আজ বরুথিনী একাদশী, জেনে নিন এর মাহাত্ম্য, নির্ঘণ্ট এবং সময়সূচি

ভবিষ্যোত্তরপুরাণে যুধিষ্ঠির-শ্রীকৃষ্ণ সংবাদ বর্ণনা করা হয়েছে। যুধিষ্ঠির মহারাজ শ্রীকৃষ্ণকে বললেন, হে বাসুদেব। আপনাকে প্রণাম। বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী কী নামে প্রসিদ্ধ এবং তার মহিমাই বা কী তা কৃপা করে আমাকে বলুন।

Advertisement

পার্থপ্রতিম আচার্য

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৯ ০০:০০
Share:

ভবিষ্যোত্তরপুরাণে যুধিষ্ঠির-শ্রীকৃষ্ণ সংবাদ বর্ণনা করা হয়েছে। যুধিষ্ঠির মহারাজ শ্রীকৃষ্ণকে বললেন, হে বাসুদেব। আপনাকে প্রণাম। বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশী কী নামে প্রসিদ্ধ এবং তার মহিমাই বা কী তা কৃপা করে আমাকে বলুন। শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে রাজন। ইহলোক ও পরলোকে বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশী ‘বরুথিনী’ নামে বিখ্যাত। এই ব্রতপালনে সর্বদা সুখ লাভ হয় এবং পাপক্ষয় ও সৌভাগ্য প্রাপ্তি ঘটে। মহিলারা এই ব্রত পালনে সৌভাগ্য লাভ করেন। ভক্তি ও মুক্তি প্রদানকারী এই ব্রত সর্বপাপহরণ এবং গর্ভাবস্থার যন্ত্রণা বিনাশ করে। এই ব্রতের প্রভাবে মান্ধাতা, ধুন্ধুমার, আদি রাজারা দিব্যধাম লাভ করেছেন। এমনকি মহাদেবও এই ব্রত পালন করেছিলেন। দশ হাজার বৎসর তপস্যার ফল কেবলমাত্র এক বরুথিনী ব্রত পালনে লাভ হয়। যে শ্রদ্ধাবান ব্যক্তি এই ব্রত পালন করেন, তিনি ইহলোক ও পরলোকে সমস্ত প্রকার কাঙ্খিত ফল লাভ করেন।

Advertisement

হে নৃপশ্রেষ্ঠ! অশ্বদান অপেক্ষা গজদান শ্রেষ্ঠ, গজদান থেকে ভূমিদান, তা থেকে তিলদান, তিলদান থেকে স্বর্ণদান এবং তা অপেক্ষা অন্নদান শ্রেষ্ঠ। অন্নদানের মতো শ্রেষ্ঠ দান আর নেই। পণ্ডিতেরা কন্যাদানকে অন্নদানের সমান বলে থাকেন। স্বয়ং ভগবান গোদানকে অন্নদানের সমান বলেছেন। আবার এই সমস্ত প্রকার দান থেকেও বিদ্যাদান শ্রেষ্ঠ। কিন্তু এই বরুথিনী ব্রত পালনে সেই বিদ্যাদানের সমান ফল লাভ হয়ে থাকে। ‘বরুথিনী’ ব্রত পালনকারী কন্যাদান থেকেও বেশি ফল লাভ করে। ব্রতকারী ব্যক্তি দশমীর দিনে কাঁসার পাত্রে মাংস, মসুর, ছোলা, শাক, মধু, অন্যের প্রদত্ত অন্নগ্রহণ, দুইবার আহার ও মৈথুন পরিত্যাগ করবে। দ্যূতক্রীড়া, নেশাজাতীয় দ্রব্য, দিবানিদ্রা, পরনিন্দা-পরচর্চা, প্রতারণা, চুরি, হিংসা, মৈথুন, ক্রোধ ও মিথ্যাবাক্য একাদশীর দিনে বর্জনীয়। কাঁসার পাত্রে মাংস, মসুর, মধু, তেল, মিথ্যাভাষণ, ব্যায়াম, দুইবার আহার ও মৈথুন দ্বাদশীর দিনে পরিত্যাজ্য।

হে রাজন! এই বিধি অনুসারে বরুথিনী ব্রত পালনে সকল প্রকার পাপের বিনাশ এবং অক্ষয় গতি লাভ হয়। যিনি হরিবাসরে রাত্রি জাগরণ করে ভগবান জনার্দনের পূজা করেন, তিনি সর্বপাপ মুক্ত হয়ে পরমগতি লাভ করেন। তাই সূর্যপুত্র যমরাজের যাতনা থেকে পরিত্রাণের জন্য পরম যত্নে এই একাদশী ব্রত পালন করা কর্তব্য। বরুথিনী একাদশীর ব্রতকথা শ্রদ্ধাভরে পাঠ বা শ্রবণ করলে সহস্র গোদানের ফল লাভ হয় এবং সর্বপাপ থেকে মুক্ত হয়ে বিষ্ণুলোকে গতি হয়।

Advertisement

এখন দেখে নেওয়া যাক বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত ও গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে সময়সূচি:

বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে:

একাদশী আরম্ভ:

বাংলা তারিখ: ১৫ বৈশাখ ১৪২৬, সোমবার।

আরও পড়ুন: সৌভাগ্যের চাবিকাঠি ঘোরাতে ঘড়ি কতটা সাহায্য করে?

ইং তারিখ: ২৯/০৪/২০১৯।

সময়: রাত্রি ঘ ১০/০৪ মিনিট থেকে।

একাদশী শেষ:

বাংলা তারিখ: ১৬ বৈশাখ ১৪২৬, মঙ্গলবার।

ইং তারিখ: ৩০/০৪/২০১৯।

সময়: রাত্রি ঘ ১২/১৮ মিনিট পর্যন্ত।

একাদশীর উপবাস:

বাংলা তারিখ: ১৬ বৈশাখ ১৪২৬, মঙ্গলবার।

ইং তারিখ: ৩০/০৪/২০১৯।

সময়: রাত্রি ঘ ১২/১৮ মিনিট পর্যন্ত।

গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা মতে:

একাদশী আরম্ভ:

বাংলা তারিখ: ১৫ বৈশাখ ১৪২৬, সোমবার।

ইং তারিখ: ২৯/০৪/২০১৯।

সময়: রাত্রি ঘ ৯/৩৬ মিনিট থেকে।

একাদশী শেষ:

বাংলা তারিখ: ১৬ বৈশাখ ১৪২৬, মঙ্গলবার।

ইং তারিখ: ৩০/০৪/২০১৯।

সময়: রাত্রি ঘ ১১/৩৫ মিনিট পর্যন্ত।

একাদশীর উপবাস:

বাংলা তারিখ: ১৬ বৈশাখ ১৪২৬, মঙ্গলবার।

ইং তারিখ: ৩০/০৪/২০১৯।

সময়: রাত্রি ঘ ১১/৩৫ মিনিট পর্যন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন