ছবি : সংগৃহীত।
দুপুরের খাওয়ার পরে শুয়ে-বসে থাকারই দস্তুর। ঠিকানা বাড়ি হোক বা অফিস— পরিস্থিতির বড় একটা অদলবদল হয় না। যিনি বাড়িতে থাকেন, তিনি সব কাজ সেরে মধ্যাহ্নভোজের পরে একটু বিশ্রাম নেন। যিনি অফিসে থাকেন, তিনিও হয় ডেস্কে বসেই দুপুরের খাবার খেয়ে নেন। নয়তো বাইরে থেকে খেয়ে এসে চেয়ারে বসে পড়েন। চিকিৎসকেরা প্রায়শই বলে থাকেন এই যে খাওয়ার পরে বসে থাকা বা শরীরকে পুরোপুরি বিশ্রামের অবস্থায় পাঠিয়ে দেওয়া, তাতে নানা ধরনের ক্ষতি হয় শরীরের। কিন্তু তার বদলে যদি মধ্যাহ্নভোজের পরে ১০০০ পা হাঁটা যায় তা হলে কী হবে?
ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিসের চিকিৎসক এবং সার্জন কর্ণ রাজন জানাচ্ছেন, প্রতিদিন যদি দুপুরের খাবার খাওয়ার পরে হাজার পা হাঁটা যায় তবে তা শরীরের নানা উপকারে লাগবে। এক সপ্তাহ ওই অভ্যাস মানলেই বুঝবেন বহু রোগের প্রকোপ কমতে শুরু করেছে।
কিন্তু যখন তখন হাজার পা হাঁটবেন কী ভাবে?
‘হাজার পা হাঁটা’ শুনতে অনেক বেশি মনে হলেও দূরত্বের হিসাবে খুব বেশি নয়। অর্থাৎ কেউ যদি অফিস করতে করতে হাজার পা হাঁটা যায় নাকি বলে মনে মনে প্রশ্ন তুলে থাকেন, তবে জেনে রাখুন হাজার পা হাঁটা মানে দূরত্বের হিসাবে পুরোপুরি ১ কিলোমিটারও নয়। অর্থাৎ একটু জোর পায়ে যাওয়া আর আসা মিলিয়ে ৫-৫=১০ মিনিট হাঁটলেই সেই দূরত্ব অতিক্রম করা যায়।
হাঁটলে কী কী উপকার?
১। খাওয়ার পরে হাঁটলে তা বিভিন্ন হজমকারক এনজ়াইম নিঃসরণে সাহায্য করে। এর ফলে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। পেট ফাঁপা, অ্যাসিড রিফ্লাক্স এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও থাকে দূরে। শরীর যেকোনও খাবার থেকে অনেক বেশি পুষ্টি সংগ্রহ করতে পারে।
২। যাঁরা ডায়াবিটিসে আক্রান্ত, তাঁদের জন্যও খাওয়ার পরে হাঁটা অত্যন্ত উপকারী। কর্ণ বলছেন, ‘‘খাবার পরে হাঁটলে শরীরে যাওয়া কার্বোহাইড্রেট এবং গ্লুকোজ় শোষণ করে নেয় পেশি। ফলে তা রক্তে গিয়ে মেশে কম। এতে যেমন শরীরের কাজ করার ক্ষমতা বাড়, তেমনই ডায়াবিটিসের মতো অসুখের ঝুঁকিও কমে।’’
৩। বিপাকের হার বৃদ্ধি করে। যা ওজন কমানোর জন্য এবং ক্যালোরি ঝরানোর জন্য জরুরি।
৪। শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বা এলডিএল-এর মাত্রা কমায় ফলে হার্ট ভাল থাকে।
৫। অল্প সময়ের হাঁটাহাঁটি শরীরে এনডরফিন হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। ফলে মানসিক চাপ থাকলে তা কমে। মেজাজ ভাল থাকে। কাজে মনোনিবেশ করতেও সুবিধা হয়। একই সঙ্গে অকারণ উদ্বেগও কমাতে সাহায্য করে এই অভ্যাস।