ভারতবর্ষে খুব প্রাচীনকাল থেকে মুক্ত অলঙ্কার ও ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। আয়ুর্বেদে বিভিন্ন রোগের উপশমে মুক্তভষ্ম অনুপান ভেদে ব্যাপক ব্যবহার হয়। জ্যোতিষে অশুভ বা দুর্বল চন্দ্রের প্রতিকারার্থে মুক্ত ব্যবহার করতে বলা হয়। জেম-থেরাপিষ্টরা মুক্তকে ছোট ইলেক্ট্রিক মোটরের ব্লেডে বেধে দূর-চিকিৎসায় রুগীর ফটোর সামনে রেখে রোগীকে সুস্থ করে তুলছেন। কালচার মুক্ত বাজারে আসার পর থেকে মুক্তর অলঙ্কার অতি সাধারণ ঘরের মেয়েরাও ব্যাপক ব্যবহার করছে।
মুক্তর বাইরের বর্ন সাদা বা পীত যাই হোক না কেন! কিন্তু মুক্তর আকার গত রঙ বা স্পেকট্রাম কালার হচ্ছে ‘কমলা’। মুক্ত কিন্তু জেম-থেরাপিষ্টদের কাছে হট জেম বা উষ্ণ রত্নের মধ্যে পড়ে। কারণ মুক্ত থেকে যে কমলা রঙ নির্গত হয় তার চরিত্র কিছুটা গরম। তাই জেম-থেরাপিষ্টদের কাছে মুক্ত ‘হট জেম’ হিসেবে চিহ্নিত। সাধারণত জ্যোতিষেরা মুক্তকে ‘কুলজেম’ বা ঠান্ডা রত্নের পর্যায়ে ফেলে। এই বিতর্কের কারণে জ্যোতিষের প্রেসক্রিপ্সন আর জেম-থেরাপিষ্টের দেওয়া প্রেসক্রিপ্সান মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থেকেই যায়।
কমলা আলো লাল আর হলদে আলোর সংমিশ্রণে তৈরী হয়। তাই এর আরোগ্যকারী শক্তি পৃথকভাবে লাল যা চূনীর নিজস্ব রঙ বা হলুদ যা প্রবালের নিজস্ব রঙ এর চেয়ে বেশী। তাই মুক্ত বা কমলা আলো থাইরয়েড গ্রন্থিকে স্টিমুলেট করে প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থিকে ডিপ্রেসড করে। যার ফলে মুক্ত ধারণ করলে শ্বাস-কষ্ট লাঘব হয়। মুক্ত ফুসফুসকে প্রসারিত করে থাকে।
কমলা আলো সব ধরণের খিচ ধরা মাসল ক্র্যাম্পস বা সব ধরনের ক্র্যাম্প রোগ থেকে মুক্তি দেয়। কমলা আলো বা মুক্ত ক্যালসিয়াম মেটাব্লজিমকে সাহাজ্য করে শরীর কে সুস্থ্ রাখে।ফুসফুস শক্তিশালী হয়। মুক্ত বা কমলা আলো ল্যাকট্রেট গ্ল্যান্ডকে স্টিমুলেট করে ফলে শিশু জন্মের পর মায়ের দুধের ক্ষরণকে বৃদ্ধি করে। এতে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য ভাল থাকে। মুক্ত হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে এবং এনিমিয়া বা রক্তাল্পতা দূর করে। কমলা আলো বা মুক্ত রক্তের ক্ষারকত্ব বৃদ্ধি করে ডিটক্সিফিকেশানে সাহায্য করে ফলে শরীরে ব্যথা-বেদনা কম হয়। বৃদ্ধ বয়সে মুক্ত রক্তের ঘনত্বকে কমিয়ে রক্তকে পাতলা রাখে। এতে শিরা-উপশিরায় রক্ত সঞ্চালিত হয়। মুক্ত প্লীহা ও প্যানক্রিয়াসকে স্টিমুল্টে করে। যাদের দুর্বল মন মুক্ত ধারণে সবলতা প্রাপ্ত হয়। অবসাদ দূর করে। মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা করে। প্রসব কালের আগে ও পরে মুক্ত ধারণ করলে মাতা ও শিশুর শরীর ও মন ভাল থাকে।