AI causing cognitive decline

এআই কি মানুষের বুদ্ধিনাশ করছে? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে চিন্তায় গবেষকেরা! দ্রুত পদক্ষেপের পরামর্শ

সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) এ সংক্রান্ত একটি গবেষণার কাজ শেষ করেছে। তবে গবেষণার ফল দেখে চিন্তায় পড়েছেন গবেষকেরাই। তাঁরা বলেছেন গবেষণা লব্ধ ফলটিকে অবিলম্বে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হোক।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০২৫ ১৩:১৪
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

বুদ্ধিনাশ কি কেবল বিনাশকালেই হয়? গবেষণা বলছে, অতিরিক্ত আধুনিক প্রযুক্তিও কখনও সখনও সে কাজ করে দেখাতে পারে। যেমনটা এখন করছে এআই! দুনিয়া জুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছে যে অত্যাধুনিক মানুষের মতো করে ভাবতে পারা প্রযুক্তি, সেই এআই বা আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) অর্থাৎ কৃত্রিম মেধা ক্রমে মানুষের মস্তিষ্ককে অলস করে তুলছে!

Advertisement

সম্প্রতি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি) এ সংক্রান্ত একটি গবেষণার কাজ শেষ করেছে। তবে গবেষণার ফল দেখে চিন্তায় পড়েছেন গবেষকেরাই। তাঁরা বলেছেন গবেষণালব্ধ ফলটিকে অবিলম্বে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হোক, যাতে আগামী দিনে এআই প্রযুক্তি সভ্যতার আরও গভীরে প্রবেশ করে ক্ষতি না করতে পারে।

গবেষণাটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে 'মিডিয়া এমআইটি' নামের জার্নালে। গবেষণাপত্রটির অন্যতম প্রধান লেখক নাতালিয়া কোসমিনা লিখেছেন, “এআই সাধারণ মানুষের বুদ্ধি এবং মেধার ক্ষতি তো করছেই। তবে এটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর ছোটদের জন্য। যাদের বুদ্ধি এবং মেধা সবে তৈরি হতে শুরু করেছে। এআই এদের মস্তিষ্কের সম্পূর্ণ বিকাশ হতেই দেবে না। তাই ছোটদের পড়াশোনার জগতে এআই পুরোপুরি ঢুকে পড়ার আগেই তাকে দূর করে দেওয়া দরকার।”

Advertisement

নাতালিয়ার ওই উদ্বেগের কারণ এমআইটি-র গবেষণার ফলাফল। ১৮-৩৯ বছর বয়সি ৫৪ জনকে নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল আমেরিকার এই প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়। অংশগ্রহণকারীদের ১৮ জনের তিনটি দলে ভাগ করে বিভিন্ন বিষয়ে রচনা লিখতে দেওয়া হয়েছিল। একটি দলকে এআইয়ের সাহায্য নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়, একটি দলকে বলা হয় তারা গুগল সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্য নিতে পারে। তৃতীয় দলটিকে কোনও রকম সাহায্য নিতে দেওয়া হয়নি। সমীক্ষার সময়ে ওই ৫৪ জনের মস্তিষ্কের ৩২টি অঞ্চলের কার্যকলাপের উপরে ইইজি-র মাধ্যমে নজর রাখেন গবেষকেরা। তাতে দেখা যায়, যাঁরা এআইয়ের সাহায্য নিয়েছিলেন, তাঁদের লেখা উতরে গেলেও তাদের মস্তিষ্ক কাজ করেছে সবচেয়ে কম।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন মস্তিষ্কের যে অংশগুলি যুক্তিপূর্ণ চিন্তাভাবনা করে এবং স্মৃতিশক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে, এআই ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে সেই অংশে বিশেষ কোনও পরিবর্তনই ঘটেনি। সমীক্ষাটি বেশ কিছু দিন ধরে চালানো হয়েছিল। গবেষকেরা জানিয়েছেন, এআই ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে যত দিন গিয়েছে, ততই মস্তিষ্কের ওই অংশগুলি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। একটা সময়ে নিজেরা কী লিখছেন, তা নিজেরাই মনে করতে পারছিলেন না তাঁরা। গবেষণার শেষ পর্বে রচনাগুলি স্রেফ কপি আর পেস্ট করছিলেন।

অন্য দিকে, এআই বা গুগল সার্চ ইঞ্জিনের কোনও রকম সাহায্য না নেওয়া অংশগ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে হয়েছে একেবারে উল্টো। গবেষণার প্রতি পর্যায়ে তাঁদের মেধা এবং বুদ্ধির প্রয়োগ বেড়েছে। বেড়েছে ভাবনাচিন্তার গভীরতাও।

অংশগ্রহণকারীদের দ্বিতীয় দলের সদস্যরা, যাঁরা গুগল সার্চ ইঞ্জিনের সাহায্য নিয়েছিলেন, তাঁদের মস্তিষ্কের সক্রিয়তা ছিল মাঝারি মানের। তাদের লেখা রচনার ধাঁচ খানিকটা এআই ব্যবহারকারীদের মতো হলেও তাঁদের স্মৃতিশক্তি এবং ভাবনাচিন্তা করার ক্ষমতা তাঁদের থেকে বেশি ছিল।

চ্যাটজিপিটি, জেমিনাই বা আরও বহু এআই প্রযুক্তি মানুষের নিত্তনৈমিত্তিক জীবনে একান্ত প্রয়োজনের মতো ঢুকে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে এই গবেষণালব্ধ ফলাফল নিঃসন্দেহে উদ্বেগের কারণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement