অ্যালকোহল মেশানো হাতশুদ্ধি কতটা ক্ষতিকর? ছবি: এআই।
হাত ধোয়ার স্যানিটাইজ়ারে ইথানল বেশি মাত্রায় থাকলেই বিপদ। ইথানল খুব বেশি পরিমাণে ত্বকের সংস্পর্শে এলে চর্মরোগের আশঙ্কা যেমন বাড়বে, তেমনই এই রাসায়নিক ক্যানসারের আশঙ্কাও বাড়িয়ে তুলবে বলে দাবি ইউরোপিয়ান কেমিক্যাল এজেন্সির। ইথানল বেশি পরিমাণে আছে এমন স্যানিটাইজ়ার নিয়ে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-ও।
কেন ক্ষতিকর ইথানল?
করোনা অতিমারির সময়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার বা হাতশুদ্ধির চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। হাত জীবাণুমুক্ত করতে প্রায় সকলেই সঙ্গে স্যানিটাইজ়ার রাখা শুরু করেছিলেন। সেই অভ্যাস এখনও রয়েছে। সাবান বা জলের চেয়ে অনেকে স্যানিটাইজ়ারের উপরেই ভরসা করেন বেশি। তবে এটা কি জানেন, এই ধরনের হাতশুদ্ধিতে কী কী রাসায়নিক থাকে?
হাতশুদ্ধি বানানো হয় সাধারণত তিন ধরনের রাসায়নিক দিয়ে। ইথাইল অ্যালকোহল বা ইথানল, অথবা আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল, যার আর এক নাম আইসোপ্রোপানল অথবা, বেঞ্জালকোনিয়াম ক্লোরাইড। তিনটি রাসায়নিকই জলে খুব তাড়াতাড়ি দ্রবীভূত হয়ে যায় বলে হাতশুদ্ধি বানানোর উপাদান হিসাবে এদের এত কদর। তবে ইদানীং বেঞ্জালকোনিয়াম ক্লোরাইডের বদলে ইথানলের প্রয়োগই বেশি হচ্ছে। হু জানাচ্ছে, ইথানল নানা কাজে ব্যবহার করা হয়। এই রাসায়নিক শিল্পকারখানাগুলি ব্যবহৃত হয়। আবার হাতশুদ্ধিতেও মেশানো হয়। কাজেই বোঝা যাচ্ছে, এই রাসায়নিক ত্বকের সংস্পর্শে বেশি এলে কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ক্লিনিকাল মাইক্রোবায়োলজি রিভিউজ়’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, কোনও মিশ্রণে যদি অন্তত ৩০ শতাংশ অ্যালকোহল থাকে, তা হলেই তা জীবাণুনাশক হয়ে উঠতে পারে। সেই মিশ্রণে অ্যালকোহলের ঘনত্ব যত বাড়ে, ততই সেই মিশ্রণটি জীবাণুনাশের ক্ষেত্রে আরও বেশি কার্যকর হয়ে ওঠে। মিশ্রণে যদি অ্যালকোহলের ঘনত্ব বেড়ে ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, তা হলে যেমন জীবাণু নাশ করতে পারে, তেমনই তা শরীরের জন্যও ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। ইথানল মানুষের শরীরে ঢুকলে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অ্যাসিটালডিহাইড তৈরি করতে পারে, যা ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই ইথানল মেশানো স্যানিটাইজ়ারের বদলে অ্যান্টিসেপ্টিক সাবান ও জল দিয়ে হাত ধোয়ারই পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকেরা।