিয়া।

৪) দাঁতের মাড়ি দিয়ে, নাক দিয়ে কিংবা মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়।

৫) গলাব্যথা, ঢোক গিলতে কষ্ট।

চিকিৎসকের বক্তব্য, ডেঙ্গির একটি মারাত্মক দিক হল, ‘ম্যাক্রোফেজ় অ্যাক্টিভেশন সিনড্রোম’। এতে যকৃতের উৎসেচক মারাত্মক পরিমাণে বেড়ে যায়। আবার এলডিএইচ, ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাও বেড়ে যায়। একই ভাবে রক্তে ফেরিটিনের মাত্রা বাড়াবাড়ি রকম বৃদ্ধি পায়। এর ফলে শরীরে ‘সাইটোকাইন ঝড়’ তৈরি হয়। চিকিৎসক বলেন, ‘‘এমন ক্ষেত্রে রোগীকে স্টেরয়েড দিতে হয়। সামগ্রিক ভাবে এই পরিস্থিতিতে রোগীর অস্থিমজ্জায় সমস্যা দেখা দেয়, যা অত্যন্ত ঝুঁকির। তাই প্লেটলেটের সংখ্যা ঠিক আছে মানেই যে ডেঙ্গি থেকে আপনি বিপন্মুক্ত, এমনটা কিন্তু নয়।’’

বাতাসে শিরশিরানি ভাব চলে এলেও রাজ্যে ডেঙ্গির সংক্রমণ কমার লক্ষণ নেই। যা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের। ২৪ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজারের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। তার মধ্যে শুধু উত্তর ২৪ পরগনাতেই আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৩০০ জন। এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ হাজারের কাছাকাছি চলে গিয়েছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। তাই এ সময়ে অনেক বেশি সতর্কতার প্রয়োজন। এই উপসর্গগুলি দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন