কোন ধরনের মিষ্টি সবচেয়ে ক্ষতিকর, ভালই বা কোনটি? ছবি: সংগৃহীত।
স্বাস্থ্য বজায় রাখতে হলে বাদ দিন চিনি। এমনটাই বলছেন চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদেরা। তবে চিনি বাদ দেওয়া গেলেও, মিষ্টি ছাড়া যায় কি? সাদা চিনি যে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তৈরি হয়, তার পর তাতে ক্যালোরি ছাড়া আর কোনও পুষ্টিগুণই থাকে না। তবে শর্করা মাত্রই খারাপ নয়। বিভিন্ন ফলে থাকে প্রাকৃতিক মিষ্টত্ব। সেগুলি সাদা চিনির মতো ক্ষতিকর নয়।
বেঙ্গালুরুর পেটের চিকিৎসক অনুপমা এন কৃষ্ণন এক সাক্ষাৎকারে জানাচ্ছেন, মিষ্টি জাতীয় খাবারের বিচার হয় তা কী ভাবে এবং শরীরের উপর কতটা প্রভাব ফেলছে, তার উপর। কোনও মিষ্টি উপাদানই একেবারে ক্ষতিকর নয়, তেমনটা হতে পারে না। তবে ক্ষতির মাত্রা কম-বেশি হতে পারে। সে কারণেই যে কোনও মিষ্টি খাবার পরিমিত খাওয়াই ভাল।
চিকিৎসকের বিচারে কোন ধরনের মিষ্টি সবচেয়ে ক্ষতিকর, কোনটি ভাল?
সাদা চিনি: এটিকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর বলছেন চিকিৎসক। কারণ, এটি উচ্চমাত্রায় পরিশোধিত, পেটের জন্য ভাল ব্যাক্টেরিয়ার পক্ষেও ক্ষতিকর। এই ধরনের চিনি গ্যাস, অম্বলের সমস্যা বৃদ্ধি করে। নিয়মিত এবং বেশি পরিমাণে খেলে লিভারের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে।
ব্রাউন সুগার: সাদা চিনির চেয়ে একটু কম ক্ষতিকর। এতে খুব সামান্য হলেও খনিজ থাকে। তবে এই চিনিও গ্যাস-অম্বলের কারণ, পেটের পক্ষে ভাল নয়।
গুড়: অনেকে মনে করেন চিনির চেয়ে গুড় ভাল। চিকিৎসকের কথায়, এতে খুব সামান্য খনিজ মেলে। সাদা চিনির মতো উপকারী না হলেও, এতেও একই রকম ক্যালোরি মেলে। নিয়মিত খেলে গ্যাস-অম্বল হতে পারে।
মধু: স্বল্পমাত্রায় খাওয়া গেলে মধু ভাল। এতে অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান থাকে। তা ছাড়া এটি পেটের জন্যও ভাল। তবে মাত্রা নিয়ে সচেতন করছেন চিকিৎসক।
এরিথ্রিনল: এটি কৃত্রিম সুইটেনার হলেও, ফল এবং সব্জির প্রাকৃতিক মিষ্টত্ব থেকে তৈরি। চিনি, গুড়, মধুর তুলনায়, অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিকর এটি। এই উপাদান ক্ষুদ্রান্ত্রে শোষিত হয়, ফলে চট করে তা থেকে গ্যাস এবং অম্বল হয় না।
স্টিভিয়া: এটি একটি গাছের পাতা। এতে থাকা প্রাকৃতিক মিষ্টত্বই খাবারে মিষ্টি স্বাদ আনতে ব্যবহার হয়। স্টিভিয়া সাধারণত রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয় না। তবে বিভিন্ন সংস্থা, বিভিন্ন ভাবে তা ব্যবহার করে। অতিরিক্ত না খাওয়াই ভাল।
চিকিৎসকের কথায়, শুধু চিনির উপর সবটা নির্ভর করে না। দিনে কতটা ফল, সব্জি খাওয়া হচ্ছে, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তার মধ্যেও শর্করা থাকে। রক্তে শর্করার ওঠা-পড়া নির্ভর করে দিনভর কী কী খাওয়া হচ্ছে, কতটা শরীরচর্চা হচ্ছে, তার উপরেও।