ছত্তীসগঢ়ে আবাম মাওবাদীদের আত্মসমর্পণ! —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ছত্তীসগঢ়ে আবার আত্মসমর্পণ করলেন একদল মাওবাদী। বৃহস্পতিবার মোট ১০৩ জন মাওবাদী বিলাসপুর জেলায় আত্মসমর্পণ করেছেন। এঁদের মধ্যে ৪৯ জনের মাথার দাম ছিল ১ কোটি টাকারও বেশি।
ছত্তীসগঢ় পুলিশের দাবি, আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের মধ্যে ২২ জন মহিলা। এঁরা সকলে মাওবাদী আদর্শের প্রতি আস্থা হারিয়ে ‘মূল স্রোতে’ ফিরতে চেয়েছেন। একই দাবি করেছে সিআরপিএফ-ও। বিজাপুরের জেলা পুলিশ সুপার জিতেন্দ্রকুমার যাদব বলেন, ‘‘২২ জন মহিলা-সহ ১০৩ জন মাওবাদী মতাদর্শকে ফাঁপা বলে মনে করেছেন। তাঁরা নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী)-এর সঙ্গে মতপার্থক্য এবং নেতাদের কাজে হতাশা ব্যক্ত করে পুলিশ এবং সিআরপিএফের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।’’ বস্তুত, একদিনে ছত্তীসগঢ়ে এত জন মাওবাদী এই প্রথম আত্মসমর্পণ করলেন বলে দাবি সে রাজ্যের পুলিশের। আত্মসমর্পণ করেছেন লাছু পুনেম ওরফে সন্তোষ। ৩৬ বছরের ওই যুবক মাওবাদীদের বিভাগীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া ৩০ বছরের গুড্ডু ফরসা, ৪৫ বছরের ভীমা সোধি, ২৬ বছরের হিদমে ফরসা, ২৭ বছরের সুখমতি ওয়াম মাওবাদী সংগঠনের উল্লেখযোগ্য সদস্য ছিলেন। এঁদের প্রত্যেককে ধরিয়ে দিলে 8 লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল ছত্তীসগঢ় পুলিশ।
বিজাপুরের পুলিশ সুপারের দাবি, বস্তার অঞ্চলে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ দেখে মাওবাদীদের বড় অংশ মুগ্ধ। তাই সশস্ত্র বিদ্রোহের পথ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। কিছু দিনের মধ্যে আরও মাওবাদী ‘মূল স্রোতে’ ফিরবেন বলে আশাবাদী তিনি। এসপি উল্লেখ করেছেন আত্মসমর্পণকারীরা কথা। তিনি জানান, বস্তারে সরকারের পুনর্বাসন প্রকল্প, প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে উন্নয়নমূলক কাজে এঁরা মুগ্ধ। পুলিশ সুপারের কথায়, ‘‘সরকারের পুনর্বাসন নীতির শর্তাবলী মাওবাদীদের হিংসার পথ ছাড়তে উৎসাহিত করছে। যাঁরা আত্মসমর্পণ করছেন, তাঁদের পরিবারও চায় তাঁরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করুন এবং সমাজের সঙ্গে থাকুন।’’
চলতি বছরে এ পর্যন্ত শুধু বিজাপুর জেলাতেই ৪১০ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন। এ ছাড়া মাওবাদী অভিযোগে ৪২১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আত্মসমর্পণকারী সকল মাওবাদীকে তাৎক্ষণিক ভাবে ৫০,০০০ টাকা করে সহায়তা দেওয়া হয়েছে এবং সরকারের নীতি অনুযায়ী তাঁদের পুনর্বাসন প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হবে।