ভ্রূণস্থ সন্তানের ওপর গ্রহের প্রভাব

নারীর ভ্রূণস্থ সন্তানের ওপর প্রত্যেক মাসে অর্থাৎ প্রথম থেকে দশম মানে বিভিন্ন গ্রহের প্রভাব পড়ে থাকে। এই প্রভাবই কিন্তু সন্তানের চারিত্রিক বিকাশে অভাবনীয় ভাবে রেখাপাত করে।

Advertisement

পার্থপ্রতিম আচার্য

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share:

নারীর ভ্রূণস্থ সন্তানের ওপর প্রত্যেক মাসে অর্থাৎ প্রথম থেকে দশম মানে বিভিন্ন গ্রহের প্রভাব পড়ে থাকে। এই প্রভাবই কিন্তু সন্তানের চারিত্রিক বিকাশে অভাবনীয় ভাবে রেখাপাত করে।

Advertisement

এখন দেখে নেওয়া যাক গর্ভসঞ্চারের কোন মাসে কোন গ্রহের প্রভাব প্রবল হয়—

প্রথম মাস— গর্ভসঞ্চারের প্রথম মাসে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলনের ফলে গর্ভাশয়ে গর্ভকোষ জন্মায়। প্রথম মাসের ভ্রূণের ওপর শুক্রের প্রভাব প্রবল হয়।

Advertisement

দ্বিতীয় মাস— দ্বিতীয় মাসে ‘কলল’ থেকে পিণ্ডের উৎপত্তি হয়। এই অবস্থায় ভ্রূণের উপর মঙ্গলের প্রভাব বিস্তৃত হয়।

তৃতীয় মাস— এ সময়ে ওই পিণ্ড থেকে হাত, পা, মস্তক ও পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের পাঁচটি স্থুল পিণ্ড উৎপন্ন হয়। এতে অতি সূক্ষভাবে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের রেখা বোঝা যায়। এই সময়ে ভ্রূণের ওপর বৃহস্পতির প্রভাব থাকে।

চতুর্থ মাস— চতুর্থ মাসে সন্তানের ওপর ভ্রূণস্থ আত্মার কারক রবি প্রভাব বিস্তার করে। আবার জাতকতিলক মতে শনির প্রভাবই স্বীকার করা হয়। কিন্তু বরাহমিহির বলেছিলেন রবি থেকে ফল চিন্তা করা উচিত। কেননা রবির দ্বারাই আত্মার বিচার করা হয়।

পঞ্চম মাস— পঞ্চম মাসে সন্তানের দেহে চর্ম জন্মায়। এই মাসে মন জন্মায় এবং চন্দ্রের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।

ষষ্ঠ মাস— এ মাসে রোম জন্মায়, বুদ্ধির উদ্ভব হয়, হাত পায়ের নখ জন্মায় এবং যকৃতের সৃষ্টি হয়ে দেহে রক্ত সঞ্চারিত হয়। এই মাসের প্রভাব বিস্তারকারক গ্রহ হল শনি আবার জাতকতিলক মতে রবির প্রভাবকেই মানা হয়। বরাহমিহিরের মতে শনির প্রভাবই বিস্তার লাভ করে কারণ ষষ্ঠ মাসের গঠন দ্বারা রবির প্রভাব যথাযথ হয় না।

সপ্তম মাস: এই মাসে সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গের অবস্থান স্পষ্ট হয়। এ সময়ে স্মৃতিশক্তির উদ্ভব হয়। এ মাসে বুধের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।

অষ্টম মাস: অষ্টম মাসে গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষুধা, পিপাসা ও স্বাদ জন্মায়। এ মাসেই হৃদয়ের প্রাণস্বরূপ ওজঃ ধাতু বা নির্মল হরিদ্রাভ তরল রক্ত জন্মে।

সপ্তম ও অষ্টম মাসে সন্তানসম্ভবা মাকে কোনও ভাবেই উত্তেজিত হতে দেওয়া উচিত নয়। মন যে কোনও দিক থেকে শান্ত রাখাই অবশ্য কর্তব্য। কারণ ক্রমাগত অশান্ত থাকার ফলে গর্ভস্থ সন্তানের স্মৃতিশক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ওজঃ ধাতুর বিকল্প হয়ে সন্তান জন্ম নেয়। এ অবস্থাপ্রাপ্ত সন্তানদের ভিতর সারা জীবন অবসাদ থেকে যায়। এ সময়ে সন্তানসম্ভবাকে মাংস ভক্ষণ করানো একান্ত প্রয়োজনীয়। কোনও কারণে যদি এই দুই মাসের মধ্যে সন্তান জন্মলাভ করে, তবে মাংসরূপ পুষ্টিকর খাদ্যের ব্যবহারের জন্যই সন্তানকে সুস্থ ও দীর্ঘজীবী রাখা সম্ভব। এই অষ্টম মাসের সন্তানের ওপরই রবিগ্রহ বা আধান লগ্নপতি গ্রহ প্রভাব বিস্তার করে। এর কারণ রবিই হল ওজঃ ধাতুর কারক গ্রহ।

নবম মাস: এই মাসে গর্ভস্থ সন্তান বর্হিগমনের প্রবল চেষ্টায় ব্যপৃত থাকে। এ মাসে আবার চন্দ্রের প্রভাব লক্ষ্যণীয়।

দশম এবং শেষ মাস: দশম মাসে সন্তান পূ্র্ণ শরীর, মন, স্মৃতিশক্তি, বুদ্ধি ইত্যাদি সহকারে মাতৃজঠরের পেশীর ক্রমাগত চাপের সাহায্যে জন্মলাভ করে। এর পর যদি কোনও সন্তান মাতৃজঠরেই জীবিতাবস্থায় রয়ে যায় তবে মায়ের গর্ভবিকার ঘটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন