অভিনেত্রী জিয়া খান আত্মহত্যা মামলায় নাম জড়িয়েছিল তাঁদের ছেলে সুরজের। সুরজের প্ররোচনাতেই আত্মহত্যার চরম পথ বেছে নিয়েছিলেন ‘নিঃশব্দ’-এর নায়িকা, ছড়িয়েছিল এমন খবরও। এমনকী এই ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করে সুরজকে। যদিও চলতি মাসের শুরুতে জামিন পেয়ে যান তিনি। আর এ বার সুরজের বাবা-মা অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলি এবং অভিনেত্রী জারিনা ওয়াহাব বম্বে হাইকোর্টে জিয়ার মা রাবিয়া খানের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করলেন।
স্ত্রী জারিনা ওয়াহাব এবং মেয়ে সানার সঙ্গে শুক্রবার ওই মামলা রুজু করেন আদিত্য পাঞ্চোলি। পাঞ্চোলি পরিবারের তরফ থেকে রাবিয়া খানকে একটি নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি এস সি গুপ্ত। তিনি জানান, ৯ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি। রাবিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি টুইটারে এমন কিছু অসম্মানজনক এবং বিকৃত মন্তব্য পোস্ট করেছেন যাতে সমাজের সামনে মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে পাঞ্চোলি পরিবারের। পাঞ্চোলি পরিবারের অভিযোগ, ৪ মার্চ থেকে ১ মে-র মধ্যে মোট ১৮টি টুইট করেন রাবিয়া যার জন্য অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন তাঁরা। তিরিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত আদিত্য এবং জারিনা। ওই ১৮টি টুইটে পাঞ্চোলি পরিবারের সম্পর্কে রাবিয়া এমন কয়েকটি ব্যক্তিগত মন্তব্য করেছেন যার জন্য আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের কাছে পাঞ্চোলি পরিবারের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। আদিত্য দাবি করেছেন, টুইটারে রাবিয়ার করা পোস্টের জন্য তাঁদের পরিবার এবং অগণিত ভক্ত আতঙ্কিত এবং ব্যথিত। গোটা ব্যাপারটার জন্য একটা লজ্জাজনক পরিস্থিতির সামনে এসে পড়েছেন তাঁরা।
রাবিয়ার আইনজীবী দীনেশ তিওয়ারি জানান, এখনও পর্যন্ত তাঁরা কোনও নোটিস পাননি। তবে একটা মামলা যে রুজু করা হয়েছে, সে ব্যাপারে তাঁরা ওয়াকিবহাল। এবং ৯ জুলাই মামলার শুনানি, তা-ও তাঁরা জানেন। রাবিয়া খানের বিরুদ্ধে পাঞ্চোলি পরিবারের সম্মানহানির জন্য ৫০ কোটি, ব্যবসার ক্ষতির জন্য ২৫ কোটি এবং হেনস্থার জন্য ২৫ কোটির মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে মামলা করার আগে, টুইটারে আপত্তিকর মন্তব্য করার জন্য রাবিয়াকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছিল পাঞ্চোলি পরিবার। কিন্তু রাবিয়া নিজের করা মন্তব্যে অনড় থাকেন। এমনকী তিনি অভিযোগ করেন, পাঞ্চোলি পরিবারই তাঁর বিরুদ্ধে অসম্মানজনক মন্তব্য করছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাঁদের ছেলের বিরুদ্ধে আদালতে আইনি কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়া থেকে তাঁকে বিরত করতেই এমন অভিযোগ আনছে পাঞ্চোলি পরিবার।
জিয়া খান আত্মহত্যা মামলার তদন্ত করবে সিবিআই, বৃহস্পতিবার এমন নির্দেশ দিয়েছিল বম্বে হাইকোর্ট। গত বছর অক্টোবরে মেয়ের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে বম্বে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রাবিয়া। তা ছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মুম্বইয়ের মার্কিন দূতাবাসের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করে একটি চিঠিও দেন তিনি। গত বছর ৩ জুন জুহুর বাড়িতে মাত্র পঁচিশ বছর বয়সে আত্মঘাতী হন জিয়া। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আদিত্য পাঞ্চোলি এবং জারিনা ওয়াহাবের ছেলে সুরজের সঙ্গে সম্পর্ক শেষ হয়ে যাওয়ার পরই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন জিয়া।