বিপিএল পরিবারকে চিকিৎসায় এক লক্ষ

সামনে উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবের ভোট। তার আগে গরিব মানুষের মন জয় করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করলেন, এ বার থেকে বিপিএল পরিবারগুলিতে চিকিৎসার জন্য অর্থের অভাব হবে না। তাদের চিকিৎসার জন্য বছরে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ কেন্দ্রীয় সরকার জোগাবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০১৬ ০১:২৪
Share:

সামনে উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবের ভোট। তার আগে গরিব মানুষের মন জয় করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করলেন, এ বার থেকে বিপিএল পরিবারগুলিতে চিকিৎসার জন্য অর্থের অভাব হবে না। তাদের চিকিৎসার জন্য বছরে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ কেন্দ্রীয় সরকার জোগাবে।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদী এই নিয়ে তৃতীয় বার স্বাধীনতা দিবসে লাল কেল্লা থেকে বক্তৃতা দিলেন। কিন্তু সাহসী সংস্কারের সিদ্ধান্তের বদলে সেখানে প্রাধান্য পেল জনমোহিনী নীতি। আজ মোদী বলেন, ‘‘গরিব পরিবারে কেউ অসুস্থ হলে সেই সংসারের আর্থিক অবস্থা ভেঙে পড়ে। মেয়ের বিয়ে আটকে যায়। ছেলেমেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। এমনকী খাবারেও টান পড়ে। এই কারণে দারিদ্রসীমার নীচের মানুষদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার নতুন প্রকল্প আনছে। ভবিষ্যতে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা পরিবারে কেউ অসুস্থ হলে বছরে এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ সরকার দেবে।’’

বিরোধী দল কংগ্রেসের লাগাতার অভিযোগ, মোদী জমানার দু’বছর পেরোলেও প্রতিশ্রুতির ‘অচ্ছে দিন’ এখনও অধরা। মোদীর সরকারকে বড়লোকদের ‘স্যুট-বুট কি সরকার’ বলেও রাহুল গাঁধী আঙুল তোলেন। হালে ডাল থেকে শুরু করে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্যও কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে সরকারকে। আজ লাল কেল্লা থেকে তারই জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছেন মোদী। গরিব মানুষের জন্য চিকিৎসা অনুদান ঘোষণার সঙ্গে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পেনশন ২০ শতাংশ বাড়ানোর কথাও ঘোষণা করেছেন। ফলে যারা এখন ২৫ হাজার টাকা পেনশন পান, তারা ৩০ হাজার টাকা পাবেন। ভিন্ন রাজ্যে স্বাধীনতা সংগ্রামে আদিবাসীদের ভূমিকা তুলে ধরতে জাদুঘর তৈরি হবে বলেও তিনি জানান।

Advertisement

মোদী সরকার তার মেয়াদ অর্ধেক পার করে ফেলেছে। ফলে ক্ষমতায় আসার পর থেকে কী কী কাজ করেছেন, তার জবাবদিহি করারও তাগিদ ছিল তাঁর। আজ প্রায় দেড় ঘণ্টার বক্তৃতায় সেই হিসেবনিকেশ পেশ করেছেন মোদী। মূল্যবৃদ্ধি লাগামে রাখতে তাঁর সরকার কীভাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আবার তিনি কর সংস্কারের জন্য জিএসটি চালু করার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সাফল্যও উল্লেখ করেছেন। আলাদা করে উত্তরপ্রদেশ এবং পঞ্জাবের কথা তুলে মোদী বলেন, উত্তরপ্রদেশে আখচাষিরা ঋণের দায়ে জর্জরিত ছিল। কেন্দ্র এই ঋণের বোঝা কমাতে উদ্যোগী হওয়ায় ৯৯.৫ শতাংশ ঋণই শোধ হয়ে গিয়েছে। আর, পঞ্জাবের গুরু গোবিন্দ সিংহর ৩৫০-তম জন্মবার্ষিকী পালন করছে গোটা দেশ। স্বরাজ্য অভিযান নেতা যোগেন্দ্র যাদব অবশ্য মোদীর দাবি উড়িয়ে বলেছেন, মোরাদাবাদের আখ চাষি ইউনিয়ন বলছে, অর্ধেক ঋণ শোধ বাকি।

লাল-কমলা-গোলাপি পাগড়িতে পতাকা তুলে মোদী ঘোষণা করেন, তাঁর সরকারের মন্ত্র হল ‘রিফর্ম, পারফর্ম ও ট্রান্সফর্ম’। দেশ স্বাধীনতা বা ‘স্বরাজ’ পেয়েছে, এ বার ‘সুরাজ’ বা সুশাসন প্রয়োজন। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, সুরাজের কোনও স্পষ্ট রূপরেখা মেলেনি মোদীর কথায়। কংগ্রেস কটাক্ষ করে বলেছে, মোদী যেন রিপোর্ট কার্ড পেশ করতে লাল কেল্লায় গিয়েছিলেন। দলের মুখপাত্র মনীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘গত বারের মতো এ বারও প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় মনে হল, রাষ্ট্রনেতার বদলে কোনও শিল্পপতি তার সংস্থার বাৎসরিক বৈঠকে বক্তৃতা করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন