শুধু দুধ না খেয়ে কয়েকটি মাখানা মিশিয়ে নিলে স্বাস্থ্যের কতটা উন্নতি হবে? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
মাখানা আগে বাঙালির খাবারের তালিকায় তেমন না থাকলেও, পুষ্টিগুণের বহর জানার পরে এখন অনেকেই তা পাতে রাখছেন। বিশেষত স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই সান্ধ্য স্ন্যাক হিসাবে মাখানা খান।
মাখানা হল পদ্মফুলের বীজ। ইংরেজিতে বলা হয় ‘ফক্স নাট’। পদ্মের বীজ সংগ্রহ করে ধুয়ে, প্রক্রিয়াকরণের পর, খোসা ছাড়িয়ে তা প্যাকেটজাত করে বিক্রি করা হয়।
মাখানায় রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন। ফ্যাটের পরিমাণ অত্যন্ত কম। কম সোডিয়ামের খাবার হিসাবেও মাখানা অত্যন্ত পুষ্টিকর। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ডি।
পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, ভিটামিন, খনিজ থাকায় মাখানা খুবই পুষ্টিকর। শরীর ভাল রাখার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধেও সাহায্য করে। এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্য ভাল। হার্টের রোগীরাও স্বচ্ছন্দে খেতে পারেন। দুধে ভিজিয়ে খেলে মাখানার গুণের পাশাপাশি দুধের পুষ্টিগুণও যুক্ত হবে এর সঙ্গে।’’
রোগ প্রতিরোধক
মাখানায় রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েডস, কেমফেরোলের মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে, রোগের মোকাবিলায় শরীরকে প্রস্তুত রাখতে সাহায্য করে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। মাখানা ঘিয়ে ভেজে না খেয়ে যদি গরম দুধে ফেলে খাওয়া যায়, শীতের দিনে শরীর যেমন আরাম পাবে তেমন ভাল থাকবে। দুধের গুণ কিছু কম নয়। ভিটামিন ডি, প্রোটিন এবং রকমারি খনিজ রয়েছে এতে। দুই খাবারের পুষ্টিগুণ জুড়বে এক খাবারে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
মাখানায় রয়েছে প্রচুর ফাইবার, যা হজমে সাহায্য করে। ওজন কমাতে গেলে ভাল মানের ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরাও। এ ছাড়া, এতে প্রোটিন, আয়রন, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম রয়েইছে। পাশাপাশি, দুধে মেলে ভিটামিন এ, ডি। মাখানায় ক্যালোরির পরিমাণ খুব বেশি নয়। ফলে দুধ এবং মাখানা খেলে তা ওজন বশে রাখতেও সাহায্য করবে। দুধ যে হেতু তরল, তাই শরীরে জলের অভাব কিছুটা হলেও পূরণ হবে।
চনমনে ভাব বজায় রাখে
মাখানায় রয়েছে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট এবং ফাইবার। ফলে মাখানা খেলে শরীরে ধীরে ধীরে শক্তি নির্গত হয়। এক ধাক্কায় রক্তে শর্করার মাত্রাও বেড়ে যায় না। তা ছাড়া গরম দুধ খেলে শীতের দিনে গা-গরম থাকে। একবার পানীয়টি খেলে অনেক ক্ষণ শরীরে কাজ করার উদ্যম থাকে।
হাড় মজবুত রাখে
দুধ এবং মাখানা— দুইয়ে মেলে পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম। দুধে থাকা ভিটামিন ডি হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। ফলে সকালের জলখাবারের তালিকায় দুধ, মাখানা রাখলে হাড়ের ক্ষয় রোধ করা সম্ভব হবে।
ত্বক ভাল রাখে
মাখানায় রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড। দুধ-মাখানায় ক্যালশিয়াম মেলে।এ ছাড়া পাওয়া যায় ম্যাগনেশিয়াম। ত্বক ভাল রাখার জন্য অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং খনিজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তা ছাড়া শীতের সময় জল খাওয়ার প্রবণতা কমে যাওয়ায় ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়। দুধ যে হেতু তরল খাবার, তাই কিছুটা হলেও জলের ঘাটতি এ ভাবে মিটতে পারে।