কোন চিজ় পেট ভাল রাখে? ছবি: সংগৃহীত।
স্যান্ডউইচ হোক বা পিৎজ়া— আসল কারিকুরি লুকিয়ে ওই চিজ়েই। মুখে দিলেই যে স্বাদ মোহিত করে দেয়। খুদেরা তো বটেই, এই স্বাদে মজেন বড়রাও। চিজ় প্রোটিনে ভরপুর। প্রচুর ক্যালশিয়ামও মেলে এতে। তবে চিজ় কি পেটের পক্ষেও ভাল?
এই প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন কলকাতার পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক। তিনি জানাচ্ছেন, সব ধরনের চিজ় না হলেও কয়েকটি ধরনের চিজ় অন্ত্রের পক্ষে উপকারী। কারণ, এই ধরনের চিজ় পেটের পক্ষে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি করে। পেটে যেমন ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া থাকে, তেমনই থাকে উপকারী ব্যাক্টেরিয়া, যা খাবার হজম করতে সাহায্য করে। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। কিছু কিছু চিজ় সেই ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যাই বাড়িয়ে দেয়।
কোন কোন চিজ় রয়েছে সেই তালিকায়?
পার্মেসন: ল্যাক্টোজ়ের মাত্রা এই ধরনের চিজ়ে বেশ কমে। তবে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার উৎস পার্মেসন। ইটালীয় এই চিজ় একটু শক্ত, তবে এর সুনাম গন্ধ এবং স্বাদের জন্য। নোনতা স্বাদের চিজ়টি পাস্তা, রিসোত্তো, স্যালাড, স্যুপে পাতলা স্লাইস করে দিয়ে বা গ্রেট করে খাওয়া যায়।
মোৎজ়ারেলা: এই চিজ়টি একটু নরম ধরনের, দ্রুত গলে যায় এবং আঠালো ভাব তৈরি করে। পিৎজ়ায় মূলত এই চিজ়টি ব্যবহার হয়। বার্গার, গার্লিক ব্রেড, স্যালাড— অনেক কিছুতেই এই চিজ়টি খাওয়া যায়। যত পুরনো হয়, মোৎজ়ারেলার পুষ্টিগুণ ততই বাড়ে। পেটের পক্ষেও তা ভাল। অন্ত্রে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
চ্যাডার: ল্যাক্টোজ়ের মাত্রা কম এবং এটিও পেটের পক্ষে ভাল। হালকা শক্ত এই চিজ় স্বাদের জন্য বিখ্যাত। স্যান্ডউইচ, টোস্টে এই চিজ় খাওয়া যায়।
হাউডা: যত পুরনো হয়, ততই এতে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে। স্যান্ডউইচ, পাউরুটির সঙ্গে হাউডা চিজ় ভাল লাগে। সুস্বাদু এই চিজ় অমলেট, সেদ্ধ করা সব্জি বা স্যুপের সঙ্গেও খেতে পারেন।
ফেটা: ভেড়া বা ছাগলের দুধ থেকে তৈর হয় ফেটা চিজ়। একটু নরম এই চিজ়ে প্রচুর প্রোবায়োটিক মেলে, যা অন্ত্রে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং পেট ভাল রাখে। এটি মূলত গ্রিসের ঐতিহ্যবাহী চিজ়। স্যালাডের সঙ্গেই খাওয়ার চল। অমলেট, পাস্তাতেও এটি খাওয়া যায়।
অনন্যা বলছেন, ‘‘কয়েকটি চিজ় যত পুরনো হয়, ততই তাতে প্রোবায়োটিক ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এতে পেটের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। তবে শুধু পেটের স্বাস্থ্য নয়, প্রোটিনে ভরপুর চিজ়ের অনেক উপকারিতা রয়েছে। ভিটামিন এবং খনিজে পূর্ণ চিজ়। দাঁত, হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। এতে মেলে ভিটামিন এ, বি১২, ফসফরাস, জ়িঙ্ক। উচ্চ মাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকা সত্ত্বেও চিজ় হার্টের পক্ষে ভাল। এতে মেলে কনজুগেটেড লিনোলেনিক অ্যাসিড, যা প্রদাহনাশক এবং হার্টের জন্য ভাল।
কতটা চিজ় খাওয়া যায়?
প্রসেসড বা প্রক্রিয়াজাত চিজ় এড়িয়ে যাওয়ার কথাই বলছেন পুষ্টিবিদ। মোৎজ়ারেলা, চেডার বেশ উপকারী। এক জন সুস্থ ব্যক্তি দিনে ২৫ গ্রামের মতো চিজ় খেতে পারেন।