বিংশোত্তরী দশা কী ভাবে বিচার করা হয় এবং এর থেকে কী জানা যায় (দ্বিতীয় অংশ)

এই অংশে আমরা বিংশোত্তরী দশায় গ্রহেরা কী ভাবে ফল দিয়ে থাকে তার সম্বন্ধে আলোচনা করব।

Advertisement

অসীম সরকার

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০০
Share:

এই অংশে আমরা বিংশোত্তরী দশায় গ্রহেরা কী ভাবে ফল দিয়ে থাকে তার সম্বন্ধে আলোচনা করব।

Advertisement

রবির মহাদশা- দশা বিচারে প্রথমেই দেখতে হবে রবি কোন ভাবে অবস্থান করছে। যে ভাবে অবস্থান করছে, সেই ভাব ভাল, খারাপ না মাঝামাঝি ফল দেবে, তা জানা যাবে লগ্নের সাপেক্ষে ভাবটি ভাল না খারাপ তার উপর। তারপর রবি কোন নক্ষত্রে অবস্থান করছে আর সেই নক্ষত্র জন্মছকে কোন ভাবের অধিপতি এবং সেই নক্ষত্রপতি কে, এইগুলি জানতে হবে। রবি ও চন্দ্র ছাড়া বাকি গ্রহগুলি সব সময় দু’টি ভাবের অধিপতি হয়ে থাকে। আরও অনেক কিছু আছে। তবে এইটুকু ঠিকমতো জানলে অনেকটাই বিচার করা যায়। আর এই কথাগুলি সব গ্রহের ক্ষেত্রেই প্রয়োজ্য।

রবি যদি শুভভাবে অবস্থান করে, রবির দশা বা অন্তর্দশায় অর্থনৈতিক দিক থেকে উন্নতি বা প্রমোশন, শিক্ষায় শুভফল লাভ, প্রতিভার স্বীকৃতি বোঝায়। অশুভ অবস্থানে কম ফললাভ বা ব্যর্থতা বোঝায়। হাড়ের কোনও রোগে কষ্ট বোঝায়।

Advertisement

চন্দ্রের দশা- চন্দ্র খুব স্পর্শকাতর গ্রহ। তাই চন্দ্র কোন ভাবে অবস্থান করছে, আর কোন গ্রহ সংযোগে আছে, এইগুলি জানা খুব প্রয়োজন। রবির মতো চন্দ্রও ভাল ও খারাপ দুই ফলই দেয়। চন্দ্র ও শনির সংযোগ যদি জন্মছকে থাকে আর তবে তাদের দশা ও অন্তর্দশায় ভীষণ মানসিক দুর্যোগ আসে। বিপরীতে চন্দ্র ও বৃহস্পতির সংযোগে যদি থাকে, দশাকালে খুব ভাল দিয়ে থাকে। আবার চন্দ্র ও মঙ্গল যোগ যদি থাকে, দশাকালে আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

আরও পড়ুন : বিংশোত্তরী দশা কী ভাবে বিচার করা হয় এবং এর থেকে কী জানা যায় (প্রথম অংশ)

মঙ্গলের দশা- মঙ্গলের দশা চললে শরীর ও মনের ক্ষমতা বেড়ে যায়, ছুটোছুটি বেড়ে যায়। ব্যবসা ও কর্মে সাফল্য লাভ হয় কিন্তু কমবেশি রক্তপাতের সম্ভ১বনা সব সময়ই থাকে। মঙ্গলের দশায় আসঙ্গলিপ্সা বেড়ে যায়, নারী সহবাসে আগ্রহ দেখা যায়, দাম্পত্য প্রেমে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়, নানারকম ভোগসুখে আগ্রহ জন্মায়। নিজের শরীর পুড়ে যাওয়া বা বাড়িতে আগুন লাগা ও দুর্ঘটনার মধ্যে পড়া এটা মঙ্গলের দশা ও অন্তর্দশায় ঘটে।

বৃহস্পতির মহাদশা- যদি বৃহস্পতি শুভ ভাবে জন্মছকে অবস্থান করে, সেই দশায় চাকরিপ্রাপ্তি, নির্বাচনে জয়লাভ, মন্ত্রী হওয়া, রাজা বা সরকারের অনুগ্রহ পাওয়া, সম্মান পাওয়া, সন্তান লাভ, দীক্ষা গ্রহণ, বিবাহ, মন্দির প্রতিষ্ঠা, বিদেশযাত্রা, তীর্থভ্রমণ-সহ নানা পূণ্যকর্ম এই সময়ে ঘটে। জন্মছকে বৃহস্পতি যদি অশুভ ভাবে অবস্থান করে, তার দশায় অকালে সন্তানবিয়োগ, গর্ভপাত, সন্তান থেকে অপমানিত হওয়া, ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়া, মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হওয়া, শিশু বয়সে বা বাল্যকালে অক্ষর জ্ঞান লাভে বঞ্চিত হওয়া, মাতৃসম মহিলা বা গুরুর থেকে অভিশাপ লাভ, ইত্যাদি বোঝায়। নানা ধরনের নৈতিক অধঃপতনও হতে পারে এই সময়।

বুধের মহাদশা- বুধের মহাদশা জীবনের প্রথম দিকে পেয়ে গেলে লেখাপড়া করে বা নানারকম প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ নিয়ে যে সব কর্ম হয় তার ভাল রকম স্বীকৃতি লাভ বোঝায়। অবশ্যই বুধকে শুভ ভাবে জন্মছকে থাকতে হবে। আর বুধের দশা শেষ জীবনে বা মধ্য বয়সের পর পেলে যোগ্যতার দাম পাওয়া যায় না। অনেকে শেষ জীবনে বা ষাট বছর পেরিয়ে মাস্টার ডিগ্রি করে। নানা ধরনের ট্রেনিং নেন। সে ক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে শেষ জীবনে বুধের দশা এসেছে। এ সব ক্ষেত্রে পরবর্তী জীবনে সংস্কার হয়ে আসবে এই জীবনের শেষ বয়সের শিক্ষা। বুধের অশুভ দশায় মায়ের মৃত্যু হয়, মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ভাল থাকে না, চর্ম রোগ হয়, নার্ভের রোগ হয়, গুরুলাভে বঞ্চিত হয়ে মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন