ক্যালশিয়ামের ঘাটতির নেপথ্যে থাকতে পারে আরও ২ ভিটামিন, খনিজ। ছবি: সংগৃহীত।
ক্যালশিয়াম এমন এক খনিজ যার ঘাটতি হলে দুর্বল হয়ে যায় হাড়। নড়বড়ে হয়ে পড়ে দাঁত। হাড় মজবুত রাখার জন্য ক্যালশিয়াম অত্যন্ত জরুরি। খনিজটির অভাব হলে শুধু হাড় ভঙ্গুর হয় না, শরীর দুর্বল লাগে, ক্লান্তি আসে, পায়ে টান ধরার মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে।
শরীরে ক্যালশিয়ামের সামগ্রিক মাত্রা কমে গেলে, শরীর হাড় থেকে ক্যালশিয়াম শুষে নেয়। এ কারণে হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। অস্টিয়োপোরেসিসের মতো রোগ বাসা বাঁধে শরীরে।
ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণে ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার বা সাপ্লিমেন্টই খাওয়া দরকার, এমনটাই বলবেন সকলেই। তবে জানা দরকার, শুধু ক্যালশিয়াম নয়, ভিটামিন ডি এবং ম্যাগনেশিয়ামের মাত্রা কমলেও তার প্রভাব পড়তে পারে ক্যালশিয়াম শোষণে।
ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি ক্যালশিয়াম শোষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব হলে ক্যালশিয়াম ঠিক ভাবে কাজ করবে না। এমনকী খাবারে থাকা ক্যালশিয়ামের পুষ্টিগুণও পাবে না শরীর।
কিছু কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ক্যালশিয়ামের ঘাটতি পূরণে, ক্যালশিয়ামের পাশাপাশি ভিটামিন ডি-সাপ্লিমেন্ট খাওয়ায় বেশি কাজ হয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা বলেন, সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার চেয়ে ভাল দৈনন্দিন খাবার থেকে ভিটামিন এবং খনিজের চাহিদা পূরণ করা।
কী ভাবে ভিটামিন ডি-এর জোগান সম্ভব
১. খাবারের তালিকায় রাখতে হবে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত মাছ। স্যামন, পমফ্রেট বা সামুদ্রিক মাছে এই উপাদান মেলে। এ ছাড়া কাতলা, ইলিশ জাতীয় মাছও রাখতে পারেন ডায়েটে।
২. প্রাণিজ দুধ, উদ্ভিজ্জ দ্রব্য থেকে মেলা দুধ রাখা যাবে তালিকায়।
৩. সি-টেক, মেইটেক ইত্যাদি মাশরুমেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
৪. সাপ্লিমেন্ট হিসাবে ভিটামিন ডি খাওয়া যায়। ক্যাপসুল, ট্যাবলেটের মাধ্যমেও তা খাওয়া যায়।
পাশাপাশি, সকালের দিকে বেশ কিছু ক্ষণ রোদে হাঁটার অভ্যাসও ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি পূরণে সাহায্য করতে পারে।
ম্যাগনেশিয়াম: ক্যালশিয়ামের অভাব পূরণে শরীরে সঠিক মাত্রায় ম্যাগনেশিয়াম থাকা জরুরি। খনিজটি ক্যালশিয়াম শোষণে সহায়ক এবং ভিটামিন ডি-কে শরীরের উপযোগী ভূমিকায় পরবর্তিত করতেও এটি সাহায্য করে। পেশি সঞ্চালনায়, এবং স্নায়ুর কার্যকারিতা ঠিক রাখতেও খনিজটির দরকার হয়।
কোন খাবারে মেলে ম্যাগনেশিয়াম
১. দৈনিক প্রয়োজনের ১/৩ ভাগেরও বেশি ম্যাগনেশিয়াম মেলে কুমড়োর বীজে। এ ছা়ড়া চিয়াবীজ, কাঠবাদাম এবং কাজুতেও ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়।
২. স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য বা ওজন কমানোর জন্য সাধারণ ভাতের বদলে অনেকেই ব্রাউন রাইস বা কিনোয়া খান। ইদানীং অমরন্থের জনপ্রিয়তাও বাড়ছে। অমরন্থে ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে সবচেয়ে বেশি।
৩. বরবটির দানা, কালো ডাল, রাজমা, কাবলি ছোলা, সয়াবিনের দানায় ম্যাগনেশিয়াম মেলে। সবুজ শাকপাতায় ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়।
৪. ইলিশ, কাতলা, বোয়াল, আড় মাছেও ম্যাগনেশিয়াম থাকে।
ক্যালশিয়ামের ঘাটতিপূরণে কী খাবেন?
দুধ, ডিম, দই, চিয়াবীজ, চিজ়, পালং, রাগি, সয়াবিন, সয়াবিনের দুধ-সহ বিভিন্ন খাবারে ক্যালশিয়াম মেলে।