চান্দ্রমাস অনুযায়ী কোন সময়ে কী গাছ লাগানো উচিত জানেন?

আমরা অনেকেই জানি না যে, উদ্ভিদের বৃদ্ধির হার বা যে কোনও ফল ও ফুলের বৃদ্ধির হারও পূর্ণিমা ও অমাবস্যার উপর ব্যাপক পরিমাণে নির্ভর করে।

Advertisement

অসীম সরকার

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০০:০৮
Share:

চন্দ্রের আকর্ষণে জোয়ার ভাটা হয়, এটা আমরা সকলেই জানি। পূর্ণিমা ও অমাবস্যায় পুরাতন বাতের ব্যথা বাড়ে, এটা অনেকেই বলে থাকেন। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে, উদ্ভিদের বৃদ্ধির হার বা যে কোনও ফল ও ফুলের বৃদ্ধির হারও পূর্ণিমা ও অমাবস্যার উপর ব্যাপক পরিমাণে নির্ভর করে। চন্দ্রকলার হ্রাস-বৃদ্ধির সঙ্গে চাষবাসের গভীর আত্মীয়তা রয়েছে।

Advertisement

অমাবস্যার পর থেকে চন্দ্রকলা বৃদ্ধি পেতে থাকে, যাকে ওয়াক্সিং মুন বা শুক্লপক্ষ বলে। অর্থাৎ যতই পূর্ণিমার দিকে এগোতে থেকে ততই চন্দ্রের আলো বৃদ্ধি পেতে থাকে। এতে উদ্ভিদের কী হয়? এই ১৪ দিন সকল প্রকার উদ্ভিদের মধ্যে রস বা সেলস্যাপ উপরের দিকে প্রবাহিত হয় বেশি পরিমাণে। অর্থাৎ উদ্ভিদ বেশি পরিমাণ জলীয় পদার্থ মাটি থেকে টানে। এটা হয় চন্দ্রকলা বা চাঁদের আলোর পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য।

এই আলো বৃদ্ধির সময়ে আমরা যদি বর্ষজীবী, দ্বিবর্ষজীবী বা এক বৎসরের কম বাঁচে এমন উদ্ভিদের চাষ বেশি করি, তা হবে সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। এই সময়ে এই জাতীয় উদ্ভিদের বপনের পক্ষে উপযুক্ত।

Advertisement

আর যখন চন্দ্রকলা হ্রাস পেতে থাকে, যাকে কৃষ্ণপক্ষ বলে, যে সময়টা আরম্ভ হয় পূর্নিমার পর থেকে অমাবস্যা পর্যন্ত, এই সময়ে চাঁদের আলোর পরিমাণ কমতে থাকে। এই সময়ে, সমস্ত উদ্ভিদ জগত্‌, চন্দ্রের আকর্ষণের কারণে সেলস্যাপ বা রস উপরের দিকে বেশি না উঠে নীচের দিকে থাকে। এই সময়ে এনার্জি মূলের দিকে প্রবাহিত হয়। তাই এই সময়ে সেই রকম উদ্ভিদের চাষবাস করতে হয়, যেগুলি মাটির নীচে ফলে। যেমন আলু, আদা, গাজর, বা দীর্ঘ দিন বাঁচে এমন গাছ লাগাতে হয়। এই সময়ে যদি মাটিতে সারের দরকার থাকে, তা হলে সার দিতে হয়।

এ বার আমরা আলোচনা করব চান্দ্রমাস অনুযায়ী কী ভাবে চাষবাস করা হয়ে থাকে। বিশেষ করে যারা ফুলের চাষ বা ছোটখাটো বাগান করেন তাদের জন্যে। আমরা জানি চান্দ্র মাস ২৯ দিনে হয়। আমরা চান্দ্রমাসকে চারটে কোয়ার্টারে ভাগ করে কখন কোন চাষ উপযুক্ত তাই নিয়ে আলোচনা করব-

শুক্লপক্ষের প্রথম কোয়ার্টার- শুক্লপক্ষের প্রথম কোয়ার্টার মানে অমাবস্যা থেকে পরবর্তী ৭ দিন। এই সময় পাতা আছে এমন সবজি যেমন বাঁধাকপি, লেটুস, কিছু দানা শস্য- এই সব উদ্ভীদ যারা ফলের বদলে ফুল থেকেই বীজ উৎপন্ন করে, তা লাগানো যেতে পারে।

* বর্ষজীবী বা সৌন্দর্য সৃষ্টি করে এমন ফুলের চাষ আরম্ভ করা যেতে পারে।

* এই সময় বাগানে গাছে জল দিতে হয় এবং সেই সঙ্গে সার দেওয়া যেতে পারে।

* ফুলগাছ যেমন গোলাপের গ্র্যাফটিং করা যেতে পারে সেই সঙ্গে ফল হয় এমন গাছের কলম করা যেতে পারে।

* এই কোয়ার্টারের শেষের দিকে কিছু ফল ও সবজি তোলা যেতে পারে।

যেহেতু চান্দ্র মাসের এই অংশে উদ্ভীদ জগতে সেলস্যাপ বা জলীয় পদার্থ উপরের দিকে প্রবাহিত হয়, তাই সকল শাক-সবজি রসালো থাকে, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে বিশেষ উপকারী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন