কী কী খেলে শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি বাড়তে পারে? ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
সকলেরই হয়তো কমবেশি পরিচয় রয়েছে ব্রঙ্কাইটিসের সঙ্গে। শ্বাসনালির প্রদাহের কারণেই এই রোগ হয়। এই প্রদাহের নেপথ্যে অনেক কারণ থাকতে পারে। জীবাণু, বাতাসের নানা ধরনের দূষিত পদার্থ যেমন এর জন্য দায়ী, তেমনই খাওয়াদাওয়ারও বড় ভূমিকা আছে এর পিছনে। এমন কিছু খাবার আছে, যা খেলে শ্বাসনালির প্রদাহ বেড়ে যায়। অ্যালার্জির সমস্যাও বাড়তে পারে। ঠান্ডার সময়ে অনেকেই ঘন ঘন অ্যালার্জি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভোগেন। হাঁপানির টানও ওঠে। এই সবের জন্য কিছুটা হলেও খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস দায়ী। ব্রাঙ্কাইটিসের মতো শ্বাসজনিত রোগ যদি থাকে, তা হলে অতি পছন্দের হলেও কিছু খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল।
ব্রঙ্কাইটিস ক্রনিক হতে পারে, আবার অ্যাকিউটও। উপসর্গ যদি সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে দেখা দেয়, তা হলে সেটি অ্যাকিউট। আরও বেশি সময় ধরে একটানা সমস্যা থাকলে, সেটি ক্রনিক। সাধারণত কাশি-জ্বরের যে উপসর্গ দেখা যায়, তা-ই ব্রঙ্কাইটিসে খানিক বেড়ে যায়। গলা ধরে থাকা, গলায় কিছু আটকে থাকার অস্বস্তিকর অনুভূতি হয়। শ্বাসকষ্ট হতে পারে যখন তখন। ব্রঙ্কাইটিসে শ্বাসনালির প্রদাহ এতটাই বেড়ে যায়, যে এই সময়ে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা নিউমোনিয়ার সংক্রমণও হয়ে যেতে পারে রোগীর। আবার ব্রঙ্কাইটিসের সঙ্গে যদি ডায়াবিটিস থাকে, তবে রোগীর অবস্থা আরও গুরুতর হতে পারে। তাই এ ক্ষেত্রে রোজের খাদ্যাভ্যাসে নজর দেওয়া খুবই জরুরি।
কী কী খেলে ব্রঙ্কাইটিসের সমস্যা বাড়তে পারে?
ক্রনিক অ্যালার্জির ধাত থাকলে তা পরবর্তী সময়ে গিয়ে ব্রঙ্কাইটিসের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এমন কিছু খাবার আছে, যেগুলি প্রায় রোজ খেলে অ্যালার্জির সমস্যা বাড়তে পারে। অনেকেই হয়তো ভাববেন, খাওয়ার সঙ্গে শ্বাসের রোগের কী সম্পর্ক। তবে ‘ফ্রন্টিয়ার্স ইন সেলুলার অ্যান্ড ইনফেকশন মাইক্রোবায়োলজি’ জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, সুষম খাবার খেলে, যেমন বেশি করে ফাইবার, প্রোবায়োটিক বা প্রিবায়োটিক জাতীয় খাবার খেলে অন্ত্রে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে। এই ব্যাক্টেরিয়া শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। অন্য দিকে, প্রক্রিয়াজাত খাবার, বেশি মিষ্টি দেওয়া খাবার, নরম পানীয় খেলে খারাপ ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বাড়ে, যারা প্রদাহ কয়েক গুণ বাড়িয়ে তোলে। এর থেকে শ্বাসনালির প্রদাহও শুরু হয়।
অ্যালার্জি, ব্রঙ্কাইটিসকে যদি বশে রাখতে হয়, তা হলে প্রথমেই যে খাবারগুলি বাদ দিতে হবে, তা হল সাদা পাউরুটি, আইসক্রিম, কেক ও পেস্ট্রি, প্যাকেটজাত ফলের রস, প্যাকেটবন্দি দুগ্ধজাত পণ্য, পাস্তা, ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল। অতিরিক্ত চিনি দেওয়া এই সব খাবার অ্যালার্জির সমস্যা কয়েক গুণ বাড়িয়ে তুলতে পারে।
ট্রান্স ফ্যাট বেশি আছে, এমন খাবার যেমন, চিপ্স, সসেজ, সালামি, প্রক্রিয়াজাত মাংস, বার্গার-পিৎজ়ার মতো খাবার, প্যাকেটজাত স্ন্যাক্স, কুকিজ় বাদ দিতে হবে।
খুব বেশি নুন আছে এমন খাবার খাওয়া চলবে না। যেমন, রেডি-টু ইট স্যুপ, বেশি নুন দেওয়া স্ন্যাক্স, যে কোনও রকম জ়াঙ্ক ফুড।
ডায়েট সোডা, বাজারচলতি এনার্জি ড্রিঙ্ক, বোতলবন্দি শরবত, লেবুর রস বা নরম পানীয় বেশি খেলে শ্বাসজনিত রোগের ঝুঁকি বাড়বে।
ড্রাই ফ্রুট খেতে হলে বুঝেশুনে খেতে হবে। এখন প্যাকেটজাত নানা রকম ড্রাই ফ্রুটস পাওয়া যায়, যেগুলিতে প্রিজ়ারভেটিভ মেশানো থাকে। এই ধরনের ড্রাই ফ্রুটস না খাওয়াই ভাল।