হাত বলতে বোঝায় প্রধানত হাতের তালু, আঙুল সহ সমস্ত করতল। হাতের কোমলতা থেকে ব্যক্তিচরিত্র ও তার মানসিকতার গড়ন অনেকটা ধরা যায়। হাতের কোমলতা প্রধাণত চার ধরণের হয়। যেমন- (১) অতিকোমল ফোলা হাত, (২) কোমল কিন্তু ফোলা নয়, (৩) শক্ত হাত, (৪) অতি শক্ত হাত
অতিকোমল ফোলা হাতঃ এই হাতের মালিক সাধারণত মন সর্বস্ব মানুষ। জীবন সংসারটাকে কল্পনার রঙিন কাঁচের ভিতর দিয়ে দেখে। এদের কাছে বাস্তবতার চেয়ে কল্পনার মূল্য অধিক। এরা যুক্তির চেয়ে আবেগ অনুভূতিকে দাম দিয়ে ফেলে বেশী। থেকে থেকে এরা এমন সব কথা বলে, দেখে মনে হয় এরা অন্য কোনও গ্রহ থেকে পৃথিবীকে দেখতে এসেছে। সব কিছুর বিচার আবেগের মাপ কাঠিতেই করে থাকে। কারও সঙ্গে দেখা হলে শুধু নিজের কথাটা একনাগারে বলে চললো, অপরে কি ভাবছে সে ব্যাপারে এদের কেয়ার কম। এই শ্রেনীর লোকদের শুধুহাত নয় গোটা শরীরটার গঠন এমন থাকে যে, এরা মোটেই বেশী কষ্ট সহ্য করতে পারে না। স্বাভাবিক ভাবেই এরা একটু আরাম প্রিয় ও শ্রম বিমুখ। কিন্তু এদের অন্য যোগ্যতা যাই থাক সহযেই এরা মনের ভাব ভালভাবে গোপন রাখতে পারে।
কোমল কিন্তু ফোলা নয় এমন হাতঃ এই শ্রেনীর লোকেরা ও মন প্রধান কিন্তু অনেকটা বাস্তববাদী। এদের দেহ ও উপরের প্রথম শ্রেনীর মত অপটু নয়। তাই এরা অনেকেই খুব শ্রম সাধ্য কাজে না গিয়ে যেখানে অল্প পরিশ্রম আছে অথচ অনেক বুদ্ধির দরকার এমন অনেক রকমের কাজে নিযুক্ত থাকে। বাস্তবে ওই সব কাজে এরা উপযুক্ত ও বটে। এই শ্রেনীর হাতের লোকেরা পিওন, কেরানী থেকে অফিসার, ম্যানেজার, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, উকিল-মোক্তার, জর্জসাহেব সহ বিভিন্ন শ্রেনীর কাজে দক্ষ হওয়ার জন্য তারা নিজেদের ঐ জাতীয় কাজে নিযুক্ত রাখে। ফলে জীবনে সার্থকতা লাভের দিক থেকে এই শ্রেনীর হাতের লোকেরা খুবই উপযুক্ত। যদিও এরাও খুব ইমোশনাল বা আবেগপ্রবণ তথাপি এরা বুদ্ধি ও কর্মদক্ষতা ব্যলেন্স করে জীবন সংগ্রামে পিছিয়ে না থেকে বরং এগিয়ে নিয়ে যায়।
শক্ত হাতঃ এরা ততটা ইমোশনাল নয়, যতটা যতটা উপরের দুই শ্রেনীর মধ্যে দেখা যায়। এরা বরং উপরের দুই শ্রেনীর চেয়ে অনেক বেশী বাস্তববাদী। এরা আবেগপ্রবণ হওয়ার চেয়ে বাস্তববাদী হওয়া জরুরি মনে করে। তাই যে সব কাজে বুদ্ধি বৃত্তির সঙ্গে শারিরীক ক্ষমতা দরকার এরা সহজাত ভাবেই সেই সব কাজে নিজেদের নিযুক্ত রাখে। এরা পুলিশ, সেনাবাহিনী, আধসামরিক বাহিনী, বিভিন্ন রকমের গার্ড সহ ইত্যাদি কাজে নিযুক্ত হতে পারলে খুশী হয়। খেলাধূলা সহ নানা ব্যবহারিক কাজে এরা দক্ষতা দেখিয়ে থাকে। অধিকাংশ ব্যবসাদার এই শ্রেনীর হাতের লোক হয়ে থাকে।
অতি শক্ত হাতঃ এদের মানসিক বা বুদ্ধির দিকটা ততটা পরিনত নয়। শরীরটাই এদের পুঁজি। এই শরীরটাকে সম্বল করে যা যা করা যাই এরা তাই তাই করে থাকে। সেই অর্থে এরা কায়িক শ্রম ভালবাসে। এরা অতি মাত্রায় বাস্তববাদী। তাই জীবন সংগ্রামে ঘাত-প্রতিঘাতে কে কি সামান্য কথা বললো, কে কি ভাবল, তা এরা একদমই গ্রাহ্যের মধ্যে আনে না। এরা যদি কিছু দেয়, তবে সেটা সাদা মাটা কাঠ খোট্টা ভঙ্গিতে দিয়ে যাবে। আর আপনাকে যদি এরা পচ্ছন্দ না করে তাও সেটা তেমনি রাখ ঢাকের বালাই না রেখে স্পষ্ট জানিয়ে যাবে। যদিও এদের ভিতর অনেক সময় অপরাধী ও দুর্দান্ত স্বভাবের লোকের সন্ধান মেলে। বলাবাহুল্য সব শ্রেনীর লোকের মধ্যে অপরাধীর সন্ধান মেলে, তবে এই শ্রেনীর লোকের মত অন্য শ্রেনীর লোকেরা ততটা উগ্র নয়।